ফাইল চিত্র।
ইউনিয়ন পাবলিক সার্ভিস কমিশন বা ইউপিএসসি-র সর্বভারতীয় চাকরির পরীক্ষায় বাংলায় ভোট-পরবর্তী হিংসা বা দিল্লিতে অক্সিজেনের সঙ্কট নিয়ে প্রশ্ন আসায় বিতর্ক শুরু হয়েছে ইতিমধ্যেই। ত্রিপুরায় তৃণমূল কংগ্রেসের উপরে হামলার অভিযোগ টেনে এনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাল্টা অভিযোগ, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই ইউপিএসসি পরীক্ষার্থীদের কাছে কিছু রাজ্যকে চিহ্নিত করে দেওয়া হচ্ছে। গণতন্ত্রের পক্ষে যা অত্যন্ত বিপজ্জনক।
ইউপিএসসি-র লিখিত পরীক্ষায় পশ্চিমবঙ্গের ‘নির্বাচনী সন্ত্রাস’ প্রসঙ্গে ১০ নম্বরের জন্য উত্তর লিখতে বলা হয়েছে। ২০০ শব্দের মধ্যে সেই উত্তর লিখতে হত পরীক্ষার্থীদের। এমনকি, ‘কৃষক আন্দোলন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’, দিল্লিতে অক্সিজেন সরবরাহে সমস্যা ইত্যাদি বিষয়েও লিখতে দেওয়া হয়েছিল বলে খবর। এই নিয়ে তৃণমূল রাজনৈতিক ভাবে আগেই উষ্মা প্রকাশ করেছিল। এ দিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “এই ধরনের প্রশ্ন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং অত্যন্ত আপত্তিকর। আমি বুঝতে পারি না, কী ভাবে ইউপিএসসি-র মতো একটা নিরপেক্ষ সংস্থা এ ধরনের প্রশ্ন করতে পারে! বিজেপির পার্টি অফিস থেকে এই সব প্রশ্ন তৈরি করা হয়েছে। আমি দুঃখিত, আমি ইউপিএসসি-কে যথেষ্ট সম্মান করি। কিন্তু তাদেরও একটা মর্যাদা, একটা সম্মান বজায় রাখা উচিত।”
ইউপিএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে প্রার্থীরা ইন্ডিয়ান ফরেন সার্ভিস, ইন্ডিয়ান অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস (আইএএস) বা ইন্ডিয়ান পুলিশ সার্ভিসের (আইপিএস) মতো চাকরি পেয়ে থাকেন। আইএএস, আইপিএস অফিসারেরা বিভিন্ন রাজ্যের প্রশাসনিক কাজকর্মের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত হন। এর আগে নতুন আইএএস অফিসারদের দিল্লিতে বাধ্যতামূলক প্রশিক্ষণকে ‘মগজ ধোলাই’ বলে আখ্যা দিয়েছিল রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। সেই সূত্র ধরে রাজ্যের শাসক শিবির মনে করছে, এমন প্রশ্ন তৈরি করার অর্থ, নির্দিষ্ট কিছু রাজ্য সম্পর্কে নতুন আইএএস, আইপিএস অফিসারদের মধ্যে ভুল ধারণা তৈরি করে দেওয়ার প্রচেষ্টা।
মমতার কথায়, “যাঁরা ইউপিএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন, তাঁদের সামনে
একটা রাজ্যকে চিহ্নিত করে দেওয়া হচ্ছে, যাতে তাঁরা বিজেপিকে পূর্ণ সমর্থন করেন। বিজেপি যা বলবে, তা মেনে নিতে হবে! না-হলে এই চাকরি পাবে না! এটা কী হচ্ছে? কেউ যদি এই নিয়ে মামলা করে, তা হলে আদালতও এমন ধরনের প্রশ্ন মেনে নেবে না। আমি স্তম্ভিত!”
এই সূত্রেই মমতা টেনে এনেছেন ত্রিপুরা প্রসঙ্গ। সেখানে তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ বিভিন্ন নেতানেত্রী উপরে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে বিজেপির বিরুদ্ধে। সেই প্রসঙ্গে বিস্তারিত ভাবে মন্তব্য না-করলেও মমতা বলেন, “ত্রিপুরায় কী হয়েছে, দেখেননি? ত্রিপুরা, অসম, উত্তরপ্রদেশে কেউ যেতে পারবেন না। বিজেপি-শাসিত রাজ্যে কোনও সাংবাদিক কথা বলতে পারবেন না। কেউ যদি আপনাদের বিরুদ্ধে লেখেন, তা হলে রেড করিয়ে দেন।”
ভোট-পরবর্তী হিংসা প্রসঙ্গে বিজেপি তথা কেন্দ্রকেই কার্যত কাঠগড়ায় তুলে মমতার বক্তব্য, “ভোটের পরে বাংলায় হিংসার কোনও ঘটনাই ঘটেনি। পুরো মিথ্যা কথা। ভোটের সময় সিআরপিএফ গুলি করে মানুষ মেরেছিল। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে বিজেপির সদস্যদের রেখে দিয়েছে। মহিলা কমিশনেও তা-ই। ওঁদের প্রত্যেকের তথ্য নিয়ে নিন। দেখবেন ওঁরা কারা। ভুলে যাবেন না, আজকে আপনারা ক্ষমতায় রয়েছেন। হয়তো আগামী দিনে থাকবেন না। কিন্তু সংবিধান, দেশ, গণতন্ত্র থাকবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy