মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র
বিজেপির বিরুদ্ধে জোট গঠনে আঞ্চলিক দলগুলির ‘গুরুত্ব’ আবার তুলে ধরলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী ১২ জুন পটনায় প্রস্তাবিত বিরোধী-বৈঠককে সামনে রেখে তাঁর মন্তব্য, ‘‘দিল্লিতে অনেক বৈঠক হয়েছে। কিন্তু তা আর এগোয়নি। আঞ্চলিক স্তরে রাজ্যে রাজ্যে বৈঠক হোক।’’
পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে, মমতার এই মন্তব্যের নিশানা কংগ্রেসের দিকে। যাতে বোঝানো যায়, কংগ্রেসের উদ্যোগে বৈঠক হলে তা বিশেষ ফলপ্রসূ হয় না। উল্লেখ্য, তৃণমূল নেত্রী মমতার প্রস্তাব অনুযায়ী, বিহারের জেডিইউ নেতা তথা মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার পটনায় বৈঠকের মুখ্য উদ্যোক্তা। সেই ক্ষেত্রে ‘উদ্যোগের রাশ’ আঞ্চলিক দলের হাতেই থেকে যায় বলে মনে করছেন মমতা। মমতার এই উদ্যোগকে অবশ্য নাটক বলে কটাক্ষ করেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী।
এ রাজ্যে সদ্য জেতা একমাত্র কংগ্রেস বিধায়ককে দলে নিয়ে জোট-চর্চায় নতুন বিতর্ক যোগ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। কংগ্রেসের সর্বভারতীয় নেতা জয়রাম রমেশ অবশ্য মঙ্গলবার এই প্রশ্নে তৃণমূলকে বিঁধেছেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা যদিও দাবি করেন, বিষয়টি একেবারেই স্থানীয় স্তরের। তাঁর বিশদ কিছু জানা নেই।
লোকসভা নির্বাচনের প্রেক্ষিতে এখন বিরোধী শিবিরের প্রধান আলোচ্যই জোটের ধরন ও গঠন। কর্নাটকে কংগ্রেসের জয়ের পরে সেই জোটে কংগ্রেসের ভূমিকা নিয়েও নতুন করে মত বিনিময় শুরু হয়েছে। সেখানে বার বার আসছে কংগ্রেস এবং মমতার পারস্পরিক অবস্থানের প্রসঙ্গ। এই প্রশ্নে তিনি বা তাঁর দল বারবারই বুঝিয়েছে, যেখানে যে শক্তিশালী, বিজেপির বিরুদ্ধে সেখানে সেই দলকেই সমর্থন করা উচিত অন্যদের। যার সহজ অর্থ, বাংলায় কংগ্রেসের উচিত তৃণমূলকে সমর্থন করা।
অন্য দিকে গোয়া, মেঘালয় ও ত্রিপুরার মতো রাজ্যে মমতা কেন কংগ্রেসের বিরুদ্ধেও লড়াই করেছিলেন, কংগ্রেসের এই অভিযোগ সম্পর্কে মমতাকে এ দিন প্রশ্ন করা হয়। তিনি বলেন, ‘‘আমরা গোয়া ও মেঘালয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছি। এটা জাতীয় দলের স্বীকৃতি রক্ষায় কিছু ভোট পাওয়ার জন্য। সর্বভারতীয় স্তরে আমরা একসঙ্গে আছি। সব দলেরই বোঝা উচিত, রাজ্য স্তরে আঞ্চলিক দলগুলির বাধ্যবাধকতা আছে।’’ তাঁর আরও ব্যাখ্যা, ‘‘আমরা রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, গুজরাত, হিমাচল প্রদেশের মতো রাজ্যে ওদের (কংগ্রেস) ডিস্টার্ব তো করিইনি বরং সমর্থন করেছি।’’
এই প্রসঙ্গে অধীর এ দিন বলেন, ‘‘বিজেপি-বিরোধিতা মমতার নাটকের অঙ্গ। উপরাষ্ট্রপতি পদে জগদীপ ধনখড়কে হারাতে আমরা ঐক্যবদ্ধ আওয়াজ তুলেছিলাম। তখন মমতা গদ্দারি করেছিলেন। গোয়া, মেঘালয়ে ত্রিপুরায় বেইমানি করেছেন। কর্নাটকের ভোটে এক বারও বিজেপিকে হারাতে কংগ্রেসকে ভোট দেওয়ার কথা বলেননি। জয়ের পরেও কংগ্রেসকে অভিনন্দন জানাননি।’’
তৃণমূলের এক শীর্ষ নেতা অবশ্য বলেন, ‘‘প্রথমত, তৃণমূল যে সব রাজ্যে গিয়েছে তার কোনওটিতেই কংগ্রেস বা অন্য কেউ ক্ষমতায় ছিল না। দ্বিতীয়ত, গোয়া, ত্রিপুরা বা মেঘালয়ে তৃণমূল যে ভোট পেয়েছে তা কংগ্রেসের সঙ্গে যোগ হলে কি তারা সরকার গড়তে পারত! মমতা কংগ্রেসের ক্ষতি করেছে তা বলে তৃণমূলের দিকে আঙুল তোলা অন্যায়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy