Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

হাফ লাখ-হাফ লাখে টক্কর নন্দীগ্রামে, মমতা জিতবেন ৫০ হাজার ভোটে, বলছেন তাহের

বিধানসভা ভোটে আপাতত সারা দেশের নজর নন্দীগ্রামের দিকে। কারণ, আচমকাই মুখ্যমন্ত্রী মমতা ঘোষণা করেছেন, এ বার তিনি নন্দীগ্রাম থেকেই ভোট লড়বেন।

নন্দীগ্রাম পঞ্চায়েত সমিটির সভাপতি আবু তাহের।

নন্দীগ্রাম পঞ্চায়েত সমিটির সভাপতি আবু তাহের। ছবি: ভিডিয়ো থেকে

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০২১ ১৭:২৭
Share: Save:

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নন্দীগ্রাম আসন থেকে অন্তত ৫০ হাজার ভোটে জিতবেন। বৃহস্পতিবার নবান্নে রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী ফিরহাদ (ববি) হাকিমের সঙ্গে দেখা করে এসে তেমনই জানিয়ে দিলেন নন্দীগ্রাম পঞ্চায়েত সমিটির সভাপতি আবু তাহের। প্রসঙ্গত, তাহের নন্দীগ্রাম আন্দোলনে সক্রিয় ভাবে যুক্ত ছিলেন।

বিধানসভা ভোটে আপাতত সারা দেশের নজর নন্দীগ্রামের দিকে। কারণ, আচমকাই মুখ্যমন্ত্রী মমতা ঘোষণা করেছেন, এ বার তিনি নন্দীগ্রাম থেকেই ভোট লড়বেন। ঘটনাচক্রে, যেখানকার প্রাক্তন বিধায়ক প্রাক্তন তৃণমূল এবং অধুনা বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। মমতার ওই ঘোষণার কয়েকঘণ্টা পরেই শুভেন্দু রাসবিহারীর সভা থেকে প্রকাশ্যে জানিয়ে দেন, তিনি মমতাকে নন্দীগ্রামে ‘হাফ লাখ’ ভোটে হারাবেন! না-হারাতে পারলে রাজনীতিই ছেড়ে দেবেন! বস্তুত, মমতার সভার পরদিনই নন্দীগ্রামে সভা করেন শুভেন্দু। সেখানেও তিনি ওই একই কথা বলেন। তাঁর সঙ্গে তাল মেলান কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়ও। তখন থেকেই নন্দীগ্রাম গোটা দেশের আলোচনার কেন্দ্রে।

সেই আলোচনাই নতুন মাত্রা পেল বৃহস্পতিবার নন্দীগ্রাম আন্দোলনের প্রাক্তন সেনানীর তাহেরের দাবিতে। নবান্নে ববির সঙ্গে প্রাথমিক বৈঠক সেরে মমতার সঙ্গে দেখা করতে বাইপাসের তৃণমূল ভবনে এসেছিলেন তাহের। সেখানেই তিনি বলেন, ‘‘দিদি ফেরার পর থেকেই নন্দীগ্রামে ভোটের কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। দিদি নন্দীগ্রামে ৫০ হাজার ভোটে জিতবেন।’’ কিন্তু শুভেন্দু তো বলেছেন, তিনি মমতাকে নন্দীগ্রামে হাফ লাখ (৫০ হাজার) ভোটে হারাবেন। তাহের বলেন, ‘‘হারাবে না। হারবে। শুভেন্দু হারবে।’’ তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘মায়ের কাছে (চেয়ে) ছেলে বড় নয়।’’

আন্দোলনের সময় তাহের শুভেন্দুর অন্যতম বিশ্বস্ত সৈনিক ছিলেন। ফলে শুভেন্দু বিজেপি-তে যাওয়ার পর তিনিও যেতে পারেন বলে জল্পনা তৈরি হয়েছিল। সে বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে তাহের বলেন, ‘‘আমি কেন যাব বিজেপি-তে! আমার কোনও স্বার্থ নেই। যার স্বার্থ আছে, সে যাবে বিজেপি-তে!’’ প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের সময় নন্দীগ্রামে মোট ভোটারের সংখ্যা ছিল ২ লক্ষ ৪৬ হাজার। অর্থাৎ, এই ভোটার সংখ্যার মধ্যেই যুযুধান দুই শিবিরকে ‘হাফ লাখ’ ভোটের ব্যবধান গড়তে বা ভাঙতে হবে। তবে তৃণমূলের দাবি, এ ক্ষেত্রে শুভেন্দুর অবস্থান একটু বেশিই ‘স্পর্শকাতর’। কারণ, তিনি জয়ের ব্যবধানই শুধু আগাম ঘোষণা করেননি। বলেছেন, ওই ব্যবধানে মমতাকে হারাতে না পারলে রাজনীতিই ছেড়ে দেবেন। যদিও মমতা নিজে তেমন কোনও ব্যবধান ঘোষণা করেননি। তবে বৃহস্পতিবার তাহেরের ঘোষণায় ওই লড়াই নতুন মাত্রা পেয়ে গিয়েছে।

বিধায়কপদ ছাড়ার আগে শুভেন্দু নন্দীগ্রামের বিধায়ক ছিলেন। ফলে বিজেপি তাঁকে ওই কেন্দ্র থেকেই টিকিট দেবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। যদিও ওই বিষয়ে এখনও কোনও নিশ্চয়তা দলের তরফে পাওয়া যায়নি। তবে শুভেন্দুর বক্তব্য, দল তাঁকে যদি নন্দীগ্রামে টিকিট না-ও দেয়, তা হলেও তিনি নন্দীগ্রামে মমতার ৫০ হাজার ভোটের ব্যবধানে পরাজয় নিশ্চিত করবেন। বস্তুত, মমতার নন্দীগ্রামে ভোটে দাঁড়ানোর ঘোষণার দিনই শুভেন্দু রাতে একটি টুইট করেছিলেন। যার মর্মার্থ— গত ২১ বছর তিনি মমতার পাশএ দাঁড়িয়ে কাজ করেছেন। এবার মুখোমুখি লড়াই হবে। যা থেকে ধরে নেওয়া হচ্ছিল, বিজেপি-র শুভেন্দু বনাম তৃণমূলের মমতার লড়াই হবে নন্দীগ্রামে। তবে শুভেন্দুর টিকিট পাওয়া বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের উপর নির্ভরশীল। এটাও দেখার যে, নন্দীগ্রামের পাশাপাশি মমতা তাঁর বর্তমান কেন্দ্র ভবানীপুরেও দাঁড়ান কি না। আর শুভেন্দুও নন্দীগ্রামের পাশাপাশি অন্য কোনও কেন্দ্র থেকে লড়েন কি না।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy