নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র
উদ্বাস্তুদের যোগ্য মর্যাদা দেওয়া হবে। তাতে বদ্ধপরিকর রাজ্য সরকার। বৃহস্পতিবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে এই বার্তাই দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একই সঙ্গে এ-ও ঘোষণা করা হয়েছে, রাজ্যের সব নার্সিংহোম এবং হাসপাতাল আবশ্যিক ভাবে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের আওতায়। ৯ লক্ষ পড়ুয়াকে ট্যাব কেনার টাকা দেওয়ার যে ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রী করেছিলেন, বৃহস্পতিবার থেকে তা দেওয়াও শুরু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘কথা দিয়েছিলাম উদ্বাস্তুদের যোগ্য মর্যাদা দেব। আমরা রাজ্যের উদ্বাস্তুদের বিভিন্ন জায়গা ধরে সার্ভে করে প্রতিটি কলোনিকে স্বীকৃতি দিচ্ছি। গত দু’বছরে ২১৩ উদ্বাস্তু কলোনিকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। কোনও উদ্বাস্তু বাদ যাবেন না।’’ এ দিন তিনি জানিয়ে দেন রাজ্যে ইতিমধ্যেই মোট ২ লক্ষ ৭৯ হাজার পাট্টা ইস্যু হয়েছে। মতুয়ারাও পাট্টা পাবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সঙ্গে কেন্দ্রকে নিশানা করে বলেন, ‘‘আমাদের কাছে খবর এসেছে, কেন্দ্রীয় সরকারের কিছু দফতর উচ্ছেদের নোটিস দিয়েছিল। কিন্তু আমরা বলছি, কাউকে এ ভাবে উচ্ছেদ করা যাবে না। উদ্বাস্তুরা অধিকার মতো জমির পাট্টা পাবেন।’’ পুরুলিয়ায় রেলের তরফে উচ্ছেদের নোটিস পাঠানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
স্বাস্থ্যসাথী কার্ড থাকা সত্ত্বেও অনেক নার্সিংহোমই চিকিৎসা পরিষেবা দিচ্ছে না বলে একাধিক অভিযোগ উঠেছে। তার প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার মমতা বলেন, ‘‘স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে নতুন রেট করতে বলা হয়েছে। একটা কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখবে। রেট ফ্লেক্সিবল করা হবে, যাতে সকলেই সুবিধা পান। নার্সিংহোম এবং হাসপাতালগুলিকে অনুরোধ করব সামাজিক সুরক্ষা দিতে। অনেকে সুবিধা পাচ্ছেন, আশীর্বাদ করছেন। ১০ হাজারে একটা ভুল হচ্ছে। ভুল সংশোধন করে নেওয়া হবে।’’
এই প্রসঙ্গেই রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেন, ‘‘সকল নার্সিংহোম এবং হাসপাতাল স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের আওতায় আবশ্যিক ভাবে থাকবে। যত খরচ হবে তার জন্য যাতে অতিরিক্ত টাকা বরাদ্দ থাকে সে ব্যাপারে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্ত্রিসভা। পর্যালোচনা করা হবে বে কমিটি।’’
রাজ্যে ‘দুয়ারে সরকার’ প্রকল্পের মেয়াদ আরও বাড়ানো হয়েছে। পঞ্চম দফায় ২৭ জানুয়ারি থেকে ৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত রয়েছে ওই প্রকল্পে নাম নথিভুক্ত করার সময়সীমা। মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, ‘‘মানুষের আগ্রহ দেখে ‘দুয়ারে সরকার’ পঞ্চম দফাতেও চালু হতে চলেছে। এখনও পর্যন্ত ২ কোটি মানুষ তাতে নাম নথিভুক্ত করেছেন। ইতিমধ্যেই ৭৫ শতাংশ কাজ হয়ে গিয়েছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘গোটা রাজ্য থেকে বিধবা ভাতা এবং বয়স্ক ভাতার জন্য ১৫ লক্ষ আবেদন জমা পড়েছিল। সব আবেদনই মঞ্জুর হয়েছে।’’
রাজ্যের ৯ লক্ষ পড়ুয়াকে ট্যাব বা স্মার্টফোর্ন কেনার টাকা দেবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল সরকার। বৃহস্পতিবার থেকে ওই প্রকল্পে টাকা দেওয়া শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘কোভিডের কারণে অনেকেই পড়াশোনার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছে। সে জন্য ট্যাব দেওয়া হচ্ছে।’’ আগামী ৭ দিনের মধ্যে ওই টাকা পডুয়াদের অ্যাকাউন্টে চলে যাবে বলে জানিয়েছেন মমতা।
রাজ্যে ২০১১ সাল থেকে শিক্ষাক্ষেত্রে কী কী উন্নয়ন হয়েছে তার বিস্তারিত বিবরণও বৃহস্পতিবার তুলে ধরেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
• শিক্ষাক্ষেত্রে রাজ্যের বাজেট গত ১০ বছরে ১০ গুণ বেড়েছে।
• রাজ্যেতৈরি হয়েছে ৩০টি নতুন বিশ্ববিদ্যালয়, ১৪টি নতুন মেডিক্যাল কলেজ, ৫১টি নতুন কলেজ, ৭ হাজার নতুন স্কুল, ২৭২টি আইটিআই এবং ১৭৬টি পলিটেকনিক কলেজ।
• মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে উন্নীত হয়েছে প্রায় ২১ হাজার স্কুল।
• বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ হয়েছে প্রায় ১ লক্ষ ২৯ হাজার।
• কন্যাশ্রী প্রকল্পের আওতায় ৭০ লক্ষ ছাত্রছাত্রী।
• ১ কোটি পড়ুয়াকে সবুজ সাথী প্রকল্পে সাইকেল দেওয়া হয়েছে।
• ১০০ শতাংশ স্কুলে মিড ডে মিল চালু যা কোভিডের সময়েও বন্ধ হয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy