সোমবার শিলিগুড়িতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: মুখ্যমন্ত্রীর ফেসবুক পেজ থেকে।
কয়েক দিন বন্ধ ছিল আক্রমণ। রাজ্যপালের মন্তব্য নিয়ে মুখ খুলতে চাইছিলেন না মুখ্যমন্ত্রী। কেন্দ্রীয় সরকার বা বিজেপির বিরুদ্ধেও তাঁর আক্রমণ যেন কিছুটা স্তিমিত ঠেকছিল। কিন্তু সোমবার উত্তরবঙ্গে আবার কিছুটা পুরনো মেজাজেই দেখা গেল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে প্রবল তোপ হয়তো দাগলেন না। কিন্তু এনআরসি, কর্মসংস্থান-সহ একাধিক বিষয়ে খোঁচা দিলেন কেন্দ্রকে। অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নোবেল জয় প্রসঙ্গ টেনে নাম না করে কটাক্ষ করলেন বিজেপি সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকেও।
সোমবার উত্তরবঙ্গ সফরে গিয়ে শিলিগুড়ি পুলিশ লাইনে বিজয়া সম্মেলনীতে ভাষণ দেন তিনি। আর সেখানেই মমতা বার্তা দেন, পশ্চিমবঙ্গে এনআরসি হতে দেবেন না তিনি। অসমে নাগরিকপঞ্জি থেকে ১৯ লক্ষের বেশি মানুষের নাম বাদ গিয়েছে। ডিটেনশন ক্যাম্প থেকে মৃত্যুর খবরও এসেছে। তার মধ্যেই বাংলায় এসে এ রাজ্যেও এনআরসি হবে বলে জানিয়ে গিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তাতে আতঙ্ক ছড়িয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। এমন পরিস্থিতিতে মানুষকে আশ্বস্ত করে মমতা বলেন, ‘‘আমরা শান্তি চাই। বাংলায় সবাই শান্তিতে থাকুক। বাংলা থেকে কাউকে তাড়ানো হবে না।’’
বছরে দু’কোটি চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে ২০১৪-য় ক্ষমতায় এসেছিলেন নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু বিভিন্ন সমীক্ষায় উল্টো ছবি ধরা পড়েছে। রেকর্ড সংখ্যক বেকারত্ব বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি, সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক সঙ্কট এবং মন্দা নিয়েও সমালোচকদের তোপের মুখে পড়তে হয়েছে মোদী সরকারকে। সেই প্রসঙ্গ টেনে এ দিন মোদী সরকারকে খোঁচা দিয়ে মমতা বলেন, ‘‘মনে রাখবেন সারা ভারতে ৪০ শতাংশ বেকার বেড়ে গিয়েছে। একমাত্র বাংলায় ৪০ শতাংশ বেকার কমে গিয়েছে।’’
আরও পড়ুন: প্রথমে হাতে গুলি, এর পরেই দ্বিতীয় গুলি ফুঁড়ে দেয় গলা, পালাতে গিয়েও ব্যর্থ দেবাঞ্জন
আরও পড়ুন: ১৪ নভেম্বর প্রেসিডেন্সিতে ছাত্র নির্বাচন, বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরেই ক্যাম্পাস সরগরম
এর পরেই নাম না করে অমিত শাহকে আক্রমণ করেন মুখ্যমন্ত্রী। সম্প্রতি নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়াম থেকে তৃণমূলের জমানায় বাংলার শিক্ষা ব্যবস্থার অবনমন হয়েছে বলে তোপ দেগেছিলেন শাহ। প্রশ্ন তুলেছিলেন, ‘‘যে বাংলা চিরকাল পথ দেখিয়েছে, মমতার আমলে তার এ কী হাল? ’’ সেই প্রসঙ্গে টেনে এ দিন মমতা বলেন, ‘‘কেউ কেউ বলেন, বাংলায় নাকি আর বিজ্ঞানী হয় না। আর যেই না বলা, তখনই দেখুন এক জন বাঙালি নোবেল পেয়ে গিয়েছেন।’’ শাহকে বিঁধতে এর পর মমতা গেয়ে ওঠেন, ‘‘এত নোবেল কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি, সকল দেশের রানি সে যে আমার জন্মভূমি।’’
অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় নোবেল পুরস্কার পাওয়ার পর বিজেপি শিবির থেকে তাঁর বিরুদ্ধে নানা মন্তব্য উড়ে এসেছে। কেউ ‘বাম ঘেঁষা’ বলে দাগিয়ে দিয়েছেন তাঁকে। আবার স্ত্রী বিদেশি হলে নোবেল পাওয়া যায়, এমন মন্তব্যও শোনা গিয়েছে। কিন্তু শুরু থেকেই নোবেলজয়ী অভিজিৎ এবং তাঁর পরিবারের পাশে থেকেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিজিৎ নোবেল পাচ্ছেন ঘোষণা হওয়ার পরেই তাঁকে অভিনন্দন জানান তিনি। ছুটে যান অভিজিতের মায়ের সঙ্গে দেখা করতে। বাংলায় এলে তাঁকে সংবর্ধনা দেবেন বলেও ঘোষণা করেন। তাই এ দিনও নোবেল প্রাপ্তির প্রসঙ্গ টেনে মমতা ফের বুঝিয়ে দিলেন, অভিজিতের এই সাফল্যকে বাংলার সাফল্য হিসাবেই দেখছেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy