Advertisement
১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
Kolkata Doctor Rape and Murder

পদত্যাগ করতে রাজি, ওরা বিচার চায় না, চেয়ার চায়, আমি তিলোত্তমার বিচার চাই, নবান্নে বললেন মমতা

চিকিৎসকদের সঙ্গে বৈঠকের জন্য নবান্নের সভাঘরে দু’ঘণ্টার বেশি সময় বসে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু বৈঠক হল না। এর পর নবান্ন থেকে সাংবাদিক বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৯:২৬
Share: Save:

চিকিৎসকদের সঙ্গে বৈঠকের জন্য নবান্নের সভাঘরে দু’ঘণ্টার বেশি সময় বসে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু বৈঠক হল না। এর পর নবান্ন থেকে সাংবাদিক বৈঠক করে মমতা জানালেন, তিনি পদত্যাগ করতে রাজি আছেন। কিন্তু কেউ কেউ বিচার চান না। চান ক্ষমতার চেয়ার।

আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে গত মঙ্গলবার থেকে স্বাস্থ্য ভবনের সামনে ধর্নায় বসেছেন জুনিয়র চিকিৎসকেরা। এর আগে পর পর দু’দিন তাঁদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে চেয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বৃহস্পতিবার তৃতীয় বারের জন্য বৈঠক ভেস্তে গেল। প্রথম থেকেই মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে দু’টি প্রধান শর্ত দিয়েছিলেন চিকিৎসকেরা। তাঁরা চেয়েছিলেন, এই বৈঠকের সরাসরি সম্প্রচার হোক। ৩০ জন প্রতিনিধি নিয়ে নবান্নে বৈঠক করতে চেয়েছিলেন তাঁরা। তবে এই দুই শর্তেই আপত্তি জানায় রাজ্য। বৈঠক ভেস্তে যাওয়ার পর বৃহস্পতিবার নবান্ন থেকে মমতা বলেন, ‘‘তিন দিনেও সমাধান করতে পারলাম না। বাংলার মানুষের কাছে ক্ষমা চাইছি। যাঁরা নবান্নের সামনে এসেও বৈঠকে এলেন না, তাঁদের আমি ক্ষমা করলাম। আমাকে অনেক অসম্মান করা হয়েছে। আমার সরকারকে অসম্মান করা হয়েছে। অনেক ভুল বোঝাবুঝি, কুৎসা হয়েছে। সাধারণ মানুষ রং বোঝেনি। আমি পদত্যাগ করতে রাজি আছি। কিন্তু ওরা বিচার চায় না। চেয়ার চায়। আশা করি মানুষ সেটা বুঝবেন।’’

বৈঠক না হওয়ায় নবান্নের সামনে বসে পড়েছেন জুনিয়র চিকিৎসকেরা। মমতা জানান, অনেকেই বৈঠকে আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু বাইরে থেকে সমঝোতা না করার নির্দেশ এসেছে। বলেন, ‘‘অনেকে বৈঠক করতে আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু বাইরে থেকে নির্দেশ আসছিল। দু’-তিন জন রাজি হননি। আমি মানুষের কাছে ক্ষমা চাইছি। ডাক্তারদের অনুরোধ করছি, কাজে ফিরুন।’’

নবান্নের বৈঠক থেকে মমতা সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের প্রসঙ্গও তোলেন। বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, সময় পেরিয়ে গিয়েছে। আমি যত দূর জানি, সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, রাজ্য পদক্ষেপ করলে তারা বাধা দেবে না। কিন্তু আমি কিছু করব না। বহু মানুষ চিকিৎসা পাচ্ছেন না। ইতিমধ্যে ২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। সাত লক্ষ মানুষ বঞ্চিত হয়েছেন। আমার হৃদয় কাঁদছে। ওরা ছোট, আমি ওদের ক্ষমা করছি। বাংলার মানুষের কাছে আমি ক্ষমা চাইছি। তিন দিন চেষ্টা করেও সমাধান করতে পারলাম না।’’

মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, এর পরেও যদি জুনিয়র ডাক্তারেরা বৈঠক করতে চান, তবে মুখ্যসচিব এবং নবান্নের অন্যান্য আধিকারিক যেন বৈঠক করেন এবং তাঁদের বক্তব্য শোনেন। তবে তিনি আপাতত আর আলোচনায় থাকছেন না।

মমতার মন্তব্য প্রসঙ্গে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘‘আদালতকে প্রভাবিত করতেই নবান্নের সভাঘরের ছবি সরকার প্রকাশ করেছে। বৈঠকের সরাসরি সম্প্রচারের সঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের শুনানির কোনও সম্পর্ক নেই। শীর্ষ আদালতের শুনানিও সরাসরি সম্প্রচারিত হয়। যে আলোচনা হওয়ার কথা ছিল, তার সঙ্গে আদালত অবমাননারও কোনও সম্পর্ক নেই। পুরোটাই মমতার নাটক। ওর মুখোশ খুলে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল। তাই ন্যায্য দাবি মানলেন না। অচলাবস্থা কাটুক, তা উনি চান না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE