গঙ্গার ধারে নয়, হয়তো জেলে!
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বপ্নের ফিল্ম সিটির সম্ভাব্য ঠিকানা হিসেবে উঠে এল আলিপুর সংশোধনাগার চত্বরের নাম। নবান্ন সূত্রে এই খবর জানিয়ে বলা হয়েছে, শীঘ্রই বিষয়টি নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়ে যাবে। মুখ্যমন্ত্রীর শিলান্যাস সত্ত্বেও উত্তরপাড়ায় ওই ফিল্ম সিটি গড়ার পরিকল্পনা ইতিমধ্যেই বাতিল করা হয়েছে। রাজ্য প্রশাসনের কর্তারা মেনে নিয়েছেন, সরকারি জমির একাংশ বেদখল হয়ে যাওয়াতেই প্রকল্পটি উত্তরপাড়ায় করা গেল না।
উত্তরপাড়ায় কলকাতা পুরসভার ১৩৬ একর জমি রয়েছে। পাঁচ বছর আগে সেখানেই ফিল্ম সিটির শিলান্যাস করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সূত্রের খবর, ওই ১৩৬ একরের মধ্যে ৭৯ একর দখল করে রেখেছিলেন একদল মানুষ। অনেকেই সেখানে ইটভাটার ব্যবসা শুরু করেছিলেন। ফলে কাঁটা ছিল গোড়া থেকেই।
তবু মুখ্যমন্ত্রী নিজে আগ্রহ দেখানোয় প্রথম দিকে তৎপরতা বেড়েছিল পুর প্রশাসনের। জমির দখলদারি রুখতে পদক্ষেপও করেছিল তারা। বসানো হয়েছিল নিরাপত্তারক্ষী। হুগলি জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকও হয় দফায় দফায়। কিন্তু সমস্যার আর সমাধান হয়নি। শেষ পর্যন্ত ফিল্ম সিটির পরিকল্পনা বাতিল করে ওই জমি এ বার কেএমডিএ-র হাতে তুলে দিচ্ছে কলকাতা পুরবোর্ড। কেএমডিএ সেখানে একটি জলপ্রকল্প করবে। গত বুধবার পুরসভার অধিবেশনে সেই প্রস্তাব পাশ হয়েছে। প্রস্তাবে জানানো হয়েছে জমি বেদখল হওয়ার বিষয়টিও। স্বভাবতই প্রশ্ন ওঠে, ফিল্ম সিটি তা হলে কোথায় হবে?
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে বছর দুই আগেই আলিপুর ও প্রেসিডেন্সি কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার এবং আলিপুর মহিলা জেলকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য প্রশাসন। প্রথমে ঠিক হয়েছিল, আলিপুর জেল চত্বরে টালি নালা বরাবর অঞ্চল ধরে সৌন্দর্যায়ন করা হবে। বাকি এলাকা এবং প্রেসিডেন্সি ও আলিপুর মহিলা জেল চত্বরে বেসরকারি আবাসন প্রকল্প গড়ে তোলা হবে। কিন্তু হেরিটেজ আইনে বিষয়টি আটকে গিয়েছে। আলিপুর এবং প্রেসিডেন্সি জেল হেরিটেজ সৌধ। আইন অনুযায়ী, জেলের প্রাচীন অংশের কাঠামো অক্ষত রাখতে হবে।
অবশেষে মাস কয়েক আগে ওই এলাকা কী ভাবে ব্যবহার করা যায়, তা ঠিক করার দায়িত্ব কলকাতা পুরসভার হাতে তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী। পুরো প্রকল্পের বিস্তারিত রিপোর্ট (ডিপিআর) তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পুরসভাকে। সূত্রের খবর, হেরিটেজ আইন বাঁচিয়েই জেল চত্বরে ফিল্ম সিটির সম্ভাবনা খতিয়ে দেখছে পুরসভা। আলিপুর জেল চত্বরের প্রায় ২৮ একর জমি এই প্রকল্পের জন্য ভাবা হয়েছে। তবে প্রয়োজনে আলিপুর, প্রেসিডেন্সি এবং আলিপুর মহিলা জেল মিলিয়ে প্রায় ৮৫ একর জমিতে ফিল্ম সিটি করা যায় কি না, তা-ও ভাবনায় রয়েছে নবান্নের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy