নীতীশ কুমারের জোটবদলের জল্পনা প্রসঙ্গে নিজের মতামত জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
তাঁর সঙ্গে বৈঠকের পরেই দেশের বিজেপি বিরোধী সব দলকে নিজের বাসভবনে একসঙ্গে বসার ডাক দিয়েছিলেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই এখন মনে করছেন, নীতীশ ‘ইন্ডিয়া’ ছেড়ে গেলে জোটের ক্ষতি তো হবেই না, উল্টে লাভ হবে। তৃণমূল সূত্রে খবর, ঘনিষ্ঠ মহলে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন , নীতীশ চলে গেলে ইন্ডিয়ার পক্ষে ভাল হবে। মমতা এ-ও মনে করেন যে, নীতীশ বিহারের জনতার চোখে অপ্রিয় হয়ে পড়েছেন। বেরিয়ে গেলে তেজস্বীদের কাজ করতে সুবিধা হবে।
শুক্রবার সাধারণতন্ত্র দিবসের দিন বাংলার রাজভবনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। যিনি বুধবারই বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’ নিয়ে বাংলায় তাঁর অবস্থানের কথা স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছিলেন। মমতা বলেছিলেন, ‘‘বাংলায় একাই লড়বে তৃণমূল। বাকিটা ভোটের পরে দেখা যাবে।’’ ঘটনাচক্রে মমতার এই ঘোষণার পরের দিনই বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে বিহারের রাজনৈতিক সমীকরণে বড় বদলের ইঙ্গিত মেলে। জল্পনা শুরু হয় নীতিশের ‘ইন্ডিয়া’ ছেড়ে এনডিএ-তে যোগ দেওয়া নিয়ে। এ ব্যাপারে বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র অন্য শরিকেরা মুখ না খুললেও তৃণমূল সূত্রে খবর, বিহারের রাজনৈতিক বদলের জল্পনা নিয়ে ঘনিষ্ঠ মহলে নিজের মতামত জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা নাকি বলেছেন, একসঙ্গে লড়লে বিহারে ৫-৭টার বেশি আসন পাওয়া যেত না। তাই বিহারে যদি রাজনৈতিক বদল হয়ও, তাতে ‘ইন্ডিয়া’র কোনও ক্ষতি হবে না।
উল্লেখ্য, লোকসভা ভোটের এক বছর আগে কেন্দ্রের শাসকদল বিজেপির বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন রাজ্যের ক্ষমতাসীন আঞ্চলিক দলগুলিকে জোটবদ্ধ করার উদ্যোগ প্রথম নিয়েছিলেন নীতীশই। দেশের বিভিন্ন রাজ্যে গিয়ে বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী। বাংলাতেও এসে তিনি দেখা করেছিলেন তৃণমূল নেত্রী তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতার সঙ্গে। বস্তুত তাঁর চেষ্টাতেই গত বছর জুন মাসে বিহারের পটনায় প্রথম বৈঠক হয় বিরোধী জোটের। তৃণমূল -সহ ১৬টি বিরোধী দল সেই বৈঠকে যোগ দিয়েছিল। পরে জোটের শরিক দলের সংখ্যা বাড়তে বাড়তে পৌঁছয় ২৮-এ। কিন্তু ‘ইন্ডিয়া’-র প্রথম বৈঠকের ছ’মাস পরে নীতীশেরই ‘ইন্ডিয়া’ ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়া নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে।
সাধারণতন্ত্র দিবসের সকাল থেকে শুরু হওয়া এই জল্পনা সত্যি হলে আগামী রবিবার অর্থাৎ ২৮ জানুয়ারি এনডিএ-র নেতা হিসাবে মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিতে পারেন জেডিইউ প্রধান। তাঁর সঙ্গে বিহারের নতুন উপমুখ্যমন্ত্রী হতে পারেন বিজেপি নেতা সুশীল মোদী।
জেডিইউ-রই একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরো বিষয়টিই আপাতত বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের সবুজ সঙ্কেতের উপর নির্ভর করছে। সেটি পেলেই বিহারে আরজেডি-কংগ্রেস-বামেদের ‘মহাগঠবন্ধন’ ছেড়ে আবার এনডিএ-তে যোগ দেবেন নীতীশ। এই নিয়ে গত দশ বছরে চতুর্থ বার এনডিএ-র সঙ্গে হাত মেলাবেন তিনি । সূত্রের খবর লোকসভা ভোটের মুখে বিহারে এনডিএ-র এই জোটে বিজেপি এবং জেডিইউর পাশাপাশি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পশুপতি পারসের ‘রাষ্ট্রীয় লোক জনশক্তি পার্টি’ (আরএলজেপি), প্রয়াত রামবিলাস পাসোয়ানের সাংসদ-পুত্র চিরাগের দল ‘লোক জনশক্তি পার্টি (রামবিলাস)’ এবং প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জিতনরাম মাঝিঁর ‘হিন্দুস্তানি আওয়াম মোর্চা’ (হাম)-ও নতুন সরকারে শামিল হতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy