অমর্ত্য সেনের বাড়িতে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজস্ব ছবি।
জমি দখলের অভিযোগ নিয়ে অমর্ত্য সেন এবং বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের মধ্যে সংঘাত চরমে উঠেছে। রবিবার প্রেস বিবৃতি জারি করে কর্তৃপক্ষ দাবি করেছেন, শান্তিনিকেতনে অধ্যাপক সেনের বাসভবন ‘প্রতীচী’ সম্পূর্ণ ভাবে বিশ্বভারতীর মালিকানাধীন জমিতে রয়েছে। এ নিয়ে তরজার মধ্যে সোমবার অর্থনীতিবিদের বাড়িতে গেলেন বোলপুরের ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক (বিএলআরও) সঞ্জয়কুমার দাস। বিএলআরও অবশ্য এই সাক্ষাৎকে ‘সৌজন্য সাক্ষাৎ’ বলেই দাবি করেছেন।
এই জমি বিতর্কের মধ্যেই সোমবার বীরভূম সফরে এসেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনিও গেলেন অমর্ত্যের বাড়িতে। ঘটনাচক্রে, কিছু দিন আগেই অমর্ত্য বলেছিলেন, দেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার যোগ্যতা রয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতার। মুখ্যমন্ত্রীর অমর্ত্যের বাড়িতে আসার আগেই নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে অধ্যাপক সেনের বাড়িতে। বাড়ির প্রবেশপথে বসানো হয়েছে ‘মেটাল ডিটেক্টর’।
সোমবার বেলার দিকে অমর্ত্যের বাড়ি যান বোলপুরের বিএলআরও। বেরোনোর সময় তিনি অবশ্য জানান, জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে অধ্যাপক সেনের সঙ্গে তাঁর কোনও কথা হয়নি। সঞ্জয়ের কথায়, ‘‘নিছকই সৌজন্য সাক্ষাৎ।’’ তার পরেই এলেন মুখ্যমন্ত্রী।
প্রসঙ্গত, জমি বিবাদের মধ্যেই শনিবার একটি সরকারি নথি (সেটির সত্যতা আনন্দবাজার অনলাইন যাচাই করেনি) প্রকাশ্যে এসেছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, শান্তিনিকেতনের ১.৩৮ একর জমি দীর্ঘমেয়াদি লিজ় দেওয়া হয়েছিল অমর্ত্যের বাবা প্রয়াত আশুতোষ সেনকে। প্রকাশ্যে আসা সরকারি নথির প্রেক্ষিতে বীরভূমের জেলাশাসক বিধান রায় বলেছেন, ‘‘প্রশাসনের কাছে যে নথি রয়েছে, সেই অনুযায়ী অমর্ত্যে সেনের পরিবারের নামে ১ একর ৩৮ শতক জমি দীর্ঘমেয়াদি লিজ়ে রয়েছে।’’ জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের এক সূত্রেরও দাবি ছিল, সেন পরিবারকে যে ১.২৫ একর জমিই লিজ় দেওয়া হয়েছিল, তার সপক্ষে কোনও ‘রেকর্ড’ নেই।
তার প্রেক্ষিতেই রবিবার বিশ্বভারতী দাবি করেছে, ১৯৪৩ সালের চুক্তি অনুযায়ী, আশুতোষকে ১.২৫ একর জমি লিজ় দিয়েছিল বিশ্বভারতী। ১.৩৮ একর নয়। এই বিষয়টি আগের দুই চিঠিতেই অমর্ত্যকে জানানো হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, ১৯৪৩ সালের সেই চুক্তি এবং ২০০৬ সালের কর্মসমিতির প্রস্তাব, কোথাও আশুতোষ বা অমর্ত্যকে বিশ্বভারতীর কোনও জমিরই মালিক হিসাবে ঘোষণা করা হয়নি। প্রেস বিবৃতিতেও কর্তৃপক্ষের দাবি, অমর্ত্যের ‘প্রতীচী’ বাড়ির প্রকৃত জমি ১.২৫ একর। ১৩ শতক জমি অবৈধ ভাবে দখল করে রেখেছেন অর্থনীতিবিদ!
এই জমি বিতর্কে রাজনীতির রংও লেগেছে। বিশ্বভারতীর জমি দখল করে রাখার অভিযোগ তুলে অমর্ত্যকে লাগাতার নিশানা করে চলেছে গেরুয়া শিবির। অন্য দিকে, অমর্ত্যের পাশে দাঁড়িয়ে আসরে নেমেছে শাসকদল তৃণমূলও। শনিবার তৃণমূলের সর্বভারতীয় সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও অর্থনীতিবিদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিজেপিকে কটাক্ষ করেছেন। বলেছেন, ‘‘অমর্ত্যবাবু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশংসা করেছেন বলেই বিজেপির গায়ে এত জ্বালা!’’ এর মধ্যে অমর্ত্যের বাড়়িতে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy