Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

বিতর্ক থামাতে গণভোট প্রসঙ্গে ব্যাখ্যা মমতার

মমতার গত কালের ওই মন্তব্যের সূত্রে আজ সকাল থেকেই আক্রমণ শুরু করে শাসক শিবির।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।—ছবি পিটিআই।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।—ছবি পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৪:৩১
Share: Save:

বাকি বিরোধী দলগুলি দূরত্ব তৈরি করায়, ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই নিজের মন্তব্যের ব্যাখ্যা দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

নয়া নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) ও জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) নিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জ বা মানবাধিকার কমিশনের মতো নিরপেক্ষ সংস্থার পর্যবেক্ষণে গণভোটের দাবি তুলেছিলেন তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা। তাঁর ওই বক্তব্যে বিতর্ক শুরু হয় দেশ জুড়ে। বিজেপি যেমন এক দিকে আজ দফায় দফায় আক্রমণ শানায়, তেমনি মমতার মন্তব্যের সঙ্গে সহমত নয় বলে জানিয়ে দেয় সিপিএম ও কংগ্রেসের মতো বিরোধী দলগুলি। বিষয়টি নিয়ে জলঘোলা থামাতে আজ ব্যাখ্যা করে মমতা জানান, তিনি জনমত যাচাইয়ের ভিত্তিতে ভোটের কথা বলেছিলেন। তা যাতে রাষ্ট্রপুঞ্জের মতো নিরপেক্ষ সংস্থার নজরদারিতে হয়, সেটাই বলতে চেয়েছেন তিনি।

মমতার গত কালের ওই মন্তব্যের সূত্রে আজ সকাল থেকেই আক্রমণ শুরু করে শাসক শিবির। প্রথমে সরব হন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জি কিশন রেড্ডি। প্রশ্ন তোলেন, মুখ্যমন্ত্রী হয়ে কী ভাবে তিনি এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য করেন? তাঁর কথায়, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য করে রাষ্ট্রপুঞ্জকে জড়াতে চাইছেন। যা বিদেশি শক্তিকে দেশের অভ্যন্তরীণ মামলায় হস্তক্ষেপের আহ্বান।’’ কেন্দ্রীয় বস্ত্রমন্ত্রী স্মৃতি ইরানির মতে, গণভোটের দাবি তুলে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী আসলে সংসদের অপমান করেছেন। শুক্রবার কলকাতায় বস্ত্রশিল্প সংক্রান্ত এক অনুষ্ঠানের পরে স্মৃতির কাছে প্রসঙ্গটি তোলা হলে তিনি বলেন, ‘‘ভারতের সংবিধান ও সংসদ সর্বোচ্চ, এটা সব রাজনৈতিক দল ও নাগরিকেরা জানে। সংসদে পাশ হওয়া আইন নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সন্দেহ রয়েছে। এটা সংসদকে অপমান করা। আমার আশা, গণতান্ত্রিক দেশে কেউ সংসদের উপরে এমন আক্রমণ মেনে নেবেন না।’’ আর বিজেপি মুখপাত্র জি ভি এ নরসিংহ রাও বলেন, ‘‘মমতা পাকিস্তানের সুরে কথা বলছেন।’’

আরও পড়ুন: হাল সামলান, এই আইন বাতিল করুন, মোদীকে বললেন মমতা

বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক থামাতে উদ্যোগী হন মমতাও। এ দিন সেই প্রসঙ্গে ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, ‘‘জনমত যাচাইয়ের ভিত্তিতে ভোটের কথা বলেছিলাম। দেশের বিশেষজ্ঞদের দিয়ে জনমত যাচাই করতে বলেছিলাম। তা যাতে রাষ্ট্রপুঞ্জের মতো নিরপেক্ষ সংস্থার নজরদারিতে হয়, সেটাই চেয়েছি।’’ এতেও অবশ্য আক্রমণ থামেনি। এ দিন রাতে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন বলেন, ‘‘দেশীয় সমস্যায় আমরা কখনও তৃতীয় পক্ষকে জড়াই না। সম্পূর্ণ দেশীয় একটি বিষয়ে তিনি রাষ্ট্রপুঞ্জকে টেনে আনার কথা বলছেন। ওঁর কি দেশের কোনও প্রতিষ্ঠানের উপরে ভরসা নেই?’’

আরও পড়ুন: ‘আমাদের আলাদা করে কার সাধ্যি?’

এনআরসি বা সিএএ সংক্রান্ত লড়াইয়ে এক সঙ্গে থাকলেও, মমতার রাষ্ট্রপুঞ্জ সংক্রান্ত মন্তব্য থেকে দূরত্ব রাখছে কংগ্রেস ও সিপিএম। কংগ্রেসের মুখপাত্র পবন খেড়ার কথায়, ‘‘মমতার মতের সঙ্গে দল সহমত নয়। দেশের গণতন্ত্র যথেষ্ট পরিণত। আমাদের গণতন্ত্র সব ধরনের চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে সক্ষম। বাইরের হস্তক্ষেপের কোনও প্রয়োজন নেই। বাইরের কেউ যেন গণতন্ত্রকে খাটো করতে না আসে।’’ আর সিপিএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, ‘‘আমাদের লড়াই হল গণতন্ত্র বাঁচানো। সংবিধানকে রক্ষা করা। তা করার জন্য বাইরের লোকেদের হস্তক্ষেপের দরকার নেই।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy