প্রতিবাদ: সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন এবং নাগরিক পঞ্জি বিরোধী সভায় কাঁসর বাজাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে।—ছবি পিটিআই।
নয়া নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) এবং জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) নিয়ে এ বার গণভোটের দাবি তুললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি চান, কোনও রাজনৈতিক দলের ভূমিকা না রেখে রাষ্ট্রপুঞ্জ, মানবাধিকার কমিশনের মতো ‘নিরপেক্ষ’ সংস্থার পর্যবেক্ষণে সাধারণ মানুষের মতামতের ভিত্তিতে সেই ভোট হোক। এই সূত্রেই প্রধানমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীকে মমতার চ্যালেঞ্জ, ‘‘নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ আপনাদের যদি বুকের পাটা থাকে, তা হলে গণভোটে আসুন। ২০২৪ সাল পর্যন্ত অপেক্ষা কেন? তার আগেই একটা ভোট হয়ে যাক। দেখতে চাই ক’টা লোক আপনাদের সঙ্গে থাকেন। যদি গণভোটে হেরে যান, তা হলে ইস্তফা দিতে বাধ্য হবেন আপনারা।’’
সিএএ এবং এনআরসি-র বিরুদ্ধে তাঁর ধারাবাহিক আন্দোলনের চতুর্থ দিনে বৃহস্পতিবার রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে তৃণমূলের ছাত্র-যুবদের জমায়েতে বক্তৃতা করেন মমতা। সেখানেই গণভোটের দাবি তুলে তিনি বলেন, ‘‘রাষ্ট্রপুঞ্জ, মানবাধিকার কমিশনের মতো নিরপেক্ষ সংস্থাদের নিয়ে কমিটি হোক। তারাই ভোট সংগঠিত করুক। সেখানে তৃণমূলের বা বিজেপির বা কোনও রাজনৈতিক দলেরই থাকার দরকার নেই। হিন্দু, মুসলিম, শিখ, খ্রিস্টান কারও থাকার দরকার নেই।’’ এই গণভোটের দাবি নিয়ে সারা দেশে ধর্ম-বর্ণ, রাজনীতি নির্বিশেষে আন্দোলন ছড়িয়ে দিতে আহ্বানও জানিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী।
তাঁর গণভোটের দাবির পাশে অবশ্য রাজ্যের অন্য কোনও দলই দাঁড়ায়নি। বিজেপি তো বটেই, সিপিএম, কংগ্রেসও এর যুক্তি এবং গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। মুখ্যমন্ত্রীকে এই বক্তব্য প্রত্যাহারের আর্জি জানিয়েছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়।
আরও পড়ুন: দলের রং ছাড়াই বর্ণময় মানুষের মোহনা
মমতা সিএএ এবং এনআরসি-বিরোধী আন্দোলনকে ‘নাগরিক’ নাম দিয়েছেন। সমাবেশমঞ্চে রাখা বোর্ডে বাংলায় ‘নাগরিক সবাই’ লেখার পাশাপাশি এ দিন ‘বাংলার মাটি, বাংলার জল...’ গানের সঙ্গে ক্রীড়াবিদদের হাতে রাখি পরিয়ে দেন তৃণমূলের মহিলা নেত্রীরা। স্লোগানের তালে তালে কাঁসর বাজান মমতা। আজ, শুক্রবার পার্ক সার্কাস ময়দানে বিশিষ্ট জনেদের উদ্যোগে দিনভর কর্মসূচি চলবে। বিকেলে সেখানে যাবেন মুখ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: ধর্মঘটে হুঁশিয়ারি, ডাক বাম মিছিলে
এ দিকে, মমতার গণভোটের দাবির সমালোচনা করে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘পাকিস্তান যেমন রাষ্ট্রপুঞ্জের মাধ্যমে কাশ্মীরে গণভোটের দাবি জানায়, মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যেও যেন সেই ভাষা। দেশের সংবিধান, সুপ্রিম কোর্টে তাঁর আস্থা নেই। ওঁকে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে বরখাস্ত করা উচিত।’’ সিপিএমের পলিটবুরোর সদস্য মহম্মদ সেলিমের বক্তব্য, ‘‘রাষ্ট্রপুঞ্জের নির্ধারিত আন্তর্জাতিক সংখ্যালঘু অধিকার দিবস ছিল বুধবার। সে দিন কলকাতায় বিভিন্ন সংখ্যালঘু সংগঠনের ডাকে যে মিছিল ছিল, তা বানচাল করতে যে সরকার পুলিশ লেলিয়ে দিয়েছে, তার মুখ্যমন্ত্রীর মুখে এ সব কথা মানায় না।’’
আরও পড়ুন: উস্কানি দিচ্ছেন মমতা, অভিযোগ কৈলাসের
প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি সোমেন মিত্র বলেন, ‘‘সংসদে পাশ হওয়া বিল নিয়ে এ ভাবে আন্তর্জাতিক নজরদারিতে গণভোট করা যায় কি না, আমাদের জানা নেই। এই আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদকে প্রধানমন্ত্রী যে ভাবে সাম্প্রদায়িক রং দিতে চেয়েছেন, গোটা দেশের মানুষ তার প্রতিবাদ করছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy