Advertisement
২৫ ডিসেম্বর ২০২৪
Bengali Mega Set Visit

বড়দিনেই গৌরবের বাড়িতে প্রাক্তন প্রেমিকা! ‘ঝোরা’ না ‘ঝিল্লি’, কাকে বাছবেন নায়ক?

সুজন হলেই বুঝি তেঁতুলপাতায় ন’জন থাকতে পারেন? অতীত-বর্তমানের সহাবস্থান সম্ভব? ধারাবাহিক ‘তেঁতুলপাতা’র সেট ঘুরে উত্তর খুঁজল আনন্দবাজার অনলাইন।

ঋতব্রতা দে, গৌরব চট্টোপাধ্যায়, রোশনি ভট্টাচার্য ধারাবাহিক ‘তেঁতুলপাতা’য়।

ঋতব্রতা দে, গৌরব চট্টোপাধ্যায়, রোশনি ভট্টাচার্য ধারাবাহিক ‘তেঁতুলপাতা’য়। নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৯:৫৪
Share: Save:

ডিসেম্বর মানেই বড়দিন, ইংরেজি নতুন বছরের আবাহন। উদ্‌যাপনের ঢেউ আছড়ে পড়েছে কলকাতা থেকে দূরে শিমূলপুরাতেও। সেখানে ঝিল্লি চৌধুরী তার শ্বশুরবাড়ির সমস্ত কচিকাঁচার জীবন্ত ‘সান্তাক্লজ়’! নেচে, গেয়ে, উপহার দিয়ে প্রত্যেকের মুখে হাসি ফুটিয়েছে। যা দেখে মুগ্ধ স্বামী ঋষি। এ বার কি তার ‘সান্তা’ সেজে স্ত্রীকে পাল্টা উপহার দেওয়ার পালা? কিন্তু উপরওয়ালার কারসাজি যে অন্য! তিনি বাড়ির মেজ ছেলের জীবনে অতীত ফিরিয়ে আনছেন। ঋদ্ধির জীবনে ফিরছে প্রেমিকা ঝোরা। ক্রিসমাসের দিনেই! তার পর?

বাকি রহস্য ফাঁসের আগেই ‘কাট কাট’ চিৎকার! এক লহমায় শিমূলপুরা হয়ে গেল দক্ষিণ কলকাতার ভারতলক্ষ্মী স্টুডিয়ো! এত ক্ষণ ধরে বর্ণিত ঘটনার সবটুকুই সেই স্টুডিয়োর সেটে ঘটছিল। যার সাক্ষী আনন্দবাজার অনলাইন। সেটেই চৌধুরী পরিবারের অন্দরমহল। আলো, ক্রিসমাস ট্রি, তারা দিয়ে সাজানো। যৌথ পরিবারের এই বাড়িটির নামই ‘তেঁতুলপাতা’। এখানে ‘সুজন’ হয়ে সস্ত্রীক তিন ছেলের বাস। এদেরই অন্যতম ‘ঋদ্ধি’ ওরফে গৌরব চট্টোপাধ্যায়। পর্দার যাঁর স্ত্রী ‘ঝিল্লি’ ঋতব্রতা দে। প্রাক্তন প্রেমিকা হয়ে লম্বা বিরতির পরে ধারাবাহিকে সদ্য ফিরেছেন রোশনি ভট্টাচার্য। তিনিই ধারাবাহিকে ‘ঝোরা’। ‘ঝোরা’কে ‘ঝিল্লি’র মুখোমুখি পৌঁছে দিচ্ছেন বড় জা ‘খেয়ালি’। এই ভূমিকায় কাউন্সিলর শ্রীতমা ভট্টাচার্য।

বড়দিনের উদ্‌যাপন ‘তেঁতুলপাতা’ ধারাবাহিকে।

বড়দিনের উদ্‌যাপন ‘তেঁতুলপাতা’ ধারাবাহিকে। নিজস্ব ছবি।

“গৌরবদা আমার সঙ্গদোষে বকবক করছে...”

শুটিংয়ের ফাঁকে রহস্য ফাঁস করার মতো করেই জানালেন ‘ঝিল্লি’ ঋতব্রতা। “রোজ ১৪ ঘণ্টা করে একসঙ্গে কাজ করি। মুখে কুলুপ এঁটে থাকলে রসায়ন পর্দায় ফুটবে? তার উপরে আমি প্রচণ্ড ছটফটে। সঙ্গদোষে গৌরবদাও বদলে গিয়েছে!” কথা শেষ করে হেসে ফেললেন তিনি। পর্দায় তো এত হাসাহাসির উপায়ই নেই। বাস্তবের মতো পর্দাতেও বোধ হয় ‘ঋষি’ গুরুগম্ভীর? “তার উপরে প্রতি সপ্তাহে, প্রতি পর্বে এত মোচ়ড়!” দাবি নায়িকার। কোনও পর্বে কলেজের বিশেষ অনুষ্ঠান। ঝিল্লি আবার পড়াশোনা শুরু করবে। সেই পর্ব মিটতে না মিটতেই সুইমিং পুলে জলে ডোবার শুটিং। তার পরেই ঋষির ‘ঝোরা’ জলের বিজ্ঞাপনের হাত ধরে বাড়িতে প্রাক্তনের আগমন।

ভরা শীতে জলে ডুবে শুটিং? নিজেদের গরম করলেন কী ভাবে? দুষ্টু প্রশ্নের দুষ্টু জবাব হওয়া উচিত ছিল। একাধিক ধারাবাহিকের নায়িকা পোড়খাওয়া। তিনি মিষ্টি হেসে জবাব দিলেন, “আমি তো গরম জলে মধু মিশিয়ে খেয়ে নিজেকে চাঙ্গা রেখেছি। গৌরবদা বরং আমার থেকেও বেশি কেঁপেছে।” ধারাবাহিকের শুরুতে এক বিয়ের পিঁড়ি থেকে পালিয়ে অন্য বিয়ের পিঁড়িতে। বাস্তবেও এমন কোনও পরিকল্পনা আছে নাকি? সেটের উদ্দেশে রওনা দিচ্ছিলেন। প্রশ্ন শুনে চোখ কপালে। বললেন, “রক্ষে করুন। জীবন নিয়ে এত অ্যাডভেঞ্চার করতে পারব না। তা ছাড়া, এখন বিয়ের প্রশ্নই নেই।”

একটা ধারাবাহিক দাঁড় করানো যায়... গল্পে জোর না থাকলে সব ক’টা হয় না

দাবি গৌরব চট্টোপাধ্যায়ের। চৌধুরী পরিবারের মেজ ছেলের চোখে বাবার দেখা স্বপ্ন। শিমূলপুরাকে সে তিলে তিলে তিলোত্তমা বানাতে চায়। উদ্যোগপতি, কলেজের অতিথি অধ্যাপক। ভীষণ নিয়মনিষ্ঠ। অকারণে কথা, হাসাহাসি এমনকি কেক খাওয়াও পছন্দ করে না! নিজের চরিত্রের কথা বলতে বলতে নিজেই হেসে ফেলেছেন তিনি। তার পরেই উপরের মন্তব্য। তার পরেই সংযোজন, “এই মন্ত্রে পর্দায় ঝিল্লি জব্দ। বদলে গিয়েছে স্ত্রী দেবলীনাও। জানেন, এখন বেশি রাত জাগতে পারে না! কোথাও গেলে তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরতে চায়। সকালে তাড়াতাড়ি উঠে পড়ে। যদিও সবটা বদলে যাক, কখনওই এমন চাইব না!”

কখনও নীল ব্লেজ়ারে ঝলমলে, কখনও কালো ব্লেজ়ার তাঁর গায়ে। তাঁর শেষ ধারাবাহিক ‘গাঁটছড়া’য় তিনি ব্যবসায়ী। এ বার লেখাপড়া নিয়ে ব্যস্ত। অনেকটা বিরতি নিয়ে ফেরার পরে এটুকুই ফারাক? গৌরবের দাবি, “বদল অনেক। চরিত্রে বদল, সহ-অভিনেতারাও অন্য। এর আগে কখনও অধ্যাপকের চরিত্রে অভিনয় করিনি।” দাবি, ধারাবাহিক ‘রাণী রাসমণি’র কাহিনি-চিত্রনাট্যকার রাখি এই ধারাবাহিকটিও লিখছেন। সেটা জানার পর আর ‘না’ করেননি তিনি।

কিন্তু ধারাবাহিকের গল্পে নতুনত্বের তো প্রয়োজন! স্বীকার করে নিয়েছেন সে কথা। গৌরব বলেছেন, “ধারাবাহিক দাঁড়ায়, জনপ্রিয় হয়, দিনের পর দিন চলে সেই জোরেই। একটা ধারাবাহিক হয়তো নড়বড়ে গল্প দিয়ে দাঁড় করানো যায়। গল্পে জোর না থাকলে সব ক’টা ধারাবাহিক দাঁড় করানো সম্ভব নয়।”

“গৌরবদার সঙ্গে কিছু যোগ আছে... হয় আমি অতীত, নয় বর্তমান!”

গৌরবের সঙ্গে ‘রাণী রাসমণি’ ধারাবাহিকের যোগ প্রবল। ধারাবাহিকের কাহিনি-চিত্রনাট্যকার যেমন চেনা, একই ভাবে পরিচিত নতুন ধারাবাহিকের নতুন চরিত্র রোশনি ভট্টাচার্যও। আগের ধারাবাহিকে তিনি ‘জগদম্বা’ হয়েছিলেন। রানিমার মেয়ে, মথুরবাবুর স্ত্রী। “গৌরবদাকে কথাটা বলেওছি। তোমার সঙ্গে নির্ঘাৎ কোনও যোগ রয়েছে। হয় তোমার বর্তমান, নয় অতীত! কী কাণ্ড!” রসিকতা ‘ঝোরা’র। সদ্য যোগ দিয়েছেন ধারাবাহিকে। অল্প অংশের শুটিং করেছেন। যা দেখে নড়াচড়া পড়েছে দর্শকমহলে। এ বার কি দুষ্টুমি করবেন? খলনায়িকা? না কি আরও এক নায়িকার ভূমিকায়?

এখনও জানেন না রোশনি। পর্দায় তিনি আধুনিকা, শিক্ষিতা। কিন্তু ‘ঋষি’কে ভুলতে পারেননি। তাই ‘ঝোরা’ জলের বোতল হাতে পেতেই খুঁজতে খুঁজতে ফের শিমূলপুরা। এ বার বিয়ে ভাঙবেন না কি আত্মত্যাগ করে ফিরে যাবেন, সেটা সময় বলবে।

যাঁরা নিয়মিত ‘কার কাছে কই মনের কথা’ ধারাবাহিক দেখতেন, তাঁরা শ্রীতমা ভট্টাচার্যকে বিশেষ ক্ষমতাসম্পন্ন ‘পুতুল’-এর চরিত্রে দেখেছেন। ‘তেঁতুলপাতা’য় তিনিই ৩৬০ ডিগ্রি ঘুরে গিয়ে ‘ঝিল্লি’র বড় জা ‘খেয়ালি’। ভীষণ দুষ্টু। জলে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় ‘ঝিল্লি’কে। ‘ঝোরা’র হাত ধরে বাড়িতে নিয়ে আসে... বলতেই বলেছেন, “দুষ্টুমি করতে ভীষণ ভাল লাগে।” সঙ্গে সঙ্গে সংযোজন, “অবশ্যই পর্দায়”।

সেট থেকে বেরোতেই চোখে ধাঁধা। স্টুডিয়োর ভিতরের মতোই কলকাতাও যে ঝলমলে! বড়দিনের যাপনে শহর যেন লাস্যময়ী। কোনটা সত্যি, কোনটাই বা মায়া? দুই বিপরীতধর্মী দৃশ্যের দাবি, সেটের ঝলমলানি ছোট পর্দায় গল্প বলার খাতিরে। শহর প্রতি বছর এ ভাবেই সাজে। ডিসেম্বরের চোখে মায়া কাজল পরাতে।

অন্য বিষয়গুলি:

Tetulpata Star Jalsha Gourab Chatterjee Roshni Bhattacharya
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy