ছবি: পিটিআই।
চলতি সপ্তাহের প্রথম দু’টি কাজের দিনের তুলনায় পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে ঠিকই। কিন্তু বুধবার সারা দিনেও উত্তরবঙ্গের সঙ্গে দক্ষিণবঙ্গ-সহ দেশের বাকি অংশের ট্রেন-যোগাযোগ পুরোপুরি স্বাভাবিক করতে পারেনি রেল। পদাতিক, কাঞ্চনকন্যা, উত্তরবঙ্গ এবং তিস্তা-তোর্সা এক্সপ্রেসের মতো গুরুত্বপূর্ণ ট্রেন এ দিনও চালানোর ব্যবস্থা করে উঠতে পারেনি তারা।
অশান্তি প্রশমনের পরেও ট্রেন বন্ধ কেন, মঙ্গলবার সেই প্রশ্ন তুলে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ দিন তিনি রেলের কর্মদক্ষতা নিয়েই প্রশ্ন তোলেন। হাওড়া ময়দান থেকে ডোরিনা ক্রসিং পর্যন্ত মিছিলের শেষে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘উত্তরবঙ্গের সঙ্গে দক্ষিণের যোগাযোগ পুরোপুরি বন্ধ। উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সব ট্রেন বন্ধ রয়েছে। যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হবে কেন? তাঁদের কী দোষ?’’
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে বিক্ষোভের জেরে প্রচুর ট্রেন বাতিল করায় কয়েক দিন ধরে অশেষ দুর্গতি চলছে যাত্রীদের। বিজেপির প্রতিনিধিরা এ দিন মালদহ, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া ও উলুবেড়িয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত স্টেশন পরিদর্শন করতে যান। মুর্শিদাবাদে বাধা পান বিজেপির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয়। মালদহে দুই বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু ও নিশীথ প্রামাণিককে গ্রেফতার করে পুলিশ। রেল স্টেশন পরিদর্শন নিয়ে বিজেপির সক্রিয়তাকে বিঁধে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমি নিজে তিন বছর রেলমন্ত্রী ছিলাম। স্টেশনের এ, বি, সি, ডি, ই গ্রেড থাকে। গ্রামের দু’তিনটি জায়গায় কিছু গোলমাল হয়েছে। তা নাকি আবার দেখতে আসবে! এখানে দেখতে আসার কী আছে? দেখতে হলে দিল্লি যাও, ভাগলপুর যাও।’’
আরও পড়ুন: কৈলাসের হুমকি নস্যাৎ তৃণমূলের
রেলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশের পাশাপাশি ট্রেন বাতিলের জেরে বিপাকে পড়া বিপুল সংখ্যক যাত্রীকে সুরাহা দিতে তৎপর হয়েছে নবান্ন। এ দিন কলকাতা থেকে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন গন্তব্যে বাসের সংখ্যা অনেক বাড়িয়েছে পরিবহণ দফতর। পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী জানান, পরিস্থিতি সামলাতে ৫০টি অতিরিক্ত বাস চালানো হচ্ছে কলকাতা-শিলিগুড়ি রুটে। আগে ওই রুটে চলত ৩৬টি বাস। মালদহগামী বাসের সংখ্যা ১৪ থেকে বাড়িয়ে ২৭ করা হচ্ছে। রায়গঞ্জ, বালুরঘাটগামী বাসের সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে।
মুর্শিদাবাদ জেলায় ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক না-হওয়ায় সেখানে ৫০টি অতিরিক্ত বাস চালাচ্ছে পরিবহণ দফতর। কলকাতা-বহরমপুর রুটেও বাসের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে।
রেল সূত্রের খবর, কৃষ্ণনগর-লালগোলা শাখায় এ দিন পলাশি পর্যন্ত তিন জোড়া ইএমইউ ট্রেন চালানো হয়েছে। আজ, বৃহস্পতিবার ওই সংখ্যা আরও বাড়ানো হতে পারে। তবে লালগোলা পর্যন্ত কবে ট্রেন চালানো যাবে, রেল-কর্তৃপক্ষ এ দিন তা জানাতে পারেননি। ওই জেলায় আজিমগঞ্জ-নিউ ফরাক্কা শাখাতেও ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়নি। এ দিন উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের কাটিহার ডিভিশনের কর্তারা ভালুকা রোড, হরিশ্চন্দ্রপুর, সামসি স্টেশন পরিদর্শন করেন। কাটিহার ডিভিশনের ডিআরএম রবীশ কুমার জানান, ভালুকায় লুপ লাইন এবং সিগন্যালিং ব্যবস্থা এ দিন ফের চালু করা গিয়েছে। আগামী দু’-এক দিনের মধ্যে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
কামরূপ, কাঞ্চনজঙ্ঘা, সরাইঘাট ও তেভাগা এক্সপ্রেস এ দিন ফের নির্ধারিত সময়ে চলতে শুরু করেছে। আগেই বাতিল হওয়া দার্জিলিং মেল, এবং যোগবাণী এক্সপ্রেসকেও পৃথক ভাবে বিশেষ ট্রেন হিসেবে চালানো হয়। তবে এ দিনও হাওড়া-কাটিহার, কলকাতা-রাধিকাপুর, হাওড়া-মালদহ ইন্টারসিটি, শিয়ালদহ-সহর্ষ হাটেবাজারে এক্সপ্রেসের মতো ট্রেন বাতিল করা হয়। বৃহস্পতিবার থেকে হাওড়া-নিউ জলপাইগুড়ি শতাব্দী এবং উত্তরবঙ্গ এক্সপ্রেস ফের চলতে শুরু করবে বলে রেলের খবর।
পূর্ব রেলের তরফে এ দিন বিভিন্ন স্টেশন ভাঙচুরে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানানো হয়েছে। বিক্ষোভ-ভাঙচুরে রেলের ৭০ কোটি টাকার সামগ্রী নষ্ট হয়েছে শিয়ালদহ ডিভিশনে। তবে ট্রেন যোগাযোগ ব্যাহত হওয়ার কারণে বাণিজ্যিক ক্ষতির খতিয়ানকে এই হিসেবের বাইরে রাখা হয়েছে
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy