Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
TMC

দলের মূলস্রোতে ফিরতে চেয়ে সটান তৃণমূল ভবনেই হাজির মরিয়া জিতেন্দ্র তিওয়ারি

জিতেন্দ্র বলেন, ‘‘এটা তো আমার দলেরই অফিস! সেখানে আমি তো আসতেই পারি।’’

জিতেন্দ্র তিওয়ারি।

জিতেন্দ্র তিওয়ারি। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০২১ ১৬:২৮
Share: Save:

বৃহস্পতিবার দুপুরে আচমকাই বাইপাসের ধারে তৃণমূল ভবনে হাজির হন আসানসোলের প্রাক্তন পুর প্রশাসক তথা পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক জিতেন্দ্র তিওয়ারি। সূত্রের খবর, দলে ফিরতে মরিয়া জিতেন্দ্র সরাসরি তৃণমূল ভবনে এসেছেন দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে দেখা করতে। তৃণমূলের একাংশের বক্তব্য, বিজেপি জিতেন্দ্রর জন্য তাদের দরজা বন্ধ করে দিয়েছে। তাই তৃণমূলের মূল স্রোত ফিরতে মরিয়া জিতেন্দ্র তৃণমূল ভবনে চলে এসেছেন। কেন তিনি আচমকা তৃণমূল ভবনে, তার জবাবে জিতেন্দ্র বলেন, ‘‘এটা তো আমার দলেরই অফিস! সেখানে আমি তো আসতেই পারি।’’

প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার বিকালে মালদহ এবং মুর্শিদাবাদ জেলা কমিটির সঙ্গে বৈঠকে বসার কথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। দলের একাংশের বক্তব্য, জিতেন্দ্র ওই বৈঠকের অবসরে সরাসরি মমতার সঙ্গেই দেখা করতে এসেছিলেন। দলের এক নেতার কথায়, ‘‘আমরা জানতে পেরেছি, জিতেন্দ্র একাধিকবার কৈলাস বিজয়বর্গীয়র সঙ্গে কথা বলেছে। কিন্তু বিজেপি ওকে নিতে নারাজ। সে জন্যই ও তৃণমূল ভবনে দৌড়ে এসেছে। যদি নেত্রীর সঙ্গে দেখা করে দলের মূলস্রোতে ফেরা যায়।’’ জিতেন্দ্রে তরফে অবশ্য সেই সম্ভাবনার কথা উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। বরং তাঁকে যখন প্রশ্ন করা হয়, তিনি বৈঠকে থাকবেন কি না, জিতেন্দ্র বলেন, ‘‘ওটা তো অন্য বৈঠক। ওখানে আমি থাকব কেন!’’

প্রসঙ্গত, বিজেপি-তে জিতেন্দ্র যাওয়া এবং না-যাওয়া নিয়ে ইতিমধ্যেই যথেষ্ট জলঘোলা হয়েছে। তাঁর দলবদল যখন প্রায় পাকা, আসানসোলের পুর প্রশাসকের পদ থেকে তিনি ইস্তফা দিয়েছেন, দলের রাজ্যনেতৃত্বকে চিঠি লিখে তৃণমূল ছাড়ার কথাও ঘোষণা করে দিয়েছেন, তখনই আপত্তি ওঠে বিজেপি-র প্রথমসারির নেতা তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়ের তরফে। সোশ্যাল মিডিয়ায় বাবুল সরাসরিই জানান, জিতেন্দ্রর বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার বিষয়টি তিনি মন থেকে মেনে নিতে পারছেন না। যদিও তিনি পাশাপাশিই জানিয়েছিলেন, এক্ষেত্রে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। বাবুলকে সমর্থন করেছিলেন বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি তথা সাংসদ দিলীপ ঘোষও। একে একে তাঁদের সুরে সুর মেলান সায়ন্তন বসু, অগ্নিমিত্রা পাল-সহ আরও কয়েকজন নেতা। দলের লাইনের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে গণমাধ্যমে বিবৃতি দেওয়ায় বাবুল এবং দিলীপ ছাড়া সকলকেই শোকজ করা হয়।

জিতেন্দ্র আবার ততদিনে কলকাতায় এসে মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের সঙ্গে বৈঠক করে তৃণমূলে ফেরার কথা ঘোষণা করে দিয়েছেন। পাশাপাশিই বলেছেন, দিদির কাছে তিনি ক্ষমা চেয়ে নেবেন। বলবেন, তাঁর ভুল হয়েছিল। তিনি ভুল স্বীকার করে নিচ্ছেন।

অন্যদিকে, তখন আবার বিজেপি-র একাংশ মনে করছিল, সম্ভবত ‘বিক্ষুব্ধ’ নেতাদের শোকজ করে তাঁদের সবক শিখিয়ে জিতেন্দ্রকে দলে নিয়েই নেবে বিজেপি। তার মধ্যেই জিতেন্দ্রকে তৃণমূলের জেলা কমিটি থেকে ছেঁটে ফেলা হয়েছে। এলাকার বিধায়ক হলেও পাণ্ডবেশ্বরে দলের শাখা সংগঠনের কর্মসূচিতেও তাঁকে আমন্ত্রণ করা হয়নি। ফলে দল তাঁর সঙ্গে দূরত্ব ক্রমেই বাড়াচ্ছিল। কিন্তু জিতেন্দ্র নিজে হতোদ্যম হননি। উল্টে সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু কিছু ‘মানসিক বলবর্ধক’ পোস্ট করছিলেন। যা থেকে মনে করা হচ্ছিল, তিনি নতুন করে লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কিন্তু তার পরেই বৃহস্পতিবার দুপুরে আচম্বিতে তাঁর তৃণমূল ভবনে আগমন আবার এই বিধায়ককে নিয়ে নতুন জল্পনার অবকাশ তৈরি করেছে।

ঘটনাচক্রে, তৃণমূল ভবনে এলেও জিতেন্দ্র ওই দফতরের ভিতরে ঢোকেননি। বাইরে ব্যারিকেডের আশেপাশে খানিকটা উদ্‌ভ্রান্ত হয়ে ঘোরাঘুরি করছিলেন এবং একটানা মোবাইলে কথা বলছিলেন। তখনই তাঁকে ওই বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়। তিনি বলেন, তখনও পর্যন্ত কারও সঙ্গে তাঁর কথা হয়নি। গণমাধ্যমের লাগাতার প্রশ্নের মুখে পড়ে কিছুক্ষণ পর আবার ওই এলাকা ছেড়ে অন্য কোথাও চলে যান জিতেন্দ্র। বলে যান, আবার পরে আসবেন।

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Jitendra Tiwari
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy