Advertisement
২১ ডিসেম্বর ২০২৪
Mamata Banerjee

‘সাগরদিঘি ক্ষত’ শুকোয়নি এখনও, উপনির্বাচনের ফল ঘোষণার দু’মাস পরেও মমতা-কণ্ঠে ‘টাকার খেলা’!

সাগরদিঘিতে বাম-কংগ্রেস জোটের কাছে তৃণমূলের হারের পর ফলাফল নিয়ে শাসকদলের অন্দরে কাটাছেঁড়া শুরু হয়ে যায়। সংখ্যালঘু ভোট ত়ৃণমূলের থেকে মুখ ফিরিয়েছে কি না, সে প্রশ্নও উঠতে শুরু করে।

photo of Mamata Banerjee

সাগরদিঘি উপনির্বাচনের ফল নিয়ে আবার সরব হলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মালদহ শেষ আপডেট: ০৪ মে ২০২৩ ২০:৩৭
Share: Save:

মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘিতে উপনির্বাচন হয়েছিল ২৭ ফেব্রুয়ারি। ফল ঘোষণা হয়েছিল ২ মার্চ। তার পর দু’মাসেরও বেশি সময় কেটে গিয়েছে। কিন্তু দেখা গেল, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন থেকে সাগরদিঘির ‘অপ্রত্যাশিত’ পরাজয়ের ক্ষত এখনও শুকোয়নি। বৃহস্পতিবার মালদহের ইংরেজবাজারের সভায় আবার সাগরদিঘির ফলাফলের প্রসঙ্গ টেনে ‘টাকার খেলা’র অভিযোগ তুললেন মমতা। বললেন, ‘‘সাগরদিঘির কেস আমি জানি। টাকা দিয়ে লোক কেনা! কে টাকা দিয়েছে, কোথা থেকে দিয়েছে— সব জানি!’’

সাগরদিঘিতে বাম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী বায়রন বিশ্বাসের কাছে হেরে যান তৃণমূলের দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনের পর এই প্রথম সাগরদিঘিতে পরাজিত হল তৃণমূল। ওই ফল নিয়ে প্রথম থেকেই সরব হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তখনও উপনির্বাচনে ‘টাকার খেলা’র অভিযোগ করেছিলেন। দেখা গেল, তিনি তাঁর বক্তব্য থেকে সরে আসেননি। মমতাসুলভ ভঙ্গিতে তিনি বলেন, ‘‘গ্যাসবেলুন এখন ক্যাশবেলুন হয়েছে। এর পরে অ্যাশবেলুন হবে। তার পরে ভ্যানিশ হয়ে যাবে!’’

তবে প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই মমতার ওই অভিযোগের পাল্টা দিয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। মমতার বক্তব্য তাঁকে জানানো হলে বিরোধী দলনেতা বলেন, ‘‘টাকা দেওয়া হলে উনি তার বিস্তারিত প্রকাশ করছেন না কেন? উনি তো বলছেন, উনি সব জানেন!’’

সাগরদিঘিতে বিজেপির ‘সাহায্য’ নিয়েই বাম-কংগ্রেস জোট জিতেছে বলে দাবি করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেছিলেন, ‘‘সিপিএম-কংগ্রেস একসঙ্গে রয়েছে। বিজেপির ভোটও ওদের কাছে গিয়েছে।’’ যার পাল্টা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী নিজের মতো করে ফলাফল বিশ্লেষণ করে বলেছিলেন, ‘‘কংগ্রেস প্রার্থী যেমন বামফ্রন্টের ভোট পেয়েছেন, তেমনই বিক্ষুব্ধ তৃণমূলের বড় অংশের ভোট পেয়েছেন। বিজেপির ভোটাররা যাঁরা এই ভোটে তৃণমূলের পরাজয় চেয়েছিলেন, তাঁরাও কংগ্রেস প্রার্থীকে ভোট দিয়েছিলেন।’’ অধীরের ওই বক্তব্যকে হাতিয়ার করেই তখন আক্রমণ শানিয়েছিলেন মমতা। বলেছিলেন, ‘‘এমন অনৈতিক জোট হলে কংগ্রেস, সিপিএম কী করে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়বে? ওরা যদি বিজেপির সাহায্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারাতে চায়, তা হলে ওরা কী ভাবে নিজেদের বিজেপি বিরোধী বলতে পারে! খুবই দুর্ভাগ্যজনক।’’

তবে সাগরদিঘির উপনির্বাচনে বাম-কংগ্রেস জোটের কাছে পরাজিত হওয়ার পর ওই ফলাফল নিয়ে শাসক তৃণমূলের অন্দরে কাটাছেঁড়া শুরু হয়ে যায়। সংখ্যালঘু ভোট ত়ৃণমূলের থেকে মুখ ফিরিয়েছে কি না, সে প্রশ্নও উঠতে শুরু করে। সাগরদিঘিতে পরাজয়ের কারণ হিসাবে বাম-কংগ্রেস-বিজেপির ‘অনৈতিক জোট’কে দায়ী করলেও সংখ্যালঘু ভোট হারানোর কারণ জানতে সক্রিয় হন মুখ্যমন্ত্রী। হারের কারণ অনুসন্ধানের পাশাপাশি গোটা বাংলার সংখ্যালঘু মনের খোঁজে কমিটি তৈরি করে দেন মমতা। কমিটিতে রাখা হয় রাজ্যের চার মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী, সাবিনা ইয়াসমিন, আখরুজ্জামান এবং গোলাম রব্বানিকে। রাখা হয় জঙ্গিপুরের বিধায়ক জাভেদ খানকেও। সাগরদিঘির ফলাফলের পর সংখ্যালঘু উন্নয়ন এবং মাদ্রাসা দফতরের দায়িত্বও নিজের হাতে তুলে নিয়েছিলেন মমতা। কিন্তু সাগরদিঘির হার যে তাঁকে কতটা পীড়া দিয়েছে, তা স্পষ্ট হল বৃহস্পতিবার ইংরেজবাজারের সভা থেকে। যখন দু’মাসের পুরনো অভিযোগের পুনরাবৃত্তি করলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূলনেত্রী।

অন্য বিষয়গুলি:

Mamata Banerjee TMC Sagardighi By Election
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy