দলনেত্রী মমতাকে বার্তা মহুয়ার? গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।
নেতাজি ইন্ডোরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে ‘ধমক’ দিয়েছিলেন। তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই নেটমাধ্যমে পোস্ট দিয়ে দলনেত্রীর নির্দেশ পালনের কথা জানালেন কৃষ্ণনগরের সাংসদ মহুয়া মৈত্র। তবে মমতার কথামতো করিমপুরের ব্যাপারে মুর্শিদাবাদের সাংসদ আবু তাহের খানের সঙ্গে যোগাযোগ করার কথা জানিয়েও মহুয়া ওই পোস্টে লিখেছেন, তিনি করিমপুরের বাসিন্দা এবং সেখানেই থাকবেন। এর পরেই জল্পনা শুরু হয়েছে, এ পোস্ট কি দলনেত্রীর নির্দেশকে মান্যতা দেওয়া, না কি মমতাকেই সরাসরি কোনও বার্তা দিতে চাওয়া?
বৃহস্পতিবার তৃণমূলের কর্মসূচিতে মমতার রোষের মুখে পড়েন মহুয়া। বক্তৃতা করার সময় মমতার নজর পড়ে মহুয়ার দিকে। তখনই তিনি বলেন, ‘‘করিমপুর আর মহুয়ার জায়গা নয়। ওটা আবু তাহেরের জায়গা। উনি দেখে নেবেন। তুমি তোমার লোকসভা নিয়ে থাকো।’’
বস্তুত, নিজের লোকসভা কেন্দ্র কৃষ্ণনগরের ‘বেড়া’ ডিঙিয়ে মহুয়া যে অন্যত্রও হস্তক্ষেপ করে থাকেন, এ অভিযোগ তৃণমূলের অন্দরেই ছিল দীর্ঘ দিন ধরে। করিমপুর ভৌগোলিক ভাবে নদিয়া জেলায় হলেও তা লোকসভার বিচারে মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রের অন্তর্ভুক্ত। একটা সময়ে এই করিমপুরেরই বিধায়ক ছিলেন মহুয়া। পরবর্তীতে তিনি করিমপুর বিধানসভা ছেড়ে কৃষ্ণনগর কেন্দ্র থেকে জিতে লোকসভায় যান। লোকসভা ভোটের পর মহুয়াকে কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলার তৃণমূল সভাপতিও করা হয়। যদিও তাতে করিমপুরে মহুয়ার ‘হস্তক্ষেপ’ কমেনি বলেই জেলা তৃণমূলের নেতারা দাবি করেন। বৃহস্পতিবার দেখা গেল সেই অনুযোগ পৌঁছেছে দলনেত্রীর কাছেও। নেতাজি ইন্ডোরের মঞ্চ থেকে সে ব্যাপারেই হস্তক্ষেপ করলেন মমতা, এমনটাই মনে করছেন জেলার তৃণমূল নেতারা।
মমতার ধমকের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মহুয়া নিজের ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন। সেখানে তিনি জানিয়েছেন, ২০১৬ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত বিধায়ক থাকাকালীন তিনি করিমপুরের জন্য কী কী করেছেন। নাতিদীর্ঘ পোস্টে মহুয়া কৃষ্ণনগরের সাংসদ হওয়ার পরেও কী ভাবে এবং কত ভাবে করিমপুরের কল্যাণে কাজ করেছেন তারও উল্লেখ করেছেন। পোস্টের শেষের দিকে মহুয়া সরাসরি জানিয়েছেন, মমতার নির্দেশে তিনি কৃষ্ণনগর লোকসভার অন্তর্গত বিধানসভা কেন্দ্রগুলিতেই আপাতত বেশি সময় দেবেন। তাই করিমপুরের উন্নয়নমূলক প্রকল্প সংক্রান্ত কোনও বিষয়ে প্রয়োজনে মানুষ যেন মুর্শিদাবাদের সাংসদ আবু তাহের খানের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। একে বারে শেষে মহুয়া লিখেছেন, তিনি করিমপুরের ভোটার এবং বাসিন্দা হিসেবে করিমপুরেই থাকবেন।
মহুয়ার পোস্টকে দলনেত্রীর নির্দেশই অক্ষরে অক্ষরে পালন করার প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন তৃণমূল নেতাদের একাংশ। তবে অন্য একটা অংশের মতে, ওই পোস্টকে আপাতদৃষ্টিতে দলনেত্রীর নির্দেশ পালন মনে হলেও, শেষ বাক্যে তিনি যা লিখেছেন তাতে মহুয়া দলনেত্রীকে সরাসরি বার্তাই দিতে চেয়েছেন। কী সেই বার্তা? দলের ওই অংশের মত, মহুয়া যে করিমপুর ছাড়বেন না, শেষ বাক্যে স্পষ্ট তাই।
যদিও মহুয়া-ঘনিষ্ঠদের দাবি, তিনি ফেসবুক পোস্টে কাউকে কোনও বার্তা দিতে চাননি। তিনি শুধু বলতে চেয়েছেন, করিমপুরের কাজ যিনিই করুন, তিনি করিমপুরের ভোটার। সেখানেই তিনি থাকেন। অতএব ভবিষ্যতেও তাঁকে সেখানেই থাকতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy