প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
মধ্যপ্রদেশে মহাকালেশ্বর মন্দির করিডরের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আগামী মঙ্গলবারের সেই কর্মসূচি ঘিরে এখন তুমুল ব্যস্ততা উজ্জয়িনীতে। তবে এই কর্মসূচিকে শুধু মধ্যপ্রদেশে সীমাবদ্ধ না রেখে সব রাজ্যেই তা ছড়িয়ে দিতে চাইছে বিজেপি। সেই মর্মে রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের কাছেও চিঠি এসেছে বলে খবর গেরুয়া শিবির সূত্রে। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, কোথায় এবং কী ভাবে কর্মসূচির আয়োজন করতে হবে, সেখানে কাদের উপস্থিত থাকা জরুরি, চিঠিতে সবই লেখা হয়েছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের পক্ষ থেকে।
গত মাসে মহাকাল করিডরের উদ্বোধনের ঘোষণা করেছিলেন মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চহ্বাণ। দু’টি ধাপে করা হয়েছে করিডরের কাজ। মঙ্গলবার প্রথম পর্যায়ের উদ্বোধনের আয়োজন করা হয়েছে উজ্জয়িনীতে। কর্মসূচির নাম দেওয়া হয়েছে ‘মহাকাল লোক’। দ্বাদশ জ্যোতির্লিঙ্গের মধ্যে একটি হল মহাকালেশ্বর মন্দির। বাকি এগারো কেন্দ্রে ‘মহাকাল লোক’ কর্মসূচির আয়োজন করা হচ্ছে বিজেপির পক্ষ থেকে। রাজ্য বিজেপি সূত্রে খবর, কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এই কর্মসূচিকে জাতীয় চেহারা দিতে চাইছেন। সেই মতোই সব রাজ্যের বিজেপি নেতৃত্বকে নিজ নিজ রাজ্যে উদ্বোধন কর্মসূচির আয়োজন করতে বলা হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৫টায় মহাকালেশ্বর মন্দিরে উপস্থিত হবেন প্রধানমন্ত্রী। করিডর উদ্বোধনের পর কার্তিক মেলার মাঠে তাঁর ভাষণ দেওয়ারও কথা। মোদীর ভাষণ যাতে সব জেলায়, মঠ-মন্দিরে লাইভ সম্প্রচার করা হয়, সেই নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
বিজেপি সূত্রে খবর, মহাকাল মন্দির করিডরকে প্রযুক্তিগত দিক থেকে দেশের আধুনিকতম কেন্দ্র করে তুলতে চাইছে মোদী সরকার। গত ১২ ডিসেম্বর নিজের নির্বাচনী কেন্দ্র বারাণসীতে কাশী বিশ্বনাথ করিডরের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
গেরুয়া শিবির সূত্রে খবর, কেন্দ্রীয় নির্দেশ মেনে রাজ্যের সব জেলার বিভিন্ন শিবমন্দিরে ‘মহাকাল লোক’ কর্মসূচির আয়োজন করা হবে। কর্মসূচিতে আমন্ত্রণ জানানো হবে সাধুসন্তদের। স্থানীয় নেতা-কর্মীরা তো বটেই, দলের জনপ্রতিনিধিদেরও কর্মসূচিতে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। বিজেপির রাজ্য স্তরের এক নেতার কথায়, ‘‘হাতে মাত্র আর তিন দিন রয়েছে। ইতিমধ্যেই দলের সাংসদ-বিধায়কদের বিভিন্ন জায়গায় কর্মসূচি আয়োজনে উদ্যোগী হতে বলা হয়েছে। কর্মসূচিতে যাতে প্রচুর জনসমাগম হয়, তা-ও নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।’’
বিজেপি সূত্রে খবর, রাজ্যে জেতা ৭০টি বিধানসভা এলাকা তো বটেই, বাকি যে সব আসনে কম ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছেন দলীয় প্রার্থীরা, সেখানে কর্মসূচির আয়োজনে বিশেষ ভাবে জোর দেওয়া হচ্ছে। শুধু তা-ই নয়, ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের দিকে নজর রেখে সাংসদদেরও বিশেষ ভাবে উদ্যোগী হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
গেরুয়া শিবিরের একটি অংশের অবশ্য দাবি, সামনেই দীপাবলি। উৎসবের এই মরসুমে দলীয়কর্মীদের চাঙ্গা করে তুলতেই ‘মহাকাল লোক’ কর্মসূচিকে বড় করে আয়োজনের পরিকল্পনা করা হয়েছে। বিজেপির এক নেতার কথায়, ‘‘উৎসবের সময় অনেক নেতা বসে যান। পরিবারের সঙ্গে সময় কাটান। তাঁদের সক্রিয় করে তুলতে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এই ধরনের কর্মসূচি নিয়েই থাকে। সেই কারণেই মহাকাল লোক কর্মসূচির মাধ্যমে জাতীয় স্তরে আলোড়ন তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে।’’
প্রসঙ্গত, গত মাসেই শেষ হয়েছে মহাকাল করিডরের প্রথম পর্যায়ের কাজ। এই মুহূর্তে মন্দির চত্বরটি ২.৮২ হেক্টর এলাকা জুড়ে রয়েছে। ২০২৩ সালের মধ্যে তা ২০.২৩ হেক্টরে গিয়ে দাঁড়াবে। প্রথম ধাপে তৈরি হয়েছে প্রায় ৯০০ মিটার লম্বা একটি করিডোর। সেখানে থিম-পার্ক, ই-ট্রান্সপোর্ট পরিষেবা, হেরিটেজ মল থেকে শুরু করে অনেক স্থাপত্য থাকবে। দ্বিতীয় পর্যায়ে মহারাজওয়াড়া স্কুলভবনকে ঐতিহ্যবাহী ধর্মশালায় রূপান্তরিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে। এ ছাড়া আরও বেশ কিছু পরিকল্পনা রয়েছে সরকারে। যেমন— শিপ্রা নদী ও রুদ্র সাগরের সংযোগস্থল নির্মাণ, হ্রদের সামনের অংশের সৌন্দর্যায়ন, বহুস্তরীয় পার্কিং ব্যবস্থা যেখানে অন্তত সাড়ে তিনশো গাড়ি রাখার জায়গা থাকবে। একটা রেলওয়ে আন্ডারপাস ও রুদ্রসাগরের উপর ২১০ মিটার লম্বা ঝুলন্ত সেতুও বানানোর পরিকল্পনা রয়েছে। সরকারি সূত্রে খবর, রামঘাটের কাছে চোখধাঁধানো ‘লাইট শো’-র ব্যবস্থাও করা হবে। সেই পর্যায়ের কাজ শেষ হতে অবশ্য ২০২৮ সাল পর্যন্ত সময় লেগে যেতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy