শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। —ফাইল চিত্র।
অতিমারির থাবা যথাসম্ভব এড়াতে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা যদি ‘হোম সেন্টার’ বা পড়ুয়াদের নিজের নিজের স্কুলে নেওয়া যেতে পারে, একই ভাবে মাধ্যমিক হতে পারে না কেন?
প্রশ্নটা বেশ কিছু দিন আগেকার এবং মধ্যশিক্ষা পর্ষদের বক্তব্য, প্রত্যন্ত এলাকায় এমন অনেক স্কুল আছে, যেখানে ওই পরীক্ষার পরিকাঠামো গড়ে তোলা মুশকিল। কিন্তু পরীক্ষা যত এগিয়ে আসছে, মাধ্যমিক পরীক্ষাও নিজের নিজের স্কুলে নেওয়ার জোরদার দাবি তুলছেন অভিভাবক এবং শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশ। তাঁদের দাবি, জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা মাধ্যমিক। উচ্চ মাধ্যমিক যদি হোম সেন্টারে হয়, মাধ্যমিক পরীক্ষাও নিতে হবে একই পদ্ধতিতে। এই দাবিতে তার পর্ষদ, শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে চিঠি দিয়েছে বলে জানিয়েছে শিক্ষক সংগঠন।
মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় জানান, হোম সেন্টারে মাধ্যমিক পরীক্ষা নেওয়া অসম্ভব। কারণ, সব স্কুলের পরিকাঠামো সমান নয়। এমন অনেক স্কুল আছে, যেখানে পৌঁছতে হলে দু’টি নদী পেরোতে হয়। গ্রামাঞ্চলের দুর্গম এলাকায় সেই সব স্কুলে মাধ্যমিক পরীক্ষা নেওয়ার পরিকাঠামো তৈরি করা খুবই কঠিন। আগামী ৭ মার্চ শুরু হবে মাধ্যমিক পরীক্ষা। কিছু শিক্ষক ও শিক্ষক সংগঠনের বক্তব্য, এটা ঠিকই যে, মাধ্যমিক পরীক্ষা নেওয়ার মতো পরিকাঠামো রাজ্যের সব স্কুলে নেই। কিন্তু পর্ষদ যথাযথ পরিকল্পনা করে পরিকাঠামো উন্নত করলে এবং প্রশাসনকে কাজে লাগালে মাধ্যমিক পরীক্ষাও হোম সেন্টারে হতে পারে।
পশ্চিমবঙ্গ সরকারি বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির বক্তব্য, পরীক্ষার আয়োজন করা যেতে পারে সব স্কুলেই। ওই সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৌগত বসু জানান, প্রশ্নপত্র থাকে থানায়। যে-স্কুলকে প্রধান কেন্দ্র করা হয়, সেখানে প্রথমে প্রশ্নপত্র আসে থানা থেকে। তার পরে সেই প্রধান কেন্দ্র থেকে প্রশ্নপত্র নিকটবর্তী অন্যান্য স্কুলে পাঠানো হয়। যে-সব প্রত্যন্ত এলাকায় স্কুলের পরিকাঠামো ভাল নয়, সেখানে থানার কাছাকাছি কোনও স্কুলকে প্রধান কেন্দ্র করা যেতে পারে। থানা থেকে সেই প্রধান কেন্দ্রে প্রশ্ন পাঠিয়ে দিলে সেখান থেকে তা পৌঁছে যাবে অন্য স্কুলে। অথবা থানাকেই প্রধান কেন্দ্র করে সেখান থেকে সরাসরি স্কুলে স্কুলে প্রশ্ন পাঠিয়ে দেওয়া যেতে পারে। তবে তার জন্য প্রশাসনকে পুরো ব্যবহার করতে হবে। উচ্চ মাধ্যমিক শুরু হয় বেলা ১০টায়। আর বেলা ১২টায় শুরু হয় মাধ্যমিক পরীক্ষা। তাই মাধ্যমিকের প্রশ্নপত্র প্রতিটি স্কুলে পৌঁছে দেওয়ার জন্য সময় পাওয়া যায় অনেকটাই। সৌগতবাবু বলেন, ‘‘প্রধান কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়িয়ে প্রশাসনকে পুরো কাজে লাগিয়ে হোম সেন্টারে মাধ্যমিক পরীক্ষা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি আমরা। এই নিয়ে পর্ষদ, শিক্ষামন্ত্রী এবং শিক্ষা দফতরকে চিঠি দিয়েছি।’’
অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসেস-এর রাজ্য সাধারণ সম্পাদক চন্দনকুমার মাইতি জানান, মাধ্যমিক পরীক্ষা হোম সেন্টারে হলে ভাল হয়, এমন আর্জি অনেক অভিভাবকেরই। “ভোটের সময় যে-ভাবে প্রশাসনকে ব্যবহার করা হয়, সেই ভাবে মাধ্যমিকের জন্যও যদি প্রশাসনকে কাজে লাগানো যায়, তা হলে হোম সেন্টারে ওই পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব। যে-সব স্কুলের পরীক্ষা নেওয়ার মতো পরিকাঠামো নেই, যেমন পর্যাপ্ত আলো বা পানীয় জলের ব্যবস্থা নেই, সেই সব স্কুলে এখন থেকে মেরামতির কাজ শুরু করলে পরীক্ষার আগে তা শেষ করা অসম্ভব নয়। তা হলে করোনা আবহে পড়ুয়ারা চেনা পরিবেশে জীবনের প্রথম পরীক্ষাটা অনেক স্বস্তিতে দিতে পারবে,” বলেন চন্দনবাবু।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy