ভোটে অনুব্রত মণ্ডলকে নজরবন্দি করল নির্বাচন কমিশন।
বিধানসভার মতোই লোকসভা ভোটেও অনুব্রত মণ্ডলকে নজরবন্দি করল নির্বাচন কমিশন। আগামিকাল সোমবার চতুর্থ দফার ভোটের ১২ ঘণ্টা আগে থেকেই ম্যাজিস্ট্রেট এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর কড়া নজরদারিতে রয়েছেন বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি। তাঁকে মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে দেওয়া হচ্ছে না। ভোট শেষ না হওয়া পর্যন্ত কার্যত তাঁর সমস্ত কার্যকলাপের ভিডিয়োগ্রাফির ব্যবস্থাও করেছে কমিশন। মঙ্গলবার সকাল সাতটা পর্যন্ত তাঁর উপর এই ব্যবস্থা জারি থাকবে। যদিও ঘনিষ্ঠ মহলে অনুব্রত জানিয়েছেন, নজরদারিতে তাঁর কিছু যায় আসে না।
সোমবার চতুর্থ দফায় রাজ্যের আটটি আসনের সঙ্গেই বীরভূমের দুই কেন্দ্র বীরভূম ও বোলপুরের ভোটগ্রহণ। রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতর (সিইও) সূত্রে খবর, জেলার এই দুই আসনের ভোটগ্রহণে অশান্তির আশঙ্কায় অনুব্রত মণ্ডলকে কড়া নজরদারিতে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। মোবাইল ব্যবহারের উপর পুরোপুরি নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। তাঁর সঙ্গে সর্বক্ষণ থাকছেন এক জন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের অফিসার এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা। তিনি কোথায় যাচ্ছেন, কী করছেন, তার পুরোটাই ভিডিয়োগ্রাফি করে রাখার বন্দোবস্ত করা হয়েছে বলেও সিইও সূত্রে খবর। এই নজরদারির পর্ব শেষ হবে মঙ্গলবার সকাল সাতটায়, অর্থাৎ ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া পুরোপুরি শেষ হওয়ার পর।
বিজেপি সহ বিরোধীদের অভিযোগ ছিলই। কিন্তু নজিরবিহীন ভাবে এ বার অনুব্রত মণ্ডলকে নজরবন্দির আর্জি জানিয়ে কমিশনে চিঠি দিয়েছিলেন খোদ ভোটকর্মীরা। শনিবারই রাজ্যের মুখনির্বাচনী আধিকারিক আরিজ আফতাবকে চিঠি লিখে ‘ভোটকর্মী ঐক্যমঞ্চ’-এর তরফে অভিযোগ করা হয়, শাসকদলের হয়ে কাজ করার জন্য তিনি ভোটকর্মীদের হুমকি দিচ্ছেন। এই অবস্থায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন সকলে। তার পর রবিবারই কমিশনের এই দাওয়াই।
আরও পড়ুন: দুষ্টের দমন, শিষ্টের পালনে নারী শক্তির জাগরণ! আবৃত্তিতে নতুন প্রচার ভিডিয়ো প্রকাশ তৃণমূলের
আরও পড়ুন: দিনে ১৮ ঘণ্টা কাজ করেন মোদী, রাহুল ৩ মাস অন্তর বিদেশে ছুটি কাটাতে যান, বললেন অমিত শাহ
কিন্তু নজরবন্দি হোক বা অন্য কিছু, তাতে কি তাঁর কিছু যায় আসে? অনুব্রত বলছেন, ‘না’। সংবাদ মাধ্যমে তিনি বলেছেন, ‘‘নজরবন্দিতে আমার কিছু যায় আসে না। ভোটের দিন আমি বাড়িতেই থাকি।’’
‘পুলিশকে বোমা মারার’ নিদান ছিল অনুব্রতর প্রকাশ্য উস্কানি, হুমকি। সেটা বাদ দিলে তাঁর অধিকাংশ বক্তব্যই রূপকধর্মী। ‘চড়াম চড়াম ঢাক বাজানো’ কিংবা ‘মশারি খাটানো’র মতো মন্তব্যে যে প্রচ্ছন্ন হুঁশিয়ারি বা হুমকি থাকে তা রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করলেও সেটা প্রমাণ করার কোনও উপায় থাকে না। তাই ব্যবস্থা নেওয়াও কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। তবু ২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচনেও তাঁকে নজরবন্দি করেছিল কমিশন। এ বার লোকসভা ভোটেও নকুলদানার দাওয়াই দিয়েছিলেন। তাঁকে শো কজও করেছিল কমিশন। এ বার সেই অনুব্রতকেই নজরবন্দি করল কমিশন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy