বোলপুরের বৈঠকে লকেট চট্টোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র।
সাংগঠনিক বৈঠকে এসে দলের পুরনো কর্মীদের কে, কী করছেন তার খোঁজ নিলেন বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক লকেট চট্টোপাধ্যায়। শুক্রবার প্রথমে বোলপুরে, পরে সিউড়িতে দলের জেলা নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে পঞ্চায়েত ভোটের প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা করেন। পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে লকেট সিবিআই প্রসঙ্গ থেকে মুখ্যমন্ত্রীকে রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য করার প্রস্তাব নিয়ে কটাক্ষ করেন। তার পাল্টা জবাব দিয়েছে তৃণমূলও।
পঞ্চায়েত নির্বাচনে দলের কৌশল কী হবে, সেই নিয়ে এ দিন দুপুরে বোলপুরের বেসরকারি অনুষ্ঠান বিজেপির সাংগঠনিক বৈঠক ডাকা হয়েছিল। বৈঠকে ছিলেন বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়, দুর্গাপুর পশ্চিমের বিধায়ক লক্ষণচন্দ্র ঘড়ুই, বোলপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অষ্টম মণ্ডল সহ রাজ্য ও জেলা নেতৃত্ব। ঘণ্টাখানেকের উপরে চলে বৈঠক। পরে বিকেলে সিউড়িতে জাতীয় সড়ক সংলগ্ন জেলা কার্যালয়েও বৈঠক হয়। লকেট ছাড়াও দুবরাজপুরের বিধায়ক অনুপ সাহা সহ জেলা বিজেপির অন্য কার্যকর্তারা। তবে জেলা সভাপতিকে এ দিন দেখা যায়নি।
জানা গিয়েছে, বৈঠকে দলের মণ্ডল কমিটি গঠনের বার্তা দেন লকেট। দলের পুরনো কর্মীরা এখন কী করছেন, তাঁরা আদৌ দলের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন কিনা, এই সমস্ত নানা খোঁজ নেন। জেলা বিজেপির প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক কালোসোনা মণ্ডলকে লকেট চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করার জন্য অপেক্ষা করতেও দেখা যায়। বৈঠক শেষে লকেট তাঁর সঙ্গে কথাও বলেন। জানা গিয়েছে, কালোসোনা নেত্রীকে জানিয়েছেন, তিনি পদে নেই। তবে দলের হয়ে কাজ করছেন। একে দলের অন্তর্দ্বন্দ্ব মেটানোর চেষ্টা হিসেবে দেখছেন অনেকে। এ দিন নবনিযুক্ত জেলা কমিটির সদস্যদের সঙ্গে পরিচয় বিনিময়ের পাশাপাশি পঞ্চায়েত নির্বাচনে দলের কর্মীদের এখন থেকে সক্রিয় হতে বলা হয়। আবার পুরসভা নির্বাচনে জেলার একাধিক পুরসভায় বিজেপি কেন প্রার্থী দিতে পারেনি, সেই নিয়েও আলোচনা হয় বলে জানা গিয়েছে।
এ দিনের বৈঠক শেষে বোলপুর ও সিউড়িতে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন লকেট। জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের সিবিআই তলব প্রসঙ্গে লকেটের মন্তব্য, ‘‘বালি পাচার, গরু পাচার, পাথর পাচার, ভোট পরবর্তী হিংসা সময়ে অনুব্রত মণ্ডলের শরীর খারাপ হয় না। যখন সিবিআই ডাকে, তিনি উডবার্ন ওয়ার্ডে ভর্তি হন। যে দিন সিবিআই ওঁকে হেফাজতে নিয়ে জেরা করবে, সে দিন মুখ্যমন্ত্রীও ওঁর হাত ছেড়ে দেবেন। কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গিয়েছে যে, কত দিন বাদে তিনি জেলের ভিতরে যাবেন।’’ বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের অন্য রাজ্যের দায়িত্ব পাওয়া প্রসঙ্গে লকেটের মন্তব্য, ‘‘এটা আমাদের কাছে গর্বের বিষয়।’’
রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে আচার্য পদে মুখ্যমন্ত্রীর বসা নিয়েও কটাক্ষ করেন লকেট। দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদকের কথায়, ‘‘একটা বড় দুর্নীতিকে ঢাকার জন্য এই চেষ্টা। রাজ্যপাল থাকলে দুর্নীতি বেরিয়ে আসবে। তাই রাজ্যপালকে সরিয়ে যদি মুখ্যমন্ত্রী আচার্য পথে থাকেন, তা হলে সেগুলি ঢাকা দিতে পারবেন।’’ পাল্টা জবাব দিয়েছে তৃণমূল। রাজ্যের মন্ত্রী তথা বোলপুরের বিধায়ক চন্দ্রনাথ সিংহের মন্তব্য, “পাগলের প্রলাপ বকছেন। আমরা তো দীর্ঘ দিন ধরে দেখে আসছি বিশ্বভারতীর আচার্য হিসেবে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তা হলে রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য পদে মুখ্যমন্ত্রী হলে ক্ষতি কী। বরং আরও কাজে সুবিধা হবে।”
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy