কন্টেনমেন্ট জোনে লকডাউনে কড়া বিধি নিষেধ। ছবি: পিটিআই
কন্টেনমেন্ট জোনে লকডাউনে কতটা কড়াকড়ি হবে, তা নিয়ে ধন্দ রয়েই গেল। কন্টেনমেন্ট এলাকায় আগের মতোই কঠোর লকডাউনের বিধি-নিষেধ চালু করার লক্ষ্যে রাজ্য সরকারের তরফে নির্দেশিকা জারি হয়েছিল। যদিও বুধবার কলকাতা পুরসভার তরফে যা বলা হল, তার সঙ্গে মঙ্গলবার রাজ্যের নির্দেশিকার বয়ানে ফারাক রয়েছে।
কোনও এলাকায় কেউ আক্রান্ত হলে, শুধু মাত্র ওই ঠিকানার বাসিন্দাদের লকডাউনের আওতায় আনতে চায় পুরসভা। অর্থাৎ কোনও পাড়ায় যে বাড়িতে বা কোনও বহুতল কমপ্লেক্সের যে ফ্ল্যাটের বাসিন্দা আক্রান্ত হবেন, শুধু মাত্র তাঁদেরই কড়া নিয়ম মানতে হবে। ওই এলাকার বাকি বাসিন্দাদের চলাফেরায় নিষেধাজ্ঞা থাকছে না। স্বাস্থ্য বিধি এবং দূরত্ব বিধি মানলেই হবে।
ফলে ওই পাড়া বা বহুতল কমপ্লেক্সকে কন্টেনমেন্ট জোনের আওতায় এনে ঘিরে রাখা হবে না। বাসিন্দারা কাজেও যেতে পারবেন। বাজার-হাটও খোলা থাকবে। এমনকি ওই এলাকায় চলবে গাড়িও। কলকাতা প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম এ কথা জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: কলকাতায় ২৫টি কনটেনমেন্ট জোন, উচ্চবিত্ত-মধ্যবিত্ত এলাকাই বেশি
যদিও রাজ্যের মঙ্গলবারের নির্দেশিকায় কড়া লকডাউনের বিষয়টির উল্লেখ ছিল অন্য ভাবে। সরকারি-বেসরকারি অফিস, কারখানা, সমাবেশ, মার্কেট কমপ্লেক্স বন্ধ রাখার কথা বলা হয়েছিল। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাড়ি থেকে বেরনোও নিষেধ ছিল। প্রয়োজনে প্রশাসনের তরফে জরুরি জিনিসপত্র বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার কথাও জানানো হয়েছিল নির্দেশিকায়।
বুধবার ফিরহাদ বলেন, “লকডাউন মানে যে ঠিকানায় বা প্রেমিসেসে কেউ আক্রান্ত হচ্ছেন, শুধুমাত্র সেখানেই লকডাউন হবে। বাদবাকি যে জায়গায় যাঁরা রয়েছেন, সেখানে লকডাউন নয়। রাস্তায় গাড়ি চলবে, গণ পরিবহণ চালু থাকবে। মানুষকে সচেতন হতে হবে। না হলে হাজার চেষ্টা করলেও কিছু হবে না। বাজার না গেলে খাবে কি? বেরতে তো হবেই।”
যদিও তিনি পুলিশকে আরও কড়া হতে বলেছেন। তাঁর কথায়, “কলকাতা পুরসভা থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা জানানো হল। বাকি পুলিশ দেখবে।”
মঙ্গলবার রাজ্য লকডাউন নিয়ে নির্দেশ জারি করলেও, কী ভাবে লকডাউনের নিয়ম বলবৎ হবে, তা জেলার প্রশাসনিক কর্তাদের উপরেই ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। কলকাতার ক্ষেত্রে পুলিশ এবং পুরসভাকেই সিদ্ধান্ত নিতে বলা হয়েছিল।
ফিরহাদ হাকিম বুধবার সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, “অযথা বাড়ি থেকে বেরবেন না। তবে কাজে তো বেরতেই হবে। কিন্তু সাবধানতা নিতে হবেই। কন্টেনমেন্ট মানে জেলে ঢুকিয়ে দেওয়া নয়। যাঁরা কোয়রান্টিনে আছেন তাঁরা বাড়িতে থাকবেন। কিন্তু যাঁরা কন্টেনমেন্ট জোনে থাকবেন তাঁরা তো বেরবেন।”
কিন্তু শেষ পর্যন্ত কলকাতার কন্টেনমেন্ট জোনে কতটা কড়াকড়ি হবে, কী ভাবে নিয়ম মানা হবে, তা এখনও স্পষ্ট হল না স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে। এ দিকে কলকাতায় দৈনিক করোনা আক্রান্ত ক্রমশই বাড়ছে। এদিন রাজ্যের বুলেটিনে জানানো হয়েছে, নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৯৮৬ জন। এযাবৎ একদিনের হিসেবে যা সর্বোচ্চ। মৃত্যু হয়েছে ২২ জনের।
আরও পড়ুন: কন্টেনমেন্ট জোনে লকডাউন থাকবে ৭দিন, বললেন মুখ্যমন্ত্রী
তৃণমূলের একাংশের মতে প্রশাসনিক কর্তারা চেয়েছিলেন, বেশি আক্রান্ত এলাকাগুলোতে কঠোর ভাবেই লকডাউনের নিয়ম মানা হোক। কিন্তু ফিরহাদ হাকিমের মতো রাজনৈতিক নেতাদের অনেকেই মনে করছেন, এই কড়াকড়ির বাড়াবাড়িকে সাধারণ মানুষ ভাল ভাবে নেবেন না।
প্রথমে এলাকাভিত্তিক কন্টেনমেন্ট জোন এবং তার লাগোয়া বাফার জোন ছিল। এর পরে কন্টেনমেন্ট এলাকা হয় রাস্তাভিত্তিক। ওই রাস্তা লাগোয়া অংশে বাফার জোন করা হয়। এখন কন্টেনমেন্ট এলাকা বাড়ি, ফ্ল্যাট বা আবাসনভিত্তিক। ওই এলাকা লাগোয়া বাফার জোন করা হয়েছে।
রাজ্যের নির্দেশিকায় বাফার জোনকে কন্টেনমেন্ট এলাকার অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু কলকাতা পুরসভায় সেই নিয়ম কার্যকর হচ্ছে না। কন্টেনমেন্ট এলাকা বাড়ি, ফ্ল্যাট বা আবাসনভিত্তিক করা হচ্ছে।
ফ্ল্যাটগুলির বাসিন্দারা একই লিফট, পার্কিং লট ব্যবহার করতে পারবেন। তবে সচেতন হতে হবে যাতে সংক্রমণ না ছড়ায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy