তৃণমূল-বিজেপি বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র।
বুধবার বন্ধকে কেন্দ্র করে হিন্দমোটর স্টেশনে উত্তেজনা ছড়াল। সংঘর্ষে মাথা ফেটেছে দুই পক্ষের বিক্ষোভকারীদের। বিজেপি সূত্রে খবর, তাদের দলের সাত-আট জন আহত হয়েছেন। আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য উত্তরপাড়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে খবর। তবে তাঁদের মধ্যে আশঙ্কাজনক অবস্থায় দু’জনকে উত্তরপাড়ার একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে স্থানান্তরিত করা হয়। কিন্তু অবস্থা অবনতি হওয়ায় তাঁদের কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে জানা গিয়েছে। স্থানীয় সূত্রে খবর, দু'জনকে কলকাতা নিয়ে যাওয়া হয়েছে, তাঁদের মধ্যে এক জন উত্তরপাড়া বিজেপি যুব মোর্চার সাধারণ সম্পাদক অক্ষয় বণিক।
বন্ধের দিনে অশান্তি ছড়াল বসিরহাটে। বিজেপির রাস্তা অবরোধকে কেন্দ্র করে বচসা। অভিযোগ, মহিলা কাউন্সিলর সোমা দাস এবং তাঁর অনুগামীরা সেই অবরোধ হটাতে মাঠে নামেন। লাথি মেরে সরিয়ে দেওয়া হয় বিজেপির রাখা চেয়ার। সোমা বসিরহাট পুরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ায়। পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়। পরে বিজেপি নেতৃত্বের তরফে পুলিশের কাছে ইমেল করে অভিযোগ জানানো হয়েছে। বিজেপি নেত্রী অর্চনা মজুমদার এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করে বলেন, ‘‘তৃণমূল পায়ের তলা থেকে মাটি হারিয়েছে। তারা কী করবে বুঝে উঠতে পারছে না। আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির ওপর যে ভাবে তারা আক্রমণ করেছে এবং আমাদের দলীয় পতাকাকে লাথি মেরে অপমান করেছে তার তীব্র ধিক্কার জানাই।’’
সকাল থেকে বন্ধ ঘিরে উত্তেজনা। পুলিশের সঙ্গে বচসা বিজেপি কর্মীদের। মেদিনীপুর সদর শহরে টায়ার জ্বালিয়ে রাস্তায় বিক্ষোভ দেখান বিজেপি সমর্থকেরা। তবে বিজেপির কার্যালয়ের বাইরে পুলিশবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে বলে খবর। মেদিনীপুর শহরে এখনও পর্যন্ত মোট পাঁচ জনকে আটক করেছে কোতোয়ালি থানার পুলিশ। সকাল থেকেই বিজেপি নেতৃত্বেরা দলীয় বন্ধের সমর্থনে বেলদা বাজার এলাকায় রাজ্য সড়ক অবরোধ করেন। যাত্রিবাহী বাস ও গাড়ি আটকাতে শুরু করেন তাঁরা। গাড়ির সামনেও শুয়ে পড়েন বিজেপি মহিলা সমর্থকেরা। তখনই ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছয় বেলদা থানার পুলিশ। বন্ধ সমর্থকদের রাস্তা থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে বচসায় জড়ান পুলিশ আধিকারিকেরা। তবে সব মিলিয়ে মেদিনীপুরে বন্ধের তেমন কোনও প্রভাব পড়েনি। দোকানবাজার, অফিস, স্কুল, কলেজ খোলা, রাস্তায় নেমেছে সরকারি-বেসরকারি বাস।
বন্ধ সফল করতে বুধবার সকাল থেকে পূর্ব মেদিনীপুরের বিভিন্ন জায়গায় পথে নেমেছেন বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা। মিছিল চলছে দিকে দিকে। তেমনই এক মিছিল থেকে স্কুলে যাওয়া ছাত্রীদের চোখরাঙানোর অভিযোগ উঠল এক বিজেপি নেত্রীর বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদলে। গয়েশ্বরী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের রাস্তায় মিছিল বার করেছিল বিজেপি। সেই সময় কয়েক জন ছাত্রী স্কুলে যাচ্ছিল। অভিযোগ, স্কুলে যাওয়ার পথে তাদের বাধা দেন বিজেপি কর্মীরা। স্কুলের ভেতরে ঢুকে ছাত্রীদের ধমক দেওয়ার অভিযোগও ওঠে। স্কুল ছাড়ার সময় বিজেপি পতাকা বেঁধে স্কুল গেট বন্ধ করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে মহিষাদল থানার পুলিশ এসে স্কুল গেট খুলে দিয়েছে।
দক্ষিণ দিনাজপুরের বুনিয়াদপুর পুরসভা এলাকায় বিজেপি এবং তৃণমূলের কর্মীদের মধ্যে ঝামেলা বাধে। দুই সমর্থকদের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়। অভিযোগ, তৃণমূলের মারে এক বিজেপি কর্মীর মাথা ফেটেছে।
বিজেপির ডাকা ‘বাংলা বন্ধ’কে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে মানকুণ্ডু স্টেশনে। রেল অবরোধ করেন বন্ধ সমর্থকেরা। বেশ কিছু ক্ষণ স্টেশনে আটকে পড়ে ডাউন এবং আপ লাইনের ট্রেন। পরে পুলিশ এসে বিক্ষোভকারীদের হটাতে শুরু করে। পুলিশ আসতেই উত্তেজনা ছড়ায়। পুলিশ বিক্ষোভকারীদের সরাতে গেলেই ধুন্ধুমার বেধে যায় দু’পক্ষের মধ্যে। বিজেপি কর্মীদের হটাতে পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করে। ছোড়া হয় কাঁদানে গ্যাসও।
বন্ধের সকালে পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। ঘাটালের সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকায় বন্ধের সমর্থনে বিজেপি একটি মিছিল বার করেছিল। তবে সেই মিছিল আটকে দেয় পুলিশ। পুলিশি বাধা পেয়ে রাস্তাতেই শুয়ে পড়েন বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা। শুরু হয় পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি। পুলিশ বিধায়ক-সহ কয়েক জন বিজেপি বিধায়ককে আটক করে পুলিশ।
বন্ধের সকালে কোচবিহারে বিক্ষিপ্ত অশান্তি ছড়ায়। বিভিন্ন জায়গায় পথে নেমে বিক্ষোভ। পুলিশ সূত্রে খবর, সকাল ১০টা পর্যন্ত বন্ধের দিনে ৩০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছ। তাঁদের মধ্যে দু’জন বিজেপি বিধায়কও রয়েছেন। তুফানগঞ্জের বিধায়ক মালতী রাভা রায় এবং কোচবিহার দক্ষিণের বিধায়ক নিখিলরঞ্জন দে-কে প্রথমে আটক করে পুলিশ, তার পর গ্রেফতার করা হয় তাঁদের।
বন্ধের সকালে ভাটপাড়ায় গুলি চলল। ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে ভাটপাড়ার ঘোষপাড়া এলাকায়। ঘটনায় এক জন আহত হয়েছেন বলে খবর। তাঁকে প্রথমে ব্যারাকপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতাল ও পরে বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন ব্যারাকপুরের প্রাক্তন সাংসদ তথা বিজেপি নেতা অর্জুন সিংহ। তৃণমূলের বিরুদ্ধে বোমা-গুলি চালানোর অভিযোগ তুলেছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘রবি সিংহ নামে আমাদের দলের এক কর্মী আহত হয়েছেন। ওঁরা আমার বাড়ি আসছিলেন। ঘোষপাড়া মোড়ের কাছে তাঁর গাড়ি আটকানো হয়। তার পর গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি চালায় তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা।’’
বুধবার সকালে কালিয়াগঞ্জ শহরের সুকান্ত মোড় থেকে বিবেকানন্দ মোড় পর্যন্ত একটি মিছিল করেন বিজেপি সমর্থকেরা। বিবেকানন্দ মোড়ে কিছু ক্ষণের জন্য পথ অবরোধ করেন তাঁরা। আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখান। পুলিশ এসে তাঁদের সরিয়ে দেয়। তবে বিক্ষিপ্ত কয়েকটি জায়গা ছাড়া কালিয়াগঞ্জ শহরের পরিস্থিতি এখনও পর্যন্ত স্বাভাবিক। কোথাও কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। শহর জুড়ে কড়া পুলিশি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
পুলিশের সামনেই হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়লেন তৃণমূল-বিজেপি কর্মীরা। বন্ধের সমর্থনে বিজেপি কর্মীরা কোন্নগর চলচ্চিত্র মোড়ে জড়ো হন। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের দোকান বন্ধ রাখার জন্য হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। পাল্টা বন্ধের বিরোধিতায় ওই এলাকায় পৌঁছন তৃণমূল কর্মীরা। দুই পক্ষের মধ্যে বচসা, ধস্তাধস্তি শুরু হয়। পরে পুলিশ এসে তাঁদের নিরস্ত করে।
আসানসোলের মহীশিলা কলোনি এলাকায় সংঘর্ষে জড়ালেন তৃণমূল-বিজেপি সমর্থকেরা। সকালে বন্ধ সমর্থকেরা কলোনির বাজার বন্ধ করিয়ে দেন বলে অভিযোগ। পরে তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকেরা পুনরায় বাজার চালু করতে এলে দুই দলের মধ্যে হাতাহাতি বেধে যায়। পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
মাথাভাঙা-কোচবিহার রাজ্য সড়কে এনবিএসটিসির বাসে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ বন্ধ সমর্থকদের বিরুদ্ধে। রাস্তায় বাস-গাড়ি আটকানোর অভিযোগও উঠেছে। বন্ধের বিরোধিতায় কোচবিহারে পাল্টা পথে নেমেছেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। তৃণমূলের জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিকের নেতৃত্বে বিশাল মিছিল শহরের বিভিন্ন বাজার যায়। মাইকিং করে দোকানপাট খুলে রাখার আবেদন করা হয়।
বিজেপির ডাকা বন্ধে পূর্ব মেদিনীপুর জুড়ে যান চলাচল ব্যাহত হয়েছে। বন্ধে হামলার আশঙ্কায় বাস দেখাই যাচ্ছে না রাস্তায়। সকাল থেকে জেলার গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশপথ মেচেদায় পথ অবরোধ করেন বিজেপি কর্মীরা। ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি সামাল দেয় পুলিশ।
অন্য দিকে, বিজেপির পথ অবরোধ ঘিরে উত্তেজনা ছড়ায় এগরাতেও। বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে বচসায় জড়ায় পুলিশ। তবে এখনও পর্যন্ত বড়সড় অশান্তির খবর নেই। হলদিয়া পাঁশকুড়া লাইনের কেশবপুর স্টেশনে বিজেপি কর্মীদের অবরোধের জেরে হাওড়াগামী যাত্রিবাহী ট্রেন আটকে রয়েছে বলেও খবর। জানা গিয়েছে, হলদিয়া শিল্পাঞ্চলে গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকলেও কারখানার কাজ স্বাভাবিক রয়েছে।
হিন্দমোটরের মালির বাগান এলাকার একটি বেসরকারি স্কুলে গিয়ে চড়াও হন বন্ধ সমর্থকেরা। অভিযোগ, তাঁরা এসে স্কুল বন্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা করেন। তাঁদের আটকাতে গেলে বচসায় জড়িয়ে পড়েন অভিভাবকেরা। এক অভিভাবক জানান, বুধবার পরীক্ষা ছিল। কিন্তু কয়েক জন বিজেপি কর্মী এসে জানান, স্কুল হবে না।
কৃষ্ণনগর রেলস্টেশনে অবরোধ। ট্রেনের সামনে বিজেপির পতাকা হাতে দাঁড়িয়ে রয়েছেন বন্ধ সমর্থকেরা।
পুরাতন মালদহে বন্ধকে ঘিরে উত্তেজনা ছড়াল মালদহে। পুলিশের সামনেই বচসায় জড়ালেন তৃণমূল-বিজেপি সমর্থকেরা।
রানাঘাটের বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকারের নেতৃত্বে একাধিক রেলস্টেশনে অবরোধ করেন বন্ধ সমর্থকেরা। পাল্টা তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরাও পথে নেমেছেন। বন্ধের বিরোধিতায় প্রচার চালাচ্ছেন। অভিযোগ, জগন্নাথের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডায় জড়ালেন তৃণমূল কর্মীরা। এক তৃণমূল কর্মীকে চড় মারার অভিযোগ উঠেছে রানাঘাটের বিজেপি সাংসদের বিরুদ্ধে।
মুর্শিদাবাদের বেশ কয়েকটি স্টেশনে রেল অবরোধ বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের। মুর্শিদাবাদ স্টেশনে ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা। বহরমপুরেও প্রভাব পড়েছে যথেষ্ট। বেসরকারি বাস পরিষেবা প্রায় সম্পূর্ণ বন্ধ। সরকারি বাস হাতেগোনা।
বুধবার সকাল থেকেই উত্তেজনা ছড়িয়েছে বালুরঘাট সরকারি বাসস্ট্যান্ডের সামনে। এক দিকে, বন্ধের সমর্থনে যখন বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা পিকেটিং করছেন, তখন বন্ধের বিরোধিতায় পথে নেমেছে তৃণমূলও। দুই দলের সমর্থকদের স্লোগান, পাল্টা স্লোগানে উত্তপ্ত এলাকা। পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়। সরকারি বাস ছাড়লেও বেসরকারি পরিষেবা ব্যাহত হয়েছে বলেই খবর। বন্ধের প্রভাব পড়েছে স্থানীয় বাজারগুলিতেও। বন্ধ দোকানের ঝাঁপ। বালুরঘাটে পুলিশ এখনও পর্যন্ত এক জনকে গ্রেফতার করেছে। অশান্তি ছড়ানোর অভিযোগে বালুরঘাটে বিজেপির টাউন সভাপতি সমীরপ্রসাদ দত্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy