
নেতাজি ইন্ডোরে চাকরিহারাদের সঙ্গে বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: ভিডিয়ো থেকে।
নেতাজি ইন্ডোরে চাকরিহারাদের আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানিয়েছেন, কারও চাকরি যাবে না। আগে রাজ্য সরকারের তরফে রায়ের ব্যাখ্যা চাওয়া হবে সুপ্রিম কোর্টের কাছে। যদি নেতিবাচক উত্তর মেলে, সে ক্ষেত্রে সরকার নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যোগ্য প্রার্থীদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা করে দেবে। যত দিন না সরকারের কাছ থেকে চাকরি থেকে বরখাস্তের নোটিস পাচ্ছেন, তত দিন স্কুলে গিয়ে চাকরিহারাদের স্বেচ্ছা পরিষেবা (ভলান্টারি সার্ভিস) দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন মমতা।
মমতা বলেন, ‘‘আগে যোগ্যদের বিষয়টি মিটে যাক। তার পর যাদের ‘অযোগ্য’ বলা হচ্ছে, তাঁদের বিরুদ্ধে কী কী তথ্য আছে আমি দেখব। আবার আপনাদের ডাকব। সত্যি যদি তাঁরা ‘অযোগ্য’ বলে প্রমাণিত হন, আমার তখন কিছু করার থাকবে না। কিন্তু কাকে কেন অযোগ্য বলা হয়েছে, কে তদন্ত করেছে, আলাদা করে সেটা দেখতে হবে। আলাদা করে সেটা নিয়ে আমি কথা বলব। সকলে নিশ্চিন্তে থাকুন। যোগ্য-অযোগ্যের মধ্যে গোলমাল লাগাবেন না। নিশ্চিন্ত ভাবে আপনারা শিক্ষা দিন, শিক্ষিত করুন।’’
বিকল্প বন্দোবস্তের আশ্বাস দিয়েছেন মমতা। বলেছেন, ‘‘আমরা দু’মাসের মধ্যেই বিকল্প ব্যবস্থা করে দেব। যোগ্যদের কারও চাকরি বাতিল হবে না। মানবিকতার খাতিরে সুপ্রিম কোর্ট আমাদের হাতে যোগ্য-অযোগ্যের তালিকা তুলে দিক। ব্যাখ্যা দিক। শিক্ষাব্যবস্থা ভেঙে দেওয়ার অধিকার কারও নেই।’’
চাকরিহারাদের উদ্দেশে মমতা বলেন, ‘‘আপনারা কি এখনও বরখাস্তের নোটিস পেয়েছেন? চাকরি করুন না। স্বেচ্ছায় সকলেই কাজ করতে পারেন।’’
মমতা জানিয়েছেন, সুপ্রিম কোর্টের কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হবে। তাঁর কথায়, ‘‘আদালতের কাছে আমরা ব্যাখ্যা চাইব। নতুন করে পরীক্ষা নেওয়ার আগে আমাদের জানতে হবে, যাঁরা স্কুলে পড়াতেন, তাঁদের জন্য আদালতের ব্যাখ্যা কী? স্কুল কে চালাবেন? বাকি কাজ কে চালাবেন? কাউকে না খাইয়ে মারার অধিকার তো কারও নেই। চাকরি দিতে পারবেন না, আমার অনুরোধ তাঁরা যেন চাকরি কেড়ে না নেন। শিক্ষা দফতর যা করার করবে।’’
মমতা আরও বলেন, ‘‘যাঁরা যোগ্য, তাঁদের চাকরি নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকারের। কোনও রাখঢাক নেই। আইন অনুযায়ী যা করার করব। পথের মধ্যেই পথ খুঁজে নিতে হবে।’’
মমতা জানান, অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি, কপিল সিব্বল, রাকেশ দ্বিবেদী, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রশান্ত ভূষণ রাজ্য সরকারের হয়ে যোগ্যদের সমর্থনে আইনি লড়াই চালাবেন।
মমতা বলেন, ‘‘আমি বেঁচে থাকতে যোগ্যদের চাকরি কেড়ে নিতে দেব না। এটা আমার চ্যালেঞ্জ। শিক্ষাব্যবস্থাকে ভেঙে দেওয়ার চক্রান্ত চলছে।’’
মমতা বলেন, ‘‘আমি অনেক কথা জেনেও সিপিএমের কারও কোনও চাকরি খাইনি। বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য কেন মামলা করলেন? উত্তর দিতে হবে। সিপিএমকে এর জবাব দিতে হবে।’’
মমতার কথায়, ‘‘চাকরি দেওয়ার ক্ষমতা নেই, চাকরি কাড়ার ক্ষমতা আছে। তাঁদের ধিক্কার জানাই। যাত্রাপালার মাধ্যমে আপনাদের ভুল বোঝাচ্ছে। রাজ্য সরকার অনেক চেষ্টা করেছিল। ২০২২ থেকে নোংরা খেলা শুরু করেছে।’’
চাকরিহারাদের সামনে মমতা বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের রায়ে আমার হৃদয় পাথর হয়ে গিয়েছে। লাল, নীল, গেরুয়া কোনও রং দেখব না। আমাকে জেলে ভরলে ভরুক। যোগ্য ব্যক্তির চাকরি যাতে না যায়, আমরা সেটা সব সময় চাই।’’
নেতাজি ইন্ডোরের মঞ্চে এলেন রাজ্যের চার মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, ফিরহাদ হাকিম, পুলক রায় এবং মানস ভুঁইয়া।
নেতাজি ইন্ডোরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সামনে একে একে দাবি পড়ে শোনালেন চাকরিহারারা। বেশ কয়েকটি দাবি জানিয়েছেন তাঁরা—
মমতার সঙ্গে নেতাজি ইন্ডোরের বৈঠকে রয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু, মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ, সাহিত্যিক আবুল বাশার, কবি সুবোধ সরকার। আরও কয়েক জন সরকারি কর্তা, আইনজ্ঞেরা রয়েছেন।
নেতাজি ইন্ডোরের মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রী বসে আছেন। তাঁর সামনে নিজেদের অবস্থার কথা জানাচ্ছেন চাকরিহারাদের প্রতিনিধিরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy