সিঙ্গুরে এই জমিতেই হবে অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিস পার্ক। নিজস্ব চিত্র
দীর্ঘ দিন সিঙ্গুর প্রসঙ্গে নীরব থাকলেও এ বার নির্বাচনের আগে মমতা ঘোষণা করলেন, সিঙ্গুরে হবে অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রি। যার জন্য দুর্গাপুর এক্সপ্রেস হাইওয়ের পাশে ১১ একর জমিতে কাজ শুরু হয়েছে। আর এ নিয়েই শুরু হয়েছে শাসক বিরোধী তরজা। সেই সময় সিঙ্গুরে জমি অধিগ্রহণে বিরোধিতা করেছিলেন স্থানীয় বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য। সিঙ্গুরে অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রি হবে, এই ঘোষণার পর তিনি খুশি।
শনিবার রবীন্দ্রনাথ বলেন, ‘‘আমরা চেয়েছিলাম রতন টাটা কারখানা করুন। কিন্তু জোর করে পুলিশ দিয়ে অত্যাচার করে জমি নেওয়ার আমরা বিরোধী ছিলাম।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘৬০০ একর জমি ওঁরা পেয়েছিলেন। সেই জমিতে কারখানা করে যদি চাষিদের সঙ্গে সখ্য রাখতেন তা হলে আরও জমি পেতেন।’’
অনেকটা পথ হাঁটতে গেলে যেমন এক দু’পা ফেলে শুরু করতে হয় তেমন এই ১১ একর জমি দিয়ে শুরু করে ভবিষ্যতে সিঙ্গুরেই হয়তো বড় কোনও শিল্পের প্রস্তুতি নেওয়া যাবে। এমনটাই মত রবীন্দ্রনাথের। তিনি বলেন, ‘‘এটাকে অনেকে বলতে পারেন ছোট ব্যাপার। আসলে সেটা নয়, কৃষিভিত্তিক কারখানা করতে চাইছি এটা তো সূত্রপাত। এখানেই থেমে না গিয়ে সামান্য দিয়েই শুরু করতে হবে। এত বড় রাজ্যে এটা হয়তো কিছুই না। একে একে সামান্য দিয়েই আরম্ভ করতে হবে সেটা পরবর্তী কালে বৃহৎ এবং অসামান্য হতে পারে।’’
তাপসী মালিকের বাবা মনোরঞ্জন মালিক বলেন, ‘‘টাটা কারখানা করতে না এলে আমার মেয়েটার ওই পরিণতি হত না। তাকে হয়তো আমাদের হারতে হত না। জোর করে জমি নেওয়ার বিরুদ্ধে আমার মেয়ে আন্দোলন করেছে।’’ তবে সিঙ্গুরে অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রির ঘোষণা নিয়ে মনোরঞ্জন বলেন, ‘‘এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারব না। দিদি যা করবে তা নিয়ে কিছু বলার ক্ষমতা আমার নেই।’’
সিঙ্গুর আন্দোলনের মুখ বেচারাম মান্নাও কৃষিজ শিল্পের হাবকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘মমতা বন্দোপাধ্যায় শিল্পবিরোধী নয়। সেই সময় বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, নিরুপম সেন, গোপাল কৃষ্ণ গাঁধী ও মমতা বন্দোপাধ্যায়ের মধ্যে একটি চুক্তি হয়েছিল। সেই চুক্তি সম্বন্ধে যাঁরা জানেন না, তাঁরা বলতে পারবেন, ওখানে স্পষ্ট বলা ছিল যে, মমতা বন্দোপাধ্যায় শিল্পের পক্ষে। তবে উর্বর জমি জোর করে নেওয়ার বিরুদ্ধে ছিলাম। মমতা বন্দোপাধ্যায় সিঙ্গুরে শুধু জমি ফিরিয়ে দেননি অনেক উন্নয়ন করেছেন।’’
২০০৬ সালে সিঙ্গুরে ৯৯৭ একর জমি অধিগ্রহণ করেছিল তৎকালীন বাম সরকার। চাষিদের মতামতকে গ্রাহ্য না করে কৃষিজমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে সেই আন্দোলন মমতা বন্দোপাধ্যায়কে মুখ্যমন্ত্রী করে বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। ১০ বছর ধরে আইনি লড়াই চলে হাইকোর্ট থেকে সুপ্রিম কোর্টে। সরকারে এসে প্রতিশ্রুতি মতো সিঙ্গুরের জমি ফিরিয়ে দিয়েছিলেন মমতা। ২০১৬ সালে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে জমি ফিরিয়ে দিলেও সেই জমিতে চাষ করতে সমস্যায় পড়েন কৃষক। শিল্প হয়নি। চাষও নেই। এ নিয়ে বিরোধীরা মমতাকে বিঁধতে ছাড়েনি।
আরও পড়ুন: পাণ্ডুয়ার দুই সমবায়ে ম্যানেজারের সই জালের অভিযোগ
আরও পড়ুন: বহির্বিভাগে নেশামুক্তির চিকিৎসা হাওড়া জেলা হাসপাতালে
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy