অভিযোগের ভিত্তিতে যে মামলা হয়েছিল, তার সওয়াল-জবাব শুরু হয়েছে। প্রতীকী ছবি।
রাজা হবুচন্দ্রের পা চর্ম আবরণে ঢাকার ব্যবস্থা করে প্রাণ বেঁচেছিল গোবুর। রক্ষা পেয়েছিল ধরা। কিন্তু ৩২৫ টাকার কালো জুতোটি কার, তা না জানা গেলে বোধহয় রক্ষা নেই।
পূর্ব বর্ধমানের কালনায় এক কবিতাপাঠের আসরে গিয়ে সাধের জুতো জোড়া খুইয়েছিলেন কবি। অভিযোগ, পরে সে জুতোই দেখতে পান প্রাক্তন উপ-পুরপ্রধানের পায়ে। জুতো ফেরত চাওয়া, হুমকি, সমাজমাধ্যমে কটাক্ষের পালার পরে থানায় পৌঁছন দু’পক্ষ। সম্প্রতি জুতো চুরির সেই মামলার সওয়াল-জবাব শুরু হয়েছে কালনা আদালতে। কবি ও নেতা দু’জনেরই দাবি, হোক না ৩২৫ টাকার জুতো, তা উদ্ধারে হাজার-হাজার টাকা খরচ হলেও পিছপা হবেন না তাঁরা।
২০১৫ সালের ২৩ অগস্ট কালনার গোপালবাড়িতে বসেছিল কবিতাপাঠের আসর। ছিলেন পুরসভার প্রাক্তন উপ-পুরপ্রধান সিদ্ধেশ্বর আচার্য এবং কবি মনোরঞ্জন সাহা। কবিতাপাঠ শেষে মনোরঞ্জন দেখেন, তাঁর জুতো জোড়া উধাও। অগত্যা খালি পায়ে বাড়ি ফেরেন। পরিচিতদের কাছে আক্ষেপ করেন, আগের দিনই নদিয়ার এক দোকান থেকে ৩২৫ টাকা দিয়ে জুতোটি কিনেছিলেন। এই ঘটনার দিন চারেক পরে কালনা পুরনো বাসস্ট্যান্ডে তাঁর সঙ্গে তীব্র বাদানুবাদ হয় সিদ্ধেশ্বরের। মনোরঞ্জন অভিযোগ করেন, তাঁর হারিয়ে যাওয়া জুতো দেখেছেন সিদ্ধেশ্বরের পায়ে। কিন্তু সিদ্ধেশ্বর জুতো ফেরাতে নারাজ। নাছোড় কবি সমাজমাধ্যমে লেখেন, ‘কবির জুতো করল চুরি/হাজার ছুতো দিচ্ছে চোর/পথে ঘাটে চর্চা জোর’।
এর পরে কালনা থানায় গিয়ে অশীতিপর সিদ্ধেশ্বরের অভিযোগ, কবিতাপাঠের আসর থেকে ফেরার সময়ে নিজের চটি না পেয়ে, অন্য এক জোড়া জুতো পরে বাড়ি ফিরেছিলেন। ঘটনার দু’দিন পরে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের সামনে তাঁকে জুতো চোর অপবাদ দিয়ে গালিগালাজ করেন মনোরঞ্জন। তাতে তাঁর সম্মানহানি হয়েছে। মনোরঞ্জন পাল্টা অভিযোগ করেন, নিজের জুতো ফেরত চাইলে সিদ্ধেশ্বর প্রমাণ চেয়েছেন, হুমকিও দিয়েছেন। পুলিশকে জুতো ফিরিয়ে দেওয়ার আর্জি জানান তিনি।
পুলিশ জানায়, সিদ্ধেশ্বরের অভিযোগের ভিত্তিতে যে মামলা হয়েছিল, তার সওয়াল-জবাব শুরু হয়েছে। তাঁর আইনজীবী গৌতম মালিক জানান, জুতো নিয়ে ঘটনার সূত্রপাত হলেও, মামলাটি হয়েছে মানহানির। এই মামলায় দোষী প্রমাণ হলে জরিমানা বা কারাদণ্ড অথবা দু’টিই হতে পারে। কবির আইনজীবী পিনাকী রায়ের দাবি, ‘‘বহু মামলা লড়েছি। জুতো নিয়েও যে মামলা গড়াতে পারে, এমন অভিজ্ঞতা প্রথম। জিতলে আমার মক্কেল ক্ষতিপূরণ চেয়ে ফের মামলা করতে পারেন।’’
সিদ্ধেশ্বরের দাবি, ‘‘আমার জামাইয়ের বড় জুতোর দোকান। আমি কিনা ওঁর জুতো চুরি করব! নানা ভাবে অপদস্থ করা হয়েছে আমাকে। পুলিশে যাওয়া ছাড়া উপায় ছিল না।’’ কবির পাল্টা হুঙ্কার, ‘‘মামলা লড়তে গিয়ে ইতিমধ্যে কয়েক হাজার টাকা খরচ হয়েছে। তবে ওঁর পায়ে যে সেই দিন আমারই জুতো ছিল, আদালতে প্রমাণ করে দেব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy