প্রতীকী ছবি।
তার খোঁজ পেতে পেতেও পাওয়া যাচ্ছিল না। বারে বারে বিভ্রান্তির শিকার হতে হচ্ছিল তদন্তকারীদের। অল্প কিছু দিন অন্তর মোবাইল ফোন ও সিমকার্ড বদলে ফেলে তাঁদের বিভ্রান্ত করছিল লস্কর-ই-তইবার জঙ্গি সৈয়দ ইদ্রিস নবি সাব ওরফে মুন্না। এক তদন্তকারী জানান, মুন্না পাঁচ বছর ধরে লস্করের সঙ্গে যুক্ত থাকাকালীন ৩০টিরও বেশি সিম ব্যবহার করেছে।
এটা যে তার বিশেষ কৌশল, গত সপ্তাহে কর্নাটকে এনআইএ-র হাতে মুন্না ধরা পড়ার পরে তদন্তকারীরা তা জানতে পেরেছেন। সিমকার্ড নষ্ট করে দিলেও সে ফোনগুলি নষ্ট করত না। বাসে, ট্রেনে বা জনবহুল স্থানে ইচ্ছে করে সেই সব ফোন ফেলে দিত মুন্না। যাতে গোয়েন্দারা সেই মোবাইল উদ্ধার করে সে-দিকেই নজর দেন। মূলত গোয়েন্দাদের বিভ্রান্ত করতেই এই রাস্তা নিয়েছিল সে। গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, এ ভাবে খানছয়েক মোবাইল ফেলে দিয়েছিল সে। বিভিন্ন লোকের পরিচয়পত্র জমা দিয়ে ওই সব ফোন চালু করা হয়েছিল। সেই সব লোককে এই মামলায় সাক্ষী করা হচ্ছে। মোবাইল নষ্ট না-করে অন্যের ব্যবহারের জন্য সেগুলি ফেলে দেওয়ার অভিসন্ধি নতুন বলেই মনে করছেন তদন্তকারীরা। তাঁদের বক্তব্য, অনেক ক্ষেত্রেই মোবাইলের সূত্র ধরে তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। এ ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছিল, তদন্তকারীদের নজরে থাকা বিভিন্ন ফোন যাঁরা ব্যবহার করছেন, জঙ্গি কার্যকলাপের সঙ্গে তাঁদের কোনও যোগ নেই। ফলে মুন্নার নাগাল পেতে পেতেও পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে অবশ্য ইন্টারনেটের সূত্রে খোঁজ মেলে বাদুড়িয়ার তরুণী জঙ্গি তানিয়া পরভিনের ওই সঙ্গীর।
মঙ্গলবার কর্নাটকের সিরসি থেকে মুন্নাকে গ্রেফতার করে কলকাতার এনআইএ। ট্রানজ়িট রিমান্ডে শুক্রবার তাকে কলকাতায় আনা হয়। তাকে জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচার ভবনের বিচারক। আজ, সোমবার তাকে ফের এনআইএ-র বিশেষ আদালতে তোলা হবে।
আরও পড়ুন: কালী ঠাকুর দেখে ফেরার পথে গাড়ি পুকুরে, এগরায় মৃত ৩
আরও পড়ুন: কংগ্রেসের বার্তা, ফের বাম-বৈঠক কাল
গোয়েন্দারা জানান, গত মার্চে তানিয়া ধরা পড়ার পরেই জানা যায়, লস্করের ওই সদস্যা বিভিন্ন হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে সংগঠনের অন্যদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিল। লস্কর ছাড়াও আল-কায়দা ইন সাব কন্টিনেন্ট (আকিস), জামাতুল মুজাহিদিন, আনসার উল ইসলাম নামে উপমহাদেশে সক্রিয় জঙ্গি সংগঠনগুলিও সেই সব গ্রুপে যুক্ত। তারা চলছিল পাক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের মদতে। ওই গ্রুপ থেকেই নাম মেলে মুন্নার।
গোয়েন্দারা জানান, হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে কর্নাটকের প্রান্তিক এলাকার যুবকদের জেহাদি কাজকর্মে প্ররোচিত করে তাদের লস্করের সদস্য হিসেবে নিয়োগ করাই ছিল মুন্নার মূল দায়িত্ব। তার মোবাইল থেকে বেঙ্গালুরুতে থানা, পুলিশের গাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়ার ঘটনার ছবি ও ভিডিয়ো উদ্ধার করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy