বিক্ষোভ: কুলটি ওয়াগন কারখানার গেটে। নিজস্ব চিত্র
কারখানা শুরুর দু’দিনের মাথায় শ্রমিক-আন্দোলনের জেরে ব্যাহত হয়েছিল উৎপাদন। গত অক্টোবরে সে আন্দোলনে অন্যতম শরিক ছিল তৃণমূল প্রভাবিত শ্রমিক সংগঠন ‘আইএনটিটিইউসি’। ফের বিক্ষোভের জেরে সোমবার উৎপাদন থমকাল পশ্চিম বর্ধমানের কুলটি ওয়াগন কারখানায়। এ বারেও বিক্ষোভের নেতৃত্বে এক তৃণমূল কাউন্সিলর।
কারখানার জেনারেল ম্যানেজার সুশান্ত ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘আগামী নভেম্বরের মধ্যে আমাদের ৪১৫টি নতুন ওয়াগন তৈরি করতে হবে। ১৬৫টি পুরনো ওয়াগন মেরামত করতে হবে। এমন চললে সময়ে সে কাজ শেষ করা সম্ভব নয়।’’
এ দিন সকালে আসানসোল পুরসভার ৬৫ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর আখতার হুসেনের নেতৃত্বে কারখানার সদর দরজায় বিক্ষোভ শুরু করেন কারখানার ঠিকাদার সংস্থা থেকে সদ্য কাজ হারানো কিছু শ্রমিক। বিক্ষোভে কোনও রাজনৈতিক পতাকা ছিল না। আখতার হুসেনের দাবি, ‘‘কারখানার নতুন ঠিকাদার প্রায় ৭০ জন পুরনো শ্রমিককে ছাঁটাই করেছেন। দু’মাসের বেতন মিটিয়ে পুরনোদের কাজে বহাল না করলে, উৎপাদন চালু করা যাবে না।’’
কারখানা কর্তৃপক্ষ জানান, তাঁরা নির্দেশ দিলেও আগের ঠিকাদার সংস্থা শ্রমিকদের ভবিষ্যনিধি ও ইএসআই প্রকল্পের টাকা জমা দেয়নি। কারখানা কর্তৃপক্ষ অন্য ঠিকা সংস্থাকে নিয়োগ করেন। নতুন সংস্থা পছন্দমতো শ্রমিক রেখেছে। তাতে কারখানা কর্তৃপক্ষের কিছু করার নেই। এ দিন নতুন সংস্থার কাজ শুরু করার কথা ছিল।
অভিযোগ, এ দিন ওই ঠিকাদার সংস্থার কর্মীরা কাজে যোগ দিতে এলে বিক্ষোভকারীরা তাঁদের বাধা দেন। মারধরের হুমকি দিয়ে বাড়ি চলে যেতে বলা হয় শ্রমিকদের। কারখানা কর্তৃপক্ষের দাবি, বিক্ষোভকারীদের আলোচনায় বসতে বলেও লাভ হয়নি। কারখানার মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক কে চন্দ্রশেখর বলেন, ‘‘কাকে কাজে রাখা হবে, তা ঠিকাদারের বিষয়। আমাদের তরফে শ্রমিকদের টাকা বকেয়া নেই।’’
২০১০ সালের ৩০ অক্টোবর কারখানাটির শিলান্যাস করেছিলেন তৎকালীন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০১৬-র অক্টোবরে স্থানীয়দের নিয়োগের দাবিতে বিক্ষোভের জেরে তিন দিন উৎপাদন ব্যাহত হয়। শেষমেশ তৃণমূল নেতাদের হস্তক্ষেপে বিক্ষোভ ওঠে। এ দিনের ঘটনা শুনে তৃণমূলের জেলা শিল্পাঞ্চল সভাপতি ভি শিবদাসন বলেন, ‘‘দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ, কারখানা বন্ধ করে জঙ্গি-আন্দোলন চলবে না। আখতারকে ডেকে পাঠানো হচ্ছে। ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ যা শুনে আখতারের প্রতিক্রিয়া, ‘‘শ্রমিক-স্বার্থেই এই আন্দোলন। দলের নেতাদের সেটা বোঝাবো।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy