কুমারী-পুজো: বেলুড় মঠে মহাষ্টমীর সকালে। ছবি: রণজিৎ নন্দী
ঐতিহ্য মেনে এ বারেও মহাষ্টমীর সকালে বেলুড় মঠে সাড়ম্বরে কুমারী পুজো অনুষ্ঠিত হল। এ বছর কুমারীকে পুজো করা হয় ‘সুভগা’ রূপে। তা দেখতে রবিবার ভোর থেকেই মঠে ভিড় জমিয়েছিলেন অসংখ্য ভক্ত।
বেলুড় মঠ সূত্রের খবর, এ বছর কুমারী পুজোর জন্য আড়িয়াদহের বাসিন্দা দেবাশিস ভট্টাচার্য ও জোনাকি ভট্টাচার্যের কন্যা আরাধ্যা ভট্টাচার্যকে নির্বাচন করা হয়েছিল। তার বয়স পাঁচ বছর ন’মাস ছ’দিন। এ দিন সকাল ৯টা নাগাদ বেলুড় মঠের মূল মন্দিরের পাশে তৈরি অস্থায়ী মণ্ডপে দুর্গাপ্রতিমার সামনে বেনারসি শাড়ি পরা, সালঙ্কারা কুমারীকে নিয়ে আসেন সন্ন্যাসীরা। সেখানেই হয় তার পুজো। ভোরে শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণের ঘরে মঙ্গলারতির পরে সাড়ে ৫টা নাগাদ মহাষ্টমীর পুজো শুরু হয়। কুমারী পুজোর পরে চলে সন্ধিপুজো।
রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের সাধারণ সম্পাদক স্বামী সুবীরানন্দ জানান, ধর্ম বা আধ্যাত্মিকতা, শিক্ষা আর কৌতূহল— মূলত এই তিনটি কারণে মানুষ বেলুড় মঠে কুমারী পুজো দেখতে আসেন। এর মধ্যে প্রথমটির আকর্ষণই বেশি। পুজো করার জন্য কুমারী নির্বাচন হয় কী ভাবে? ‘‘কুমারী নির্বাচনের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট বয়সের মাপকাঠি রয়েছে। তার পাশাপাশি বিশেষ কয়েকটি লক্ষণও দেখা হয়। রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের প্রেসিডেন্ট নিজে প্রতি বছর কুমারী নির্বাচন করেন,’’ বলেন স্বামী সুবীরানন্দ।
১৯০১ সালে বেলুড় মঠে দুর্গাপুজোর সূচনা করেছিলেন স্বামী বিবেকানন্দ স্বয়ং। সেই বছরেই শুরু হয়েছিল কুমারী পুজো। স্বামী সুবীরানন্দ জানান, এক দিন বেলুড় মঠে বেলগাছের তলায় বসে স্বামী বিবেকানন্দ দেখেন, নৌকা থেকে নেমে মা দুর্গা বেলুড় মঠে প্রবেশ করছেন। তার পরে স্বামীজি তৎকালীন সঙ্ঘ প্রেসিডেন্ট স্বামী ব্রহ্মানন্দের কাছে মঠে দুর্গাপুজোর ইচ্ছা প্রকাশ করেন। স্বামী ব্রহ্মানন্দও তাঁকে জানান, তিনিও মা দুর্গাকে বেলুড় মঠে প্রবেশ করতে দেখেছেন। তার পরেই মঠে দুর্গাপুজোর সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু অল্প সময়ে কোথায় প্রতিমা মিলবে, তা নিয়ে সংশয় দেখা দেয়। এক সন্ন্যাসী কুমোরটুলিতে গিয়ে প্রতিমার খোঁজ করেন। কিন্তু কুমোরটুলির কোনও শিল্পীই নতুন করে প্রতিমা গড়তে রাজি হলেন না। তখন এক শিল্পী ওই সন্ন্যাসীকে জানান, সেই বছর তাঁর তৈরি সব প্রতিমার মধ্যে যেটি সব চেয়ে সেরা, সেটি এক ব্যক্তি বায়না করে গিয়েছেন। তিনি যদি শেষ পর্যন্ত না-নেন, একমাত্র তা হলেই প্রতিমাটি বেলুড় মঠকে দেওয়া সম্ভব। কয়েক দিন পরেই জানা যায়, ওই ব্যক্তি প্রতিমাটি নিচ্ছেন না। তখন সেই প্রতিমা বেলুড় মঠে এনে পুজো করা হয়। প্রথম বছরের পুজোয় মঠে উপস্থিত হয়েছিলেন মা সারদা। পুজোর সঙ্কল্প হয়েছিল তাঁরই নামে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy