ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর জট ছাড়াতে কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন দফতরের প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়ের সঙ্গে দেখা পর্যন্ত করতে এত দিন ঘোর আপত্তি ছিল রাজ্য সরকারের। বাবুলকে ‘হাফমন্ত্রী’ আখ্যা দিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করাটাই গুরুত্বপূর্ণ নয় বলে বার্তা দিয়েছিলেন রাজ্যের নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম (ববি)। এ বার সেই রাজ্য সরকারই সহযোগিতার পথে হাঁটছে বলে বৃহস্পতিবার দাবি করেছেন বাবুল। পুনর্বাসন নিয়ে দত্তাবাদে যে সমস্যায় আটকে ছিল প্রকল্প, এ দিন তা মেটার ইঙ্গিত মিলেছে নগরোন্নয়নমন্ত্রীর কথাতেও। পাশাপাশি, এ দিনই রেলের সহযোগী সংস্থা রাইট্স বিবি গাঙ্গুলি স্ট্রিট থেকে রাজ্য সরকারের প্রস্তাবিত বিকল্প মেট্রো-রুটের নকশা নিয়ে একটি অন্তবর্তী রিপোর্ট জমা দিয়েছে। অনেকের মতে, জট ছাড়ানোর পক্ষে তা আশাব্যঞ্জক। তবে রিপোর্টটি আদালতে জমা পড়ার আগে এ দিন কেউ প্রকাশ্যে মুখ খোলেননি।
ইস্ট-ওয়েস্ট সমস্যার নিষ্পত্তিতে সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতিনিধি রেখে একটি কমিটি গড়ে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। আগামী ২৮ জানুয়ারি সেই কমিটির বৈঠক। সেখানে আলোচনার ভিত্তিতে কমিটির রিপোর্ট হাইকোর্টে জমা পড়লে আদালত এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে। তার আগে এ দিন বাবুল বলেন, “ববিদা ও সুজিতদা (সল্টলেক এলাকার বিধায়ক সুজিত বসু) সব রকম সহযোগিতা করছেন। আশা করছি, জট খুলে যাবে।” এমনকী, আর তিন বছরের মধ্যে হাওড়া ও সল্টলেককে যুক্ত করার এই মেট্রো প্রকল্প চালু করা যাবে বলেও এ দিন বাবুল আশা প্রকাশ করেন। “উন্নয়নের প্রশ্নে রাজ্য সরকারের সঙ্গে ডুয়েটে কেন্দ্রের আন্তরিকতায় খামতি নেই” দাবি করে বাবুল এ-ও বলেন, “২০১৮ সালে এই মেট্রোর উদ্বোধনে আমরা কিন্তু তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যয়কে ডাকতে কসুর করব না। তখন যদি তিনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী না-ও থাকেন, তাঁর সহযোগিতার ভূমিকা আমরা ভুলব না।”
কয়েক মাস বাদে কলকাতায় পুরভোটের আগে রাজ্য সরকারকে এই শংসাপত্র দিয়ে বাবুল কার্যত তৃণমূলের কোর্টে বল ঠেলে দিলেন বলেই মনে করা হচ্ছে। ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর জট খুলে গেলে এর ফলে বাবুল তথা কেন্দ্রের বিজেপি সরকার তার কৃতিত্ব দাবি করতে পারবে। আবার রাজ্য কোনও ভাবে বেঁকে বসলে বা প্রত্যাশাপূরণে ব্যর্থ হলে তার দায় পড়বে রাজ্যের ঘাড়েই। এ দিন বিকেলে নগরোন্নয়ন ববি হাকিমের কণ্ঠেও ছিল সদর্থক সুর। সল্টলেকের দত্তাবাদে উচ্ছেদ হওয়া কয়েকটি পরিবারের পুনর্বাসন-প্রসঙ্গে ববি বলেন, “কলকাতা মেট্রো রেল কর্পোরেশনের কয়েক জন কর্তার (যাঁরা এই প্রকল্পটির দায়িত্বে) সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। দত্তাবাদ নিয়ে কোনও সমস্যা হবে না।”
অন্য দিকে, এ দিন কেএমআরসি, রাজ্য সরকার, কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন দফতর এবং কেন্দ্রীয় রেল বোর্ডের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে নতুন রুটের ভাল-মন্দ বিশ্লেষণ করে রাইট্স। ইস্ট ওয়েস্ট মেট্রোর রুট বিবি গাঙ্গুলি স্ট্রিট, মহাকরণ হয়ে ব্রেবোর্ন রোড, স্ট্র্যান্ড রোড থেকে হাওড়া স্টেশন যাওয়া নিয়েই ছিল সমস্যা। স্থানীয় বাসিন্দাদের ওই পথ থেকে সরাতে না-পারায় সমস্যার সূত্রপাত। বিকল্প প্রস্তাবে রাজ্য সরকার হাওড়া থেকে মহাকরণের কাছে লালদিঘির পাশে মিনিবাস স্ট্যান্ড থেকে ধর্মতলা, রাজা সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার হয়ে শিয়ালদহের দিকে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছে। রাইট্স এই রুটটিই বিশ্লেষণ করে অন্তবর্তী রিপোর্ট জমা দিয়েছে। রাজ্যের তরফে এক কর্তার দাবি, “বিকল্প রুটে কাউকে উচ্ছেদ করতে হবে না। বৌবাজার, ব্রেবোর্ন রোডের মতো গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা দীর্ঘদিন বন্ধ রাখারও ঝক্কি নেই। মাটির তলার লাইন নিয়েও সমস্যা অনেক কম হবে।” তবে এ নিয়ে কেউ এ দিন প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy