সুপুরুষ চেহারার যুবককে দেখে প্রেমে পড়ে গিয়েছিলেন বছর ত্রিশের তরুণী। তার পরে বিয়ে এবং কন্যার জন্ম। গত চার বছর এ ভাবেই চলছিল। সোমবার সকালে আচমকা এক মুহূর্তে বদলে গেল জীবন। তরুণী জানতে পারলেন, তাঁর স্বামী এক জন প্রতারক। বর্তমানে এক সঙ্গিনীকে নিয়ে গরফা থানা এলাকায় বসবাস করছেন। ওই তরুণীর অভিযোগের ভিত্তিতে প্রতারক স্বামী এবং সঙ্গিনীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতের নাম ট্রয় চক্রবর্তী। তদন্তে জানা যায়, একাধিক বিয়ে এবং প্রতারণায় অভিযুক্ত ওই যুবক।
পুলিশ সূত্রের খবর, গরফার বাসিন্দা ওই তরুণী এ দিন বিধ্বস্ত অবস্থায় থানায় পৌঁছন। পুলিশকে জানান, ভালবেসে তিনি ট্রয় চক্রবর্তী নামে এক যুবককে বিয়ে করেন। বিয়ের সময়ে জানতেন, স্বামী পুলিশের ‘আইবি’তে কাজ করে এবং কর্মসূত্রে তাকে ঘুরে বেড়াতে হয়। বিয়ের পরে তাই তিনি বাপের বাড়িতেই থাকতেন। প্রথম দিকে স্বামী তাঁর সঙ্গে থাকলেও পরে প্রায়ই ট্রয় চলে যেত। পুলিশকে তরুণী জানান, প্রথম দিকে ফোনে যোগাযোগ থাকলেও সম্প্রতি তা-ও কমে আসছিল। ফোন করলেও স্বামী ধরত না। তরুণীর দাবি, সন্দেহ হওয়ায় খোঁজখবর নিয়ে তিনি জানতে পারেন গরফা থানা এলাকায় তাঁর স্বামী আর এক মহিলাকে নিয়ে থাকছে। এর পরে তিনি আর দেরি করেননি।
পুলিশের এক কর্তা জানান, স্বামীর ঠিকানা জোগাড় করে সোমবার সকালে গরফা থানার নন্দীবাগানের সেই ফ্ল্যাটে যান ওই তরুণী। দেখেন, কমবয়সী, সুন্দরী এক মহিলাকে নিয়ে সেই ফ্ল্যাটেই রয়েছে তাঁর স্বামী। স্ত্রীকে দরজার বাইরে দেখে ট্রয় চমকে যায়। অভিযোগ, এর পরেই স্ত্রীকে মারধর করে, ঠেলে ফেলে পালায় সে। ওই তরুণী হাজির হন থানায়। সবিস্তার সব কিছু জানিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন।
এর পরেই বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে গরফারই একটি জলা-জঙ্গল থেকে ট্রয়কে গ্রেফতার করে পুলিশ। ওই যুবকের পকেটে রিভলভারের গুলি দেখে সন্দেহ বাড়ে তদন্তকারীদের। ট্রয়কে সঙ্গে নিয়েই পুলিশ হানা দেয় নন্দীবাগানের ফ্ল্যাটে। সেখানে মেলে গুলিভর্তি রিভলভার। এমনকী তার সঙ্গিনীর ব্যাগে উদ্ধার হয় ‘আইবি’র স্ট্যাম্প মারা একটি রসিদ বই।
পুলিশের এক কর্তা জানান, জেরায় ট্রয় জানিয়েছে, সে পুলিশে কাজ করে না। সে আলিপুর কোর্টের আইনজীবী। কিন্তু কোনও কথাই বিশ্বাসযোগ্য মনে না হওয়ায় তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশ জানতে পারে, ট্রয় চক্রবর্তীর আরও কয়েকটি বিয়ে রয়েছে। শুধু তা-ই নয়, বোলপুর, বহরমপুর থেকে শুরু করে একাধিক জায়গায় তার নামে প্রতারণার অভিযোগও রয়েছে। এক পুলিশকর্তা জানান, বেশ কয়েক বছর আগে রাজ্যের এক প্রভাবশালী নেতার নাম করে প্রতারণার অভিযোগে বোলপুর পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছিল।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, শুধু একাধিক বিয়ে নয়, নিজেকে ‘আইবি’র লোক বলে পরিচয় দিয়ে ট্রয় ও তার সঙ্গিনী ভয় দেখিয়ে তোলা তুলত। সেই কারণেই সঙ্গে রিভলভার, ‘আইবি’র রসিদ বই ও হাতকড়া রাখত সে। বেআইনি অস্ত্র রাখা এবং প্রতারণার অভিযোগে এ দিন ট্রয় ও তার সঙ্গিনীকে গ্রেফতার করা হয়। আজ, মঙ্গলবার তাদের আদালতে পেশ করা হবে বলে জানায় পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy