ধাপার অনুষ্ঠানে সাপ আটকাতে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থাই করেছিলেন পুর-কর্তৃপক্ষ। কিন্তু ঝুলি থেকে আর একটি সাপ বার করে দিলেন রাজ্যের প্রবীণ মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। ধাপায় তিন কোটি গ্যালন ক্ষমতা সম্পন্ন জল-প্রকল্পের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে সুব্রতবাবুর আহ্বান: “জল খান, আর আগামী দিনে ভোট দিন।”
এ দিন ধাপায় জল-প্রকল্পের সূচনা করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফের জানিয়ে দেন দেশের অন্য শহরে জলের জন্য কর নেওয়া হলেও তাঁর সরকার একটি পয়সাও নেবে না। এ প্রসঙ্গে তিনি জানান, ২০০০ সালেও জলকর না নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। কলকাতার মানুষের স্বার্থে এখনও সেই নীতি বজায় রেখেই চলতে চান। যা শুনে পুরসভার এক মেয়র পারিষদের বক্তব্য, “সে বার তো মেয়র সুব্রত মুখোপাধ্যায় জলকর বসানোর জন্য প্রস্তুত হয়েই ছিলেন। পুর-বাজেটেও সে ব্যাপারে কাগজপত্র তৈরি হয়ে গিয়েছিল। পরে দলনেত্রী মমতার কথায় পিছু হটতে হয় মেয়রকে।”
এ দিন অবশ্য সেই সুব্রতবাবুই বললেন, “এক সময়ে জলের সমস্যা ছিল কলকাতায়। পরে তা বাড়ানো হয়েছে। কষ্ট হলেও মমতার নির্দেশ ছিল, জল দেবেন। কিন্তু পয়সা নেবেন না।” ওই নির্দেশ মতোই বিনা করে জল দেওয়া চলছে। সুব্রতবাবুর দাবি, পৃথিবীতে একমাত্র মমতাই জলকর নিতে চান না। নিতে দেনও না।
টালা-পলতা, গার্ডেনরিচের সঙ্গে এ বার ধাপার জল-প্রকল্প যুক্ত হল। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “ছোট থেকে শুনছি আনন্দপুর, তিলজলা, তপসিয়ার মানুষ জল পায় না। সেখানে জলসঙ্কট রয়েছে।” ক্ষমতায় এসেই তাই ধাপা-প্রকল্প দ্রুত করার উপরে জোর দেওয়া হয়। তিনি জানান, ১৫-২০ দিনেই বেলেঘাটা থেকে গড়িয়া-যাদবপুরের অনেক বাসিন্দাই ধাপার সরবরাহ করা পরিশোধিত জল পাবেন।
পুরসভা সূত্রের খবর, জল-প্রকল্প চালু হলেও মানুষের ঘরে ঘরে তা পৌঁছতে এখনও মাস খানেক সময় লাগতে পারে। প্রথমে কলকাতা পুরসভার ১০৭ এবং ১০৮ নম্বর ওয়ার্ডের কিছু এলাকায় জল সরবরাহ শুরু হবে। পরে তা ১০১-১০৬ এবং ১০৯ ও ১১০ নম্বর ওয়ার্ডে পৌঁছবে। এ ছাড়া ৫৭ ও ৫৮ নম্বর ওয়ার্ডে যাঁরা এতকাল গভীর নলকূপের জল খেতেন, তাঁরাও ধাপার পরিশোধিত জল পাবেন বলে পুরসভার দাবি।
বাম বোর্ডের আমলে ওই প্রকল্পটির শিলান্যাস করেছিলেন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতিবসুর নামে ওই প্রকল্পের নামকরণও হয়েছিল। তবে বর্তমান পুরবোর্ড ওই নাম বাতিল করে দিয়েছে। এ দিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “কানন (মেয়রের ডাক নাম) আমাকে নামকরণের জন্য বলে। ওকে বলি সামনেই জানুয়ারি মাস, নেতাজির জন্ম মাস। নাম হোক জয়হিন্দ জলাধার প্রকল্প। এর চেয়ে ভাল আর কিছু হতে পারে না।” নামকরণ নিয়ে সুব্রতবাবুর বক্তব্য, “সঙ্কীর্ণ রাজনীতির উর্ধ্বে গিয়ে এমন নামকরণ করা হয়েছে। কারও কোনও আপত্তি থাকবে না।”
ধাপার জল-প্রকল্পের মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী মৎস্য দফতরের উদ্যোগে তৈরি ক্যাপ্টেন ভেড়ির সৌন্দর্যায়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। তখন সেখানে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ। তিনি জানান, প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা ব্যয়ে ওই প্রকল্প গড়ে তোলা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy