Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪

কুয়োয় পড়ে যুবকের মৃত্যু সেলিমপুরে

স্থানীয় সূত্রে খবর, বাড়িতে বাবা, মা, স্ত্রী, ভাই, ভ্রাতৃবধূ, ভাইঝিকে নিয়ে যৌথ পরিবারে থাকতেন আশিসবাবু। তাঁর ভ্রাতৃবধূ সুদেষ্ণা ঘোষ এ দিন জানান, আশিসবাবু প্রাইভেট টিউশন করতেন। একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন।

অঘটন: এই কুয়োতেই মেলে আশিসবাবুর দেহ। নিজস্ব চিত্র

অঘটন: এই কুয়োতেই মেলে আশিসবাবুর দেহ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০১৭ ০০:৫৭
Share: Save:

শৌচাগারে যাওয়ার জন্য কুয়ো থেকে জল তুলতে গিয়েছিলেন সেলিমপুর লেনের এক বাসিন্দা। তখনই তিনি দেখতে পেলেন, জলে ভাসছে প্রতিবেশীর দেহ! তাঁর চিৎকারে ছুটে আসেন প্রতিবেশীরা। পরে পুলিশ এসে জল থেকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে ওই ব্যক্তিকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।

মৃতের নাম আশিসকুমার ঘোষ (৪৬)। বা়ড়ি সেলিমপুর লেনে। পুলিশ জানায়, শুক্রবার বেলা ১১টা নাগাদ বাড়ির পাশের একটি কুয়ো থেকে তাঁর দেহ মেলে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন তিনি। তবে আশিসবাবু নিজে ‘ঝাঁপ’ দিয়েছিলেন নাকি চোখে দেখতে না পেয়ে কুয়োয় পড়ে গিয়েছিলেন, তা স্পষ্ট হয়নি।

এই ঘটনায় রাত পর্যন্ত কোনও অপরাধের যোগসূত্র মেলেনি। মৃতের পরিবারের তরফে কোনও অভিযোগও দায়ের হয়নি।

স্থানীয় সূত্রে খবর, বাড়িতে বাবা, মা, স্ত্রী, ভাই, ভ্রাতৃবধূ, ভাইঝিকে নিয়ে যৌথ পরিবারে থাকতেন আশিসবাবু। তাঁর ভ্রাতৃবধূ সুদেষ্ণা ঘোষ এ দিন জানান, আশিসবাবু প্রাইভেট টিউশন করতেন। একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। গত ফেব্রুয়ারি মাসে তাঁর স্ত্রী জয়ন্তী ঘোষের কি়ডনির অসুখ ধরা পড়ে। তার ফলে আশিসবাবু কিছুটা মনোকষ্টে ভুগতে শুরু করেন। ছোটবেলা থেকেই চোখের সমস্যায় ভুগতেন তিনি। সম্প্রতি

তাঁর চোখের সমস্যা বেড়ে দৃষ্টিশক্তি কার্যত নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। অস্ত্রোপচার করেও তা ফেরানো যায়নি। তার পর থেকেই মানসিক অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন তিনি। মাঝেমধ্যেই আত্মহত্যার কথাও বলতেন।

সুদেষ্ণাদেবী জানান, এ দিন সকাল পৌনে দশটা নাগাদ পরিবারের সবাই এক সঙ্গে বসে জলখাবার খান। তার পর আশিসবাবুর ভাই অলোক কাজে বেরিয়ে যান। সুদেষ্ণাও কাছেই বাপের বাড়ি গিয়েছিলেন। সেই সময় স্ত্রীকে ‘বাড়ির সামনে হাঁটাহাঁটি করছি’ বলে বাড়ি থেকে বেরোন আশিসবাবু। পরে না ফেরায় খোঁজ শুরু হয়। সে সময়ই স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় নামে এক প্রতিবেশী আশিসবাবুর দেহটি দেখতে পান।

পুলিশ সূত্রের খবর, স্বপনবাবুদের বাড়ি সারানো হচ্ছে। ফলে সেখানে কেউ থাকেন না। বাড়ি সারানোর মিস্ত্রিরা এ দিন সকালে জলখাবার খেতে বেরিয়েছিলেন। সে সময়ই এই ঘটনা ঘটে। পরে বাড়ির কাজ দেখতে এসে শৌচাগারে যাওয়ার জন্য জল তুলতে গিয়েছিলেন স্বপনবাবু। তখনই আশিসবাবুর ঘটনাটি জানাজানি হয়। কী ভাবে আশিসবাবু কুয়োয় প়ড়লেন তা যেমন স্পষ্ট নয়, তেমনই ভারী চেহারার আশিসবাবু কুয়োয় পড়ে গেলেও তার শব্দ কেউ শুনতে পেল না কেন, সে প্রশ্নের উত্তরও খুঁজছেন তদন্তকারীরা।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE