Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

এ ছাড়া উপায় ছিল না, মত ‘তেজস্বিনীদের’

পেশায় শারীরবিদ্যার শিক্ষিকা, স্নিগ্ধা মণ্ডল বলেন, ‘‘পুলিশের হাত থেকে অস্ত্র ছিনিয়ে নিয়ে অভিযুক্তেরা পালানোর চেষ্টা করতে গিয়েছিল বলে যদি পুলিশ ‘এনকাউন্টার’ করে থাকে তা হলে পুলিশ ঠিকই করেছে বলে মনে করি।’’

একা: শহরের রাত-পথে। সল্টলেক সেক্টর ফাইভে। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

একা: শহরের রাত-পথে। সল্টলেক সেক্টর ফাইভে। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

দীক্ষা ভুঁইয়া
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৪:২৪
Share: Save:

পথেঘাটে বিপদে পড়লে আত্মরক্ষা করবেন কী ভাবে, দিন কয়েক আগেই তার পাঠ নিয়েছিলেন এক দল তরুণী। কলকাতা পুলিশের আয়োজিত ওই শিবির তাঁদের অনেক আত্মবিশ্বাসী করে তুলেছে বলে জানিয়েছিলেন ওই ‘তেজস্বিনী’রা। হায়দরাবাদের পশু চিকিৎসক তরুণীকে গণধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় ইতিমধ্যে উত্তাল হয়েছে দেশ। শুক্রবার সকালে পুলিশের গুলিতে অভিযুক্ত চার জনের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। কেউ বাহবা দিচ্ছেন তেলঙ্গানা পুলিশকে। কেউ নিন্দায় সরব। আবার কেউ প্রশ্ন তুলেছেন, আদৌ এনকাউন্টার হয়েছে তো? না কি এটাও ভোটের রাজনীতি?

এ প্রসঙ্গে কী বলছেন ‘তেজস্বিনী’রা?

পেশায় শারীরবিদ্যার শিক্ষিকা, স্নিগ্ধা মণ্ডল বলেন, ‘‘পুলিশের হাত থেকে অস্ত্র ছিনিয়ে নিয়ে অভিযুক্তেরা পালানোর চেষ্টা করতে গিয়েছিল বলে যদি পুলিশ ‘এনকাউন্টার’ করে থাকে তা হলে পুলিশ ঠিকই করেছে বলে মনে করি।’’ তবে বিষয়টি নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করা বা মিষ্টি খাওয়ানোর বিরোধী তিনি। তিনি আরও বলেন, ‘‘একটা এনকাউন্টার করে ভারতের মতো দেশে ধর্ষণের ঘটনা কমানো যাবে না।’’

স্নাতকোত্তর পড়ুয়া, আন্দুলের বাসিন্দা তিয়াসা দাস অবশ্য এনকাউন্টার সমর্থন করে টেনে আনলেন দিল্লির গণধর্ষণ এবং উন্নাওয়ের এক নির্যাতিতার কথা। তিনি বলেন, ‘‘দিল্লির গণধর্ষণ মামলায় এখনও অপরাধীদের ফাঁসি হল না কেন? আর কেনই বা উন্নাওয়ের নির্যাতিতাকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা হল?’’ তাঁর মতে, ‘‘আসলে অভিযুক্তেরা বুঝে গিয়েছে ধর্ষণ করলেও শাস্তি হবে না। শাস্তির ভয় নেই বলেই একের পর এক ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে। শাস্তি না দিলে অভিযুক্তেরা বুক চিতিয়ে ঘুরে বেড়াবে আর নির্যাতিতারা সারা জীবন ধরে বিচার চেয়ে ঘুরে বেড়াবেন।’’

অনেক তরুণী এনকাউন্টার সমর্থন না করলেও পুরোপুরি বিরোধিতাও করছেন না। উল্টে তাঁরা ধর্ষণের মতো অপরাধে কড়া শাস্তির দাবি তুলেছেন। প্রশিক্ষণ নেওয়া আর এক তরুণী, মহুয়া দেবনাথ বলেন, ‘‘ধর্ষণ ক্যানসারের মতো ছড়াচ্ছে। অভিযুক্তরা যেন জেনেই গিয়েছে অপরাধ করলেও ঠিক আইনের ফাঁক গলে বেরিয়ে যাবে। আমাদের মতো মেয়েরা, সাধারণ মানুষ বিচার ব্যবস্থার উপর আস্থা হারিয়ে ফেলেছেন। তাই এনকাউন্টার সমর্থন করতে বাধ্য হচ্ছি। না হলে কোনও দিন নিজের মেয়েকে, বোনকে ধর্ষিত হতে দেখার পরেও অসহায়ের মতো বসে থাকতে হবে।’’

কিন্তু অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, ওই চার জন আসল অভিযুক্ত তো?

এ প্রসঙ্গে মহুয়া বলেন, ‘‘অন্য কাউকে ধরে পুলিশ এনকাউন্টার করল কি না, তা জানার জন্য তা হলে তদন্ত হোক। সাধারণ মানুষ হিসেবে আমরা আগে একাধিক বার দেখেছি যে পুলিশ অভিযুক্তদের ধরলেও এখনও পর্যন্ত শাস্তি হয়নি। বিচার ব্যবস্থা এত সময় নিলে ন্যায় পেতে তো তা হলে বছরের পর বছর গড়িয়ে যাবে!’’

অন্য বিষয়গুলি:

Hyderabad Police Rape Encounter Kolkata Women
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE