প্রতীকী ছবি।
বেশ চেঁচামেচি করেই এক মহিলার সঙ্গে বচসা চলছিল এক প্রৌঢ়ের। দু’জনেই একে অপরের পরিচিত বুঝতে পেরে আশেপাশের লোকজন প্রথমে বিষয়টি নিয়ে মাথা ঘামাতে চাননি। কিন্তু কিছু ক্ষণ পরেই মহিলার চিৎকারে লোকজন দেখেন, তাঁর মুখে এলোপাথাড়ি ছুরি চালাচ্ছেন ওই প্রৌঢ়।
সোমবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণেশ্বর আইল্যান্ডে। প্রৌঢ়কে এলোপাথাড়ি ছুরি চালাতে দেখে কয়েক জন পথচারী তাঁকে ধরে ফেলেন। পরে সমীর চৌধুরী নামে ওই প্রৌঢ়কে গ্রেফতার করে বেলঘরিয়া থানার পুলিশ। রক্তাক্ত অবস্থায় মহিলাকে প্রথমে কামারহাটির সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তাঁকে আর জি করে স্থানান্তরিত করা হয়। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, মহিলার সঙ্গে প্রৌঢ়ের সম্পর্কের টানাপড়েনের জেরেই ওই ঘটনা।
পুলিশ সূত্রের খবর, ওই প্রৌঢ় ও মহিলা দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুরে একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে বেশ কয়েক বছর ধরে একসঙ্গে থাকতেন। সম্প্রতি তাঁদের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হয়েছিল। তা নিয়েই দু’জনের মধ্যে বিবাদ চলছিল। এ দিন সকালে এক বান্ধবীর সঙ্গে দক্ষিণেশ্বর মন্দিরে পুজো দিতে আসেন ওই মহিলা। তাঁদের পিছু নিয়ে সেখানে পৌঁছে যান সমীরও। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, পুজো দিয়ে স্কাইওয়াকের ১২ নম্বর গেটের কাছে এসে দাঁড়িয়ে ছিলেন ওই মহিলা।
সেই সময়ে সমীর সেখানে এসে তাঁদের পুরনো সম্পর্কের কথা বলতে শুরু করেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা পুলিশকে জানিয়েছেন, সমীর মাঝেমধ্যেই চেঁচিয়ে দাবি করছিলেন, ‘তুমি সব শেষ করে দিলে’। পাল্টা অভিযোগ তুলছিলেন মহিলাও। এমনিতেই স্কাইওয়াকের ওই গেটের সামনে দর্শনার্থীরা বাস, অটো ধরার জন্য দাঁড়িয়ে থাকায় যথেষ্ট ভিড় থাকে। এ দিনও তেমনি ছিল। তার মধ্যেই চলছিল দু’জনের বচসা। মহিলার ব্যাগ ধরে টানাটানি করছিলেন সমীর। আচমকা তিনি একটি ছুরি বার করে মহিলার গলায় কোপ মারার চেষ্টা করেন। চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ায় মহিলার মুখের দু’পাশে তিনি এলোপাথাড়ি আঘাত করতে শুরু করেন বলে অভিযোগ।
মহিলাকে ছুরি দিয়ে কোপাতে দেখে ঘটনাস্থলে চাঞ্চল্য ছড়ায়। তাঁর বান্ধবীও ভয়ে চেঁচাতে শুরু করে দেন। তখনই কয়েক জন দৌড়ে গিয়ে সমীরকে জাপটে ধরে ছুরিটা কেড়ে নেন। সেই সময়ে ধস্তাধস্তিতে আঙুলে সামান্য চোট পান সমীরও। ঘটনার খবর পেয়ে আশেপাশের দোকানদারেরাও স্কাইওয়াকের ওই গেটের সামনে ছুটে আসেন। ভিড় জমে যায় দক্ষিণেশ্বর আইল্যান্ডে। কয়েক জন চড়থাপ্পড়ও মারেন সমীরকে। পরে দক্ষিণেশ্বর ফাঁড়ির পুলিশ গিয়ে জনতার হাত থেকে ওই প্রৌঢ়কে উদ্ধার করে। অ্যাম্বুল্যান্স ডেকে মহিলাকে পাঠানো হয় হাসপাতালে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy