Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Mukundapur

Harassment: ‘এই মহিলাদের জন্যই ধর্ষণের ঘটনা ঘটে’! পোশাকের দোহাই দিয়ে মহিলাকে হেনস্থা, দু’পক্ষই থানায়

বুধবার সন্ধ্যায় বচসার সূত্রপাত হয় একটি বিড়ালকে ঘিরে। মুকুন্দপুরের ওই হাউসিংয়ে মঙ্গলবার এসেছেন এক দম্পতি। তাঁদেরই পোষ্য বিড়াল চলে গিয়েছিল পড়শির ঘরে। অভিযোগ, বিড়ালটিকে মারধর করেন ওই পড়শি।

মুকুন্দপুরের এই হাউসিংয়েই ঝামেলা হয়েছে। নিজস্ব চিত্র।

মুকুন্দপুরের এই হাউসিংয়েই ঝামেলা হয়েছে। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০২২ ১৫:২০
Share: Save:

এমন পোশাক পরলে তো ধর্ষণের ঘটনা ঘটবেই। এই সব মেয়েদের জন্যই ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে। এক মহিলার পোশাক নিয়ে এ ভাবে কটূক্তি করার অভিযোগ উঠল নরেন্দ্রপুর থানার মুকুন্দপুরের একটি হাউসিংয়ের বাসিন্দাদের বিরুদ্ধে। শুধু পোশাক নিয়ে মন্তব্যই নয়, মহিলাকে অশ্রাব্য গালিগালাজ এবং হেনস্থা করা হয়েছে বলেও অভিযোগ। যদিও হাউসিংয়ের বাসিন্দারা এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। পাল্টা ওই মহিলা এবং তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে হাউসিংয়েরই দুই মহিলাকে মারধরের অভিযোগ তুলেছেন তাঁরা।

বুধবার সন্ধ্যায় বচসার সূত্রপাত হয় একটি বিড়ালকে ঘিরে। মুকুন্দপুরের ওই হাউসিংয়ে মঙ্গলবার এসেছেন এক দম্পতি। তাঁদেরই পোষ্য বিড়াল চলে গিয়েছিল পড়শির ঘরে। অভিযোগ, বিড়ালটিকে মারধর করেন ওই পড়শি। কিন্তু সেই অভিযোগ অস্বীকার করেন ওই পড়শি। তাঁরা পাল্টা দাবি করেন, বিড়ালটি তাঁদের ঘরে ঢুকে পড়েছিল ঠিকই। অনেক ক্ষণ ব্যালকনিতেও ছিল। কিন্তু সেখানে প্রস্রাব করে ফেলে। সেই কথাটাই জানাতে গিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু ওই দম্পতি অভিযোগ তোলেন বিড়ালটিকে মারধর করা হয়েছে। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। বিষয়টি নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যেই কথা কাটাকাটি হয়। তখনকার মতো তা থেমেও গিয়েছিল।

দম্পতির দাবি, কিছু ক্ষণ পরে হাউসিংয়ের আরও লোকজন জুটিয়ে বিষয়টি নিয়ে একটি বৈঠকের আয়োজন করা হয়। সেখানে তাঁদের দু’জনকে ডাকা হয়। অভিযোগ, এর পরই দম্পতিকে ঘিরে ধরে শাসানো হয়। প্রতিবাদ করতে গেলে তাঁদের ধাক্কা মারা হয়। এমনকি গোটা ঘটনার ভিডিয়ো করতে গেলে মহিলার হাত থেকে মোবাইল কেড়ে নিয়ে ফেলে দেওয়া হয়। পাথর তুলে মারার চেষ্টাও করা হয় বলেও অভিযোগ।

ঝামেলা যখন তুঙ্গে, হঠাৎই ওই পড়শিদের মধ্যে থেকে কটূক্তি উড়ে আসে মহিলার পোশাক নিয়ে। মহিলার অভিযোগ, তিনি টি শার্ট এবং শর্টস পরে এসেছিলেন। তাঁর সেই পোশাক দেখেই অনেকে মন্তব্য করেন, এমন পোশাক পরলে ধর্ষণের ঘটনা বাড়বে না তো কি কমবে! এই সব মেয়েদের জন্যই ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে। মহিলার আরও অভিযোগ, হাউসিংয়ের মহিলারাও তাঁদের রেয়াত করেননি। মহিলা প্রশ্ন তুলেছেন, কে কী পোশাক পরবে তা নিয়ে কটূক্তি করার অধিকার কারও নেই। যে ভাবে পোশাক নিয়ে মন্তব্য করা হল, তা কোনও ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। মহিলার অভিযোগ, ধাক্কাধাক্কিতে তাঁর হাতে কালশিটে পড়ে গিয়েছে। রাতেই তাঁরা গিয়ে চিকিৎসা করান। তার পর নরেন্দ্রপুর থানায় গিয়ে গোটা বিষয়টি জানিয়ে এফআইআর দায়ের করেন।

ওই দম্পতির বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ করেছেন হাউসিংয়ের বাসিন্দারা। হাউসিংয়ের এক বাসিন্দার দাবি, ‘‘আমরা পোশাক নিয়ে কিছু বলিনি। ওই দম্পতি নেশাগ্রস্ত ছিলেন বলে মনে হয়। ওঁরা সব বানিয়ে বলছে। কে কী পরল, এখন কী এ সব কেউ দেখে? ওটা ব্যক্তিগত ব্যাপার। আমরা কি আদিম যুগে আছি যে, ওঁর পোশাক নিয়ে মন্তব্য করব?’’ হাউসিংয়ের সভাপতি পার্থপ্রতিম ঘোষের পাল্টা অভিযোগ, ওঁরা মিথ্যা কথা বলছেন। পুলিশ এবং সংবাদমাধ্যমের ভয় দেখানোর চেষ্টা করছিলেন। তিনি বলেন, “শুনেছি ওই দম্পতি মঙ্গলবার রাতে হাউসিংয়ে আসেন। বিড়াল নিয়ে পড়শির সঙ্গে একটা ঝামেলা হয়। এর পরই ওই দম্পতি পড়শির সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। আমরা সেখানে যেতেই হুমকি দেন ওঁরা।”

যে পড়শির ঘরে বিড়লটি ঢুকে পড়েছিল তাঁদের দাবি, “বিড়ালটি এত সুন্দর যে মারার কথা ভাবাই যায় না। আমরা মারিনি। ও ব্যালকনিতে বসে ছিল। সেখানে প্রস্রাব করে দিয়েছিল। দম্পতিকে সেটাই বলতে গিয়েছিলাম। কিন্তু ওঁরা অভিযোগ তোলেন যে, আমরা বিড়ালটিকে মেরেছি। যার জন্য সেটি বমি করছে।”

আক্রান্তদের তরফেও ওই দম্পতির বিরুদ্ধে থানায় পাল্টা অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Mukundapur cat woman dress harassment
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE