সম্প্রতি বেহালা পূর্বের বাসন্তী পুজোয় বিধায়ক রত্না চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে বহিষ্কৃত তৃণমূল যুব নেতা সোমনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ওরফে বাবন। নিজস্ব চিত্র
বেহালার গুলি-কাণ্ডের রেশ এ বার পৌঁছল বিধায়কের বাড়ি পর্যন্ত। বিধায়ক রত্না চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে বিক্ষোভ দেখালেন তৃণমূলের একদল মহিলাকর্মী। ঘটনার জেরে সাসপেন্ড করা হল যুব তৃণমূলনেতা সোমনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ওরফে বাবনকে।
মঙ্গলবার রাতে চড়কমেলাকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় বেহালা পূর্ব বিধানসভার চড়কতলা এলাকা। দফায় দফায় সংঘর্ষ হয় দু’পক্ষের মধ্যে। ইট ছোড়াছুড়ি এবং ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে। অভিযোগ ওঠে গুলি চলারও। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ১২ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ওই এলাকায় পয়লা বৈশাখের আগে চড়কের মেলা হয়। সেই মেলার দায়িত্ব নিয়েই ঝামেলা শুরু হয়। সন্ধ্যায় এক প্রস্থ ঝামেলা হলেও তখনকার মতো মিটমাট হয়ে যায়। কিন্তু রাত গড়াতে ফের উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা। যদিও শাসকদলের ব্যাখ্যা ছিল, ঘটনাটি কোনওভাবেই তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নয়, দুই পাড়ার মধ্যে ঝামেলা। কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ১২১ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর রূপক গঙ্গোপাধ্যায়ের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে এলাকা দখল নিয়ে গোলমালের ঘটনা প্রায়ই ঘটে। মঙ্গলবার রাতে সেই ঘটনা ব়ড় আকার নেয়।
ঘটনার জেরে বৃহস্পতিবার বেহালা পূর্বের বিধায়ক রত্না চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে বিক্ষোভ দেখান তৃণমূলের একদল মহিলাকর্মী। সকালে যখন মহারানি ইন্দিরা দেবী রোডের বাড়িতে বসে জনসংযোগের কাজ সারছিলেন বিধায়ক, সেই সময় তাঁর অফিসে আসেন ওই কর্মীরা। বিধায়ক তথা কাউন্সিলর রত্নার বাড়ি লাগোয়া তাঁর এই অফিস। সূত্রের খবর, বিধায়কের বাড়িতে যাঁরা বিক্ষোভ দেখাতে যান অভিযুক্ত তৃণমূল যুবনেতা সোমনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ওরফে বাবনের পরিবারের লোকজন এবং তাঁর অনুগামীরা। বিধায়কের কাছে এই ঘটনায় হস্তক্ষেপের দাবিও করেন তাঁরা। এরপরেই বিধায়ক রত্নাকে ফোন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কোনও কোনও মহল থেকে বলা হয়েছিল, অভিযুক্ত সোমনাথ কলকাতা পুরসভার ১২১ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল যুব সভাপতি। যদিও এই দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন দক্ষিণ কলকাতা তৃণমূল যুব সভাপতি সার্থক বন্দ্যোপাধ্যায়। আনন্দবাজার অনলাইনকে তিনি বলেন, ‘‘আমি সভাপতি হওয়ার পর নতুন করে ব্লক কমিটি গঠন হয়নি। তাই সোমনাথের ব্লক সভাপতি হওয়ার প্রশ্নই নেই। তৃণমূল যুবর কোনও সাংগঠনিক পদে ও নেই। ওকে দল থেকে সাসপেন্ড করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’
রত্না বেহালা পূর্বের বিধায়ক হলেও তাঁর বাড়ি বেহালা পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্রের ১৩১ নম্বর ওয়ার্ডে। ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলরও তিনি। রত্না বলেন, ‘‘গোলমালের ঘটনায় যাঁরা গ্রেফতার হয়েছেন, তাঁদের পরিবারের লোকেরা দেখা করতে এসেছিলেন। আমি জানিয়েছি আইন আইনের পথে চলবে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘এই বিষয়টি সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দেখছেন। তাঁরা যে সিদ্ধান্ত নেবেন সবাইকে তা মেনে নিতে হবে। আমি সেটা ওদের জানিয়ে দিয়েছি। অন্যায় করলে রাজনৈতিক রং দেখে বিচার করা হবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy