গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
নির্ধারিত দিনের দু’দিন আগে কলকাতা ছেড়ে মুম্বই চলে যাওয়ার পাশাপাশি নিজের মোবাইল থেকে বিভিন্ন তথ্য এবং ছবি মুছে দিয়েছিলেন রাজারাম রেগে। লালবাজারের অনুমান, কলকাতা ছাড়ার সময়েই ওই কাজ করেছেন তিনি। কী কী তথ্য ও ছবি তিনি মোবাইল থেকে মুছেছেন, তা জানতে ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের সাহায্য নিচ্ছে লালবাজার। পুলিশের দাবি, কলকাতায় থাকাকালীন বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ছবি তুলেছেন তিনি। তার প্রমাণ তাঁরা পেয়েছেন। অথচ মোবাইলে সে সব নেই। মনে করা হচ্ছে, ওই সব তথ্য ও ছবি ফোন থেকে মুছে দিয়েছেন রাজারাম।
সোমবার রাজারামকে মাহিম থেকে গ্রেফতার করা হয়। বুধবার পুলিশের তলব পেয়ে লালবাজারে এসেছিলেন রাজারামের স্ত্রী। তাঁর সঙ্গে প্রায় চার ঘণ্টা কথা বলেন তদন্তকারীরা। সূত্রের দাবি, রাজারাম কলকাতায় আসার কারণ তাঁর দন্ত চিকিৎসক স্ত্রীকে বলেননি। এ দিকে, জেরার মুখে কলকাতায় আসার কারণ এবং উদ্দেশ্য নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন রাজারাম। তবে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা যে তিনি করেছিলেন, তা স্বীকার করেছেন।
লালবাজার সূত্রের খবর, কলকাতায় আসার পরে একটি গাড়ি ভাড়া করেছিলেন রাজারাম। তাতে চড়েই ১৮ এপ্রিল থেকে ২০ এপ্রিল শহরের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরেছিলেন। ওই গাড়িতেই তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ি এবং অফিসের সামনে গিয়ে রেকি করেছিলেন রাজারাম। গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, গাড়িতে চালক ছাড়াও একাধিক ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন। কলকাতায় এসে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন তিনি। বুধবার ওই গাড়িচালক ছাড়াও চার জনকে লালবাজারে তলব করা হয়েছিল। সূত্রের দাবি, ওই চার জন তাঁদের সঙ্গে রাজারামের সম্পর্ক থাকার কথা স্বীকার করেছেন। বুধবার বেলা ১১টা নাগাদ তাঁরা লালবাজারে যান। রাত পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদ চলে। সূত্রের দাবি, তাঁরা পুলিশের সঙ্গে সহযোগিতা করছেন বলে ওই সূত্রের দাবি।
চালককে জিজ্ঞাসাবাদ করে তদন্তকারীরা জেনেছেন, শহর ছাড়ার আগে একটি নামী দোকান থেকে মিষ্টি কিনবেন বলে চালককে জানান রাজারাম। চালক সেখানে নিয়ে যান। কিন্তু দশ মিনিটের খানিক পরে ফিরে এলেও মিষ্টির প্যাকেট সঙ্গে আনেননি। তিনি সেখানে কারও সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন কি না, খোঁজ করছে পুলিশ। তার আগে হাওড়া সেতু, ভিক্টোরিয়া-সহ বিভিন্ন জায়গায় ঘুরেছেন রাজারাম। পুলিশের কাছে চালকের দাবি, তাঁর কাছ থেকে অভিষেক-সহ তৃণমূলের প্রথম সারির নেতানেত্রীদের সম্পর্কে খোঁজ নিয়েছেন রাজারাম।
এক তদন্তকারী অফিসার জানান, জেরায় রাজারাম বিভ্রান্ত করছেন। তাই কলকাতায় তাঁর সঙ্গীদের এ দিন ডাকা হয়েছিল। তাঁদের থেকে বেশ কিছু তথ্য মিলেছে। সূত্রের দাবি, রাজারাম সাত মাস আগে কলকাতার বিভিন্ন কল সেন্টারে যোগাযোগ করেন। তবে কারণ জানা যায়নি। পুলিশ জেনেছে, যার মধ্যে কয়েকটি কল সেন্টার বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
কলকাতায় থাকাকালীন অভিষেকের বাড়ি-অফিসে রেকি করা ও তাঁর সঙ্গে দেখা করতে চাওয়া নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়। তদন্তে জানা যায়, মুম্বইয়ের ২৬/১১ হামলার অন্যতম চক্রী, লস্কর জঙ্গি ডেভিড কোলম্যান হেডলির সঙ্গে যোগাযোগ ছিল তাঁর। পরে রাজসাক্ষী হন রাজারাম।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy