আদালতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ধৃত অনিতাকে। —নিজস্ব চিত্র।
ঘরে চাপ চাপ রক্ত। এক কোণে রক্তে ভেজা একটি নাইটি। শনিবার সন্ধ্যায় দরজা খুলে এই দৃশ্য দেখেই চমকে ওঠেন অনিতা মণ্ডল। তাঁর চিৎকার শুনে ছুটে আসেন প্রতিবেশীরা।
সেই রক্তের চিহ্ন দেখে ঘরের পিছন দিকে খোঁজ শুরু করেন প্রতিবেশীরা। খানিক পরেই বাড়ির পিছনে ঝোপের মধ্যে পাওয়া যায় অনিতার স্বামী ৩৮ বছরের সঞ্জীবনের গলা কাটা দেহ।
নিমতা থানার পূর্ব আলিপুরের ওই হত্যা রহস্যের তদন্ত করতে গিয়ে অনিতাকেই গ্রেফতার করল পুলিশ। তদন্তকারীদের দাবি, অনিতার বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে। সেই সম্পর্ক নিয়ে অশান্তির জেরেই খুন করা হয়েছে সঞ্জীবনকে। পুলিশের ধারণা, শুধু অনিতা নয়, খুনে যোগ রয়েছে অনিতার সেই সঙ্গীর যার সঙ্গে তার সম্পর্ক রয়েছে।
সঞ্জীবনের দেহ উদ্ধার হওয়ার পর ঘটনাস্থলে তদন্তে নিমতা থানার পুলিশ। —নিজস্ব চিত্র।
সঞ্জীবন পেশায় কাঠের মিস্ত্রি। স্ত্রী অনিতা আয়ার কাজ করেন। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, শনিবার সন্ধ্যায় অন্য দিনের মত বাড়ি ফেরে অনিতা। তারপরই অনিতার চিৎকার শুনতে পান তাঁরা।
শনিবার সন্ধ্যায় খবর পেয়ে নিমতা থানার পুলিশ সঞ্জীবনের দেহ উদ্ধার করার পর অনিতার বয়ান রেকর্ড করে। তদন্তকারীদের দাবি, অনিতাই প্রথম ঘরে ঢোকেন এবং তিনিই রক্ত দেখতে পান। কিন্তু তাঁর বক্তব্যে প্রচুর অসঙ্গতি পাওয়া যায়। এতেই পুলিশের সন্দেহ হয়। বার বার জেরা করা হলে একেক বার একেক রকম কথা বলেন অনিতা। তদন্তে প্রকাশ্যে আসে অনিতার বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের কথা। জানা যায়, ওই বিষয় নিয়ে সম্প্রতি ওই দম্পতির মধ্যে বচসা হচ্ছিল নিয়মিত। মৃতের মা-র বয়ানেও জানা যায় দাম্পত্য কলহের কথা।
আরও পড়ুন : বান্ধবীর জন্মদিনে বেপরোয়া ‘বাইক রাইড’ বাইপাসে, মৃত তরুণ, আশঙ্কাজনক তরুণী
জেরায় শেষ পর্যন্ত ভেঙে পড়েন অনিতা। তদন্তকারী এক আধিকারিক বলেন, ‘প্রথমে গলায় ফাঁস দিয়ে তারপর দা বা বঁটির মত কোনও ধারাল অস্ত্র দিয়ে সঞ্জীবনের গলা কাটা হয়। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর দেহ টেনে নিয়ে বাড়ির পেছনে ফেলে দেওয়া হয়।”
তদন্তে জানা গিয়েছে, পাশেই থাকেন অনিতার শাশুড়ি। কিন্তু শনিবার তিনি বাড়ি ছিলেন না। পুলিশের অনুমান, শাশুড়ির অনুপস্থিতির কথা জেনেই পরিকল্পনা করা হয় খুনের। রবিবার অনিতাকে ব্যারাকপুর আদালতে তোলা হয়। পুলিশ তাকে জেরার জন্য নিজেদের হেফাজতে চেয়েছে। পুলিশের সন্দেহ, অনিতার সঙ্গে খুনে আরও কেউ ছিলেন। ওই ভাবে অনিতার একার পক্ষে খুন করা সম্ভব নয়।
আরও পড়ুন : কলকাতায় খুনে অভিযুক্ত গ্রেফতার মহারাষ্ট্র থেকে
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy