Advertisement
১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
Kolkata Doctor Rape-Murder Case

টালা থানার প্রাক্তন ওসিকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে সরকারি হস্তক্ষেপ! নবান্নে চিঠি চিকিৎসকদের

নিজেকে অসুস্থ বলে দাবি করে একের পর এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হতে চেয়েছিলেন টালা থানার তৎকালীন ওসি অভিজিৎ মণ্ডল। কিন্তু প্রথমে কোনও হাসপাতালই তাঁকে ভর্তি নেয়নি।

tala and nabanna

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২২:০৭
Share: Save:

আরজি কর মেডিক্যালে মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় একাধিকবার প্রশ্নের মুখে পড়েছে টালা থানার ভূমিকা। অভিযোগ পেয়েও পদক্ষেপ না করার অভিযোগ উঠেছে ওই থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মণ্ডলের বিরুদ্ধে। তদন্ত করে অভিযুক্তদের ক্লিনচিট দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। সম্প্রতি আদালতের নির্দেশে আরজি কর মেডিক্যালে সিবিআই দুর্নীতির তদন্ত শুরু করার পরেই নিজেকে অসুস্থ দাবি করে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন অভিজিৎ। কিন্তু তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হস্তক্ষেপ করেছেন রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের পদস্থ কর্তাদের একাংশ। এমনই অভিযোগ করে নবান্নে চিঠি পাঠালেন চিকিৎসকেরা। জয়েন্ট প্ল্যাটফর্মস্ অফ ডক্টরস সংগঠনের তরফে রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, দক্ষ চিকিৎসক এবং চিকিৎসার রিপোর্ট অগ্রাহ্য করে অন্যায্য ভাবে টালা থানার প্রাক্তন ওসিকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে সাহায্য করেছেন স্বাস্থ্য দফতরেরই কেউ কেউ। আরজি কর-কাণ্ড নিয়ে যখন শোরগোল, ‘অতি স্পর্শকাতর’ এই বিষয় নিয়ে নাগরিক সমাজ যখন উদ্বেলিত তখন কার নির্দেশে এমন একটি কাজ করানো হল তার তদন্ত চেয়েছে চিকিৎসক সংগঠন। পাশাপাশি এমন সিদ্ধান্ত বা কাজ ন্যায়বিচারকে বিলম্বিত করবে বলে দাবি করেছেন তাঁরা। প্রসঙ্গত সুপ্রিম কোর্ট ইতিমধ্যেই অভিজিৎকে তলব করেছে। অভিযোগ, সেই কারণেই তিনি হাসপাতালে ভর্তি হতে চাইছেন।

গত বৃহস্পতিবার নিজেকে অসুস্থ দাবি করে শহরের একের পর এক বেসরকারি হাসপাতালে ঘুরেছিলেন টালা থানার তৎকালীন ওসি অভিজিৎ মণ্ডল। কিন্তু কোনও হাসপাতালই তাঁকে ভর্তি নেয়নি। বস্তুত, চিকিৎসকেরা ভর্তি নেওয়ার মতো ওই পুলিশ আধিকারিকের কোনও উপসর্গও খুঁজে পাননি। তাঁর সমস্ত মেডিক্যাল পরীক্ষার রিপোর্ট স্বাভাবিক ছিল বলেই জানা যায়। কয়েকটি হাসপাতাল তাঁকে আরও বড় হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত ওই দিন রাতেই দক্ষিণ কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন অভিজিৎ। জানা গিয়েছিল, উদ্বেগে ভুগছিলেন তিনি। তা ছাড়া ‘ডিহাইড্রেশন’ হয়েছে।

ঘটনাক্রমে পর দিন অর্থাৎ, শুক্রবার সকালে মলয় দত্তকে টালা থানার দায়িত্ব দেয় লালবাজার। তিনি শ্যামপুকুর থানার অতিরিক্ত ওসির দায়িত্বে ছিলেন। অন্য দিকে, নবান্নকে দেওয়া চিঠিতে চিকিৎসকদের দাবি, তাঁদের কাছে খবর রয়েছে যে ওই পুলিশ আধিকারিকের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার মতো কোনও শারীরিক সমস্যা ছিল না। অভিযোগ, স্বাস্থ্যভবনের একাধিক পদস্থ কর্তার হস্তক্ষেপে বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এক রকম বাধ্য হয়ে ওসিকে ভর্তি নিয়েছেন। নবান্নে পাঠানো চিঠির এক জায়গায় লেখা হয়েছে, ‘‘আমরা বুঝতে ব্যর্থ হয়েছি যে, কেন এবং কার নির্দেশে এই ভাবে এক জনকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হল।’’ এই প্রেক্ষিতে পুণ্যব্রত গুণ, হীরালাল কোনারের মতো চিকিৎসকেরা রাজ্যের কাছে এই বিষয়টির যথাযথ তদন্তের আর্জি জানিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE