প্রতীকী ছবি।
জাতীয় নির্বাচন কমিশনের নির্দেশিকা অনুযায়ী, মহিলা ভোটকর্মীদের নিয়োগ করতে হবে তাঁদের নিজস্ব বিধানসভা কেন্দ্র এলাকার মধ্যে। কিন্তু দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় ওই নির্দেশিকা মানা হয়নি বলে অভিযোগ উঠল। ওই জেলায় মোট বুথের সংখ্যা ১১২৭৯টি। সে ক্ষেত্রে ৩০ শতাংশ বুথ মহিলা কর্মীদের দিয়ে পরিচালনা করতে হবে বলে নির্দেশ জারি করেছে নির্বাচন কমিশন। কমিশনের নির্দেশিকা অনুযায়ী, মহিলা ভোটকর্মীদের নিজস্ব বিধানসভা এলাকার মহিলা পরিচালিত বুথে নিয়োগ করতে হবে। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় ৩০ শতাংশ বুথ পরিচালনা করতে প্রায় ১২ হাজার মহিলা ভোটকর্মীর প্রয়োজন। ওই জেলার মহিলা ভোটকর্মীদের অভিযোগ, অনেককেই নিজেদের কেন্দ্রে ভোট পরিচালনায় নিয়োগ না করে যেখানে তাঁদের কর্মস্থল সেখানে ডিউটি দেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে অনেক মহিলা ভোটকর্মীর বাড়ি থেকে তাঁর কর্মস্থলের দূরত্ব ১০০ কিলোমিটার বা তার বেশি। বাসন্তীর সাউথ সার্কলের নিয়ামতপাড়া লস্কর প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষিকা নয়না নস্করের বাড়ি বারুইপুরের চম্পাহাটি এলাকায়। ট্রেনে, বাসে করে তিনি প্রায় ১০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে স্কুলে আসেন। চাকরি পাওয়ার পরে এই প্রথম তাঁর ভোটের ডিউটি পড়েছে। তিনি বলেন, ‘‘৬ এপ্রিল ভোটের ডিউটি পড়েছে। ৫ এপ্রিল আমাকে ডিসিআরসিতে রিপোর্টিং করে মালপত্র নিতে বলা হয়েছে। ইতিমধ্যে আমি ক্যানিংয়ে ভোটের প্রশিক্ষণ নিয়েছি। ডিউটি বাসন্তীতে পড়েছে। বাড়ি থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরে আমার কর্মস্থল। বাড়িতে বৃদ্ধ বাবা-মা রয়েছেন। তাঁরাও এত দূরে ডিউটি পড়েছে বলে চিন্তা করছেন। শুনেছিলাম আমাদের ভোটের ডিউটি দেওয়ার কথা নিজেদের এলাকায়। কিন্তু তা হয়নি। নিজের এলাকায় ভোটের ডিউটি পড়লে সুবিধা হত। ডিউটি সেরে রাতে বাড়ি ফিরতে পারতাম।’’ কবিতা জানা বাসন্তীর ঋতু ভগত হাইস্কুলের শিক্ষিকা। তাঁর বাড়ি দক্ষিণেশ্বরে। তাঁকে প্রায় ১৫০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে স্কুলে পৌঁছতে হয়। তিনি বলেন, ‘‘আমার ভোটের ডিউটির জন্য বাসন্তীর নারায়ণতলা রামকৃষ্ণ বিদ্যামন্দিরে রিপোর্টিং করতে বলা হয়েছে। প্রশিক্ষণের সময়ে বলা হয়েছিল, মহিলা ভোটকর্মীদের বাড়ির এলাকায় ডিউটি দেওয়া হবে। কিন্তু সেটা হয়নি। বাড়ি থেকে এত দূরে ভোটের ডিউটি পড়ায় পরিবারের লোকজন যেমন চিন্তিত, তেমনই আমরা নিজেরাও চিন্তায় রয়েছি। ২০১৪ সালেও বাসন্তীতে আমার ভোটের ডিউটি পড়েছিল। তখন খুব সমস্যা হয়েছিল। এ বার আশা করেছিলাম বাড়ির কাছাকাছি কোথাও ডিউটি পড়বে। সেটা না হওয়ায় হতাশ লাগছে।’’ শুধু নয়না বা কবিতাই নন, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় জেলা প্রশাসনের বিরুদ্ধে বাড়ি থেকে বহু দূরে ভোটের ডিউটি দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন বহু মহিলা ভোটকর্মী। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশিকাকে কেন মান্যতা দেওয়া হল না? জেলাশাসক অন্তরা আচার্যকে ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ করা হলে তিনি উত্তরে জানান, নির্বাচন কমিশনের বৈঠকে ব্যস্ত আছেন। তবে জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘ক্যানিং ও কাকদ্বীপে কিছুটা সমস্যা হয়েছে। সেখানে স্থানীয় মহিলা ভোটকর্মীদের পাওয়া যাচ্ছে না। কিছু ক্ষেত্রে তাই ওই সমস্ত এলাকার সরকারি স্কুলের শিক্ষিকা ও কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের মহিলা পরিচালিত বুথে নিয়োগ করা হয়েছে। সে ক্ষেত্রে কর্মস্থলকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। তবে ওই মহিলা কর্মীদের নিরাপত্তা ও থাকা-খাওয়ার সুবন্দোবস্ত রাখা হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy