Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Covid-19

কলকাতার কড়চা: সনাতন মিশে যায় সমকালে

বাংলার পটচিত্র শুধু ছবি নয়, আখ্যানও। চিত্রী কেবল আঁকিয়ে নন, কথকও। পুরাণ-মহাকাব্য-লোককথার আবহমান আখ্যানধর্মিতাকে রংতুলিতে ধরেন শিল্পী, আবার সমসময়ের রাজনীতি বা দুর্যোগও হয়ে ওঠে তাঁর বক্ষ্যমাণ উপজীব্য।

শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২০ ০৬:০৩
Share: Save:

মাস্ক পরলে সুবিধে অনেক। করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষা মেলে, মাস্ক পরে রাস্তায় বেরনো মুখগুলোকে আলাদা করে ঠাহর হয় না। সবাইকে দেখতে লাগে একই রকম, সমান অপরিচিত। সেই অপরিচিতির সুযোগ নিয়েই প্রণয়ীযুগল বেরিয়ে পড়েছে বাইকে, ছড়ি-উঁচনো অভিভাবকটিও বিভ্রান্ত। ছবিটির নাম ‘আমার দুষ্টু কই?’ আর একটি ছবিতে মাস্ক না পরেই পথে বেরিয়ে পুলিশের মুখোমুখি গাঁয়ের দুই মহিলা, ব্যতিব্যস্ত হয়ে শাড়ির আঁচলে মুখ ঢাকছেন। পুলিশ হাত উঁচিয়ে তম্বি করছে, যদিও তার মুখেও মাস্ক নেই! এই ছবিটি— ‘তুমি তো জানো’। অতিমারির প্রকোপে তটস্থ সমসময়কে এ ভাবেই পটচিত্রে তুলে ধরেছেন শিল্পী আনোয়ার চিত্রকর। করোনায় কাবু বেরং জীবন ছেঁচে হিউমার আর কারুণ্য দুই-ই তুলে আনছেন, ছড়িয়ে দিচ্ছেন বলিষ্ঠ টান-টোন ও উজ্জ্বল রঙের সমাবেশে।

বাংলার পটচিত্র শুধু ছবি নয়, আখ্যানও। চিত্রী কেবল আঁকিয়ে নন, কথকও। পুরাণ-মহাকাব্য-লোককথার আবহমান আখ্যানধর্মিতাকে রংতুলিতে ধরেন শিল্পী, আবার সমসময়ের রাজনীতি বা দুর্যোগও হয়ে ওঠে তাঁর বক্ষ্যমাণ উপজীব্য। ব্যতিক্রম নন পশ্চিম মেদিনীপুরের নয়া গ্রামের আনোয়ার চিত্রকরও। বাবা অমর চিত্রকরের কাছে ছবিতে হাতেখড়ি, প্রধানত কালীঘাট পটশিল্পী রীতি ও আঙ্গিকের শিল্পী আনোয়ার কোভিড-লাঞ্ছিত এই সময়ে দাঁড়িয়ে পটচিত্রের চর্চিত পুনরাবৃত্তিতে ফিরতে চাননি। রোজকার জীবনের টুকরো দৃশ্য, মামুলি ঘটনা ও অনুভূতিকে এঁকেছেন সনাতন লোকশিল্পের ঐতিহ্য অক্ষুণ্ণ রেখে। সাম্প্রতিক কালে আঁকা পটচিত্রগুলির বিষয় তাই করোনা ও কোভিডের আবহে জনজীবন। লকডাউনে শহুরে প্রেমিক-প্রেমিকা গাড়িতেই প্রেম করছে, ‘হট হিরো’ ছবিতে কেতাদুরস্ত তরুণ খুন্তি-সসপ্যান নিয়ে রান্নায় রত, গাড়িবিরল রাস্তার ধারে ঘুষের অপেক্ষায় ক্লান্ত অসৎ পুলিশ, বাড়িতে অখণ্ড অবসরে পাঞ্জা লড়াইয়ে দম্পতি, সবই উঠে এসেছে চারুভাষে। প্রকৃতি ও পশুপাখির চিত্রকল্পে সনাতনি ব্যঞ্জনা, বাঘ হরিণ ময়ূরের কাল্পনিক গলাগলি। কোনও ছবিতে মানুষ খাঁচায় বন্দি আর পশুপাখিরা ফিরে এসেছে তাদের অরণ্যের অধিকার বুঝে নিতে, কোথাও ভাইরাসভীত মাস্কবন্দি মানুষের মুখ আর পথের পাশে গরুর মুখাবয়ব বদলাবদলি হয়ে গিয়েছে শিল্পিত কৌতুকে। কোথাও দুর্গার আদলে শক্তিরূপিণী করোনাসুরকে বধে উদ্যতা। পটচিত্রের আয়নায় মিশে গেছে উচ্ছল কথক আর স্বস্থ শিল্পীর ছায়া।

আনোয়ার চিত্রকরের আঁকা তেরোটি সাম্প্রতিক পটচিত্র নিয়েই ইমামি আর্ট আয়োজন করেছে শিল্পীর একক অনলাইন প্রদর্শনী ‘এই সময়ের পট: টেলস অব আওয়ার টাইম’। নিউ নর্মাল সময়কে মাথায় রেখেই এই ভার্চুয়াল প্রদর্শনী। শহরের আর্ট গ্যালারিগুলো বন্ধ, তা বলে শিল্পবিশ্ব আর তার রসজ্ঞের দ্বার রুদ্ধ থাকবে কেন? সংস্থার ওয়েবসাইটে প্রদর্শনী শুরু হয়েছে ৫ জুলাই, চলবে ৩১ জুলাই পর্যন্ত। সামনাসামনি ছবি দেখার অভিজ্ঞতা নিশ্চয়ই নির্বিকল্প, কিন্তু এই কঠিন সময়ে আর উপায় কী। ওয়েবসাইটে দেখা যাচ্ছে সব ছবি ও ছবি-পরিচিতি, সেই সঙ্গে তথ্য, এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি ছবি খুঁজে নিয়েছে সমঝদার ক্রেতার ঠিকানা। আর্টের আপাত-বন্ধ দুনিয়ায় সুসংবাদ।

জন্মদিনে

বাংলা কবিতায় রবীন্দ্রোত্তর যুগের অন্যতম প্রবর্তক তিনি, বিষ্ণু দে (১৯০৯-১৯৮২)। ভারতীয় ও ইউরোপীয় সাহিত্য ও সঙ্গীতের বিভিন্ন ধারায় তাঁর অসীম জ্ঞানের ছাপ পড়েছিল তাঁর কাব্যে। বাঙালিকে পরিচয় করান রবীন্দ্রনাথের চিত্রকলা এবং যামিনী রায়ের সঙ্গেও। সহপাঠী জ্যোতিরিন্দ্র মৈত্র আজীবন সুহৃদ ছিলেন বিষ্ণু দে-র, জ্ঞানপীঠ পুরস্কারে ভূষিত তাঁর দীর্ঘ কবিতা স্মৃতি সত্তা ভবিষ্যৎ-এর নির্বাচিত অংশে সুর দিয়ে জ্যোতিরিন্দ্র তৈরি করেছিলেন এক অনন্য আলেখ্য। এক কবির কাব্যে এক বন্ধু কবির সুরারোপ এক বিরল ঘটনাই বটে। ১৮ জুলাই বিষ্ণু দে-র ১১১তম জন্মদিনে এক ফেসবুক-অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল জ্যোতিরিন্দ্র মৈত্র মেমোরিয়াল ট্রাস্ট। স্মৃতিচারণ ও সঙ্গীত পরিবেশন করেন কবিপুত্র জিষ্ণু দে, পুত্রবধূ মীরা ও তিন পৌত্রী দামিনী, রুক্মিণী ও জয়নী। হাইনরিখ হাইনে-র কবিতার বিষ্ণু দে-কৃত অনুবাদে সুরারোপ করে গান করেন শর্মিলা রায় পোমো। দেবাশিস রায়চৌধুরী পরিচালনা করেন স্মৃতি সত্তা ভবিষ্যৎ-এর এক নতুন নাটকীয় পাঠ ও গান সংবলিত আলেখ্য। ছিলেন জ্যোতিরিন্দ্র-তনয়া সুস্মিতা রায়চৌধুরী ও দৌহিত্রী রোহিণী রায়চৌধুরী। এ যেন আজকের প্রজন্মেরও শ্রদ্ধার্ঘ্য।

সাহিত্যের ইয়ারবুক

সাহিত্যিক-শিল্পী, পত্রপত্রিকা, প্রকাশক, সবার ঠিকানা ফোন নম্বর ও ওয়েবসাইট নিয়ে ফের হাজির সাহিত্যের ইয়ারবুক/ ঠিকানাপঞ্জি ২০২০ (জাহিরুল হাসান প্রতিষ্ঠিত)। প্রচ্ছদে পুরনো লাল ডাকবাক্সের ছবি, পাশে লেখা: ‘বাংলা সাহিত্যের গুগল’। আছে দিনপঞ্জি, বছরের শিরোধার্য দিনগুলি— বিশিষ্ট বাঙালির জন্ম-মৃত্যু থেকে উল্লেখযোগ্য ঘটনা। পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি বাংলাদেশের সাহিত্যিক-প্রকাশক-গ্রন্থবিপণি-সংস্থার ঠিকানা। শুরুতে সম্পাদক বিশ্বনাথ ভট্টাচার্য জানিয়েছেন এ বারের পরিবর্ধিত-পরিমার্জিত সংস্করণের কথা। নাতিদীর্ঘ গদ্যে রমানাথ রায় লিখেছেন: ‘‘ ‘সাহিত্যের ইয়ারবুক’ এক অভিনব অভিধান...বন্ধুদের কথা বলতে ইচ্ছে করে। জানতে ইচ্ছে করে কে কেমন আছে। তখন সাহিত্যের ইয়ারবুক আমার একমাত্র সম্বল হয়ে ওঠে।... পাতা খুলে তাদের ফোন নাম্বার খুঁজে ফোন করি। সুখ-দুঃখের কথা বলি। মনের ভার দূর হয়।’’

সারস্বত

কলেজে পড়ার সময় প্রথম লেখা রবীন্দ্রসাহিত্যে কর্মের আহ্বান প্রকাশিত হয় ভারতবর্ষ পত্রিকায়। প্রবাসী পত্রিকায় লেখেন ঋষি বঙ্কিম গ্রন্থাগার ও সংগ্রহশালা। বসুমতী থেকে শুরু করে আজকের পত্রপত্রিকায় আজীবন লিখে গিয়েছেন অভয়চরণ দে। বিভিন্ন গবেষণাধর্মী পত্রিকায় বেরিয়েছে একাধিক গবেষণা-নিবন্ধ। প্রথম বই বঙ্কিমচন্দ্র: মনীষী ও মানুষ, এর পর একে একে প্রকাশিত বঙ্কিম সাহিত্যে মৃত্যু, নৈহাটিতে বঙ্কিমচর্চা, বঙ্কিমী গপ্পো-র মতো গ্রন্থ। রামসহায় বেদান্তশাস্ত্রী মশায়ের জীবনভিত্তিক গ্রন্থটি প্রকাশের মুখে। ১৯৫১ থেকে শিক্ষকতা শুরু, ’৭৩-এ প্রধান শিক্ষক। দীর্ঘ কর্মজীবন শেষে অবসর ১৯৯৩-এ। প্রতি বছর নিয়ম করে পালন করতেন বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ও হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর জন্মদিন। বঙ্কিম ও বিদ্যাসাগর-সাহিত্যে তাঁর কাজের জন্যে হরপ্রসাদ শাস্ত্রী ও ঈশ্বর গুপ্ত স্মারক সম্মানে ভূষিত হয়েছিলেন। বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের প্রাক্তন সহ-সভাপতি, নৈহাটি শাখার কর্ণধারও ছিলেন অভয়বাবু। আপাদমস্তক সাহিত্যমনা মানুষটি চলে গেলেন ১০ জুলাই। বয়স হয়েছিল ৯২ বছর।

বিজয়া

তাঁর ৭৫ বছরের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, ভয় করছে, বৃদ্ধ বলে বাতিলের দলে চলে যাব না তো? চলে তিনি গেলেনই, তবে বাংলা কবিতাবিশ্ব ছেড়ে। বিজয়া মুখোপাধ্যায় (১৯৩৭-২০২০) এক দিন কবিতায় লিখেছিলেন, ‘আমি মরে গেলে চলে যাবে ভালবাসা...’ ১৯৬৭ সালে, যে বছর সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের কবিতাবই আমি কীরকম ভাবে বেঁচে আছি আর শঙ্খ ঘোষের নিহিত পাতালছায়া-য় কলকাতা তোলপাড়, সে বছরেই কৃত্তিবাস থেকে বেরোয় বিজয়া দাশগুপ্তের প্রথম কাব্যগ্রন্থ আমার প্রভুর জন্য। কৃত্তিবাস পত্রিকাতেই লেখালিখি শুরু, ‘মেয়েরা আবার লিখতে পারে না কি?’ এই চ্যালেঞ্জের উত্তরে। আর পিছনে ফিরে তাকায়নি তাঁর কবিতা। ঢাকা বিক্রমপুরের সংস্কৃতিমনস্ক পরিবারে জন্ম। প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে সংস্কৃত ভাষা ও সাহিত্যে এম এ, দীর্ঘ কাল অধ্যাপনা করা বিজয়ার প্রেম ছিল কবিতাই। কবি শরৎ মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর কাব্যদাম্পত্য বাংলা কবিতাজগৎকে ঋদ্ধ করেছে। রামকৃষ্ণ মিশন ইন্সটিটিউট অব কালচারে ভারততত্ত্ব গবেষণা বিভাগে যুক্ত ছিলেন, কবিতাসূত্রে গিয়েছেন আমেরিকা-ইউরোপ, বাংলাদেশেও বহু বার। পেয়েছেন রবীন্দ্র পুরস্কার, জীবনানন্দ দাশ স্মৃতি পুরস্কার। কুড়িটিরও বেশি কাব্যগ্রন্থের রচয়িতা বিজয়ার কবিতা ইংরেজিতে অনূদিত হয়েছে, লিখেছেন গদ্যগ্রন্থ, ছোটদের জন্য ছড়ার বইও। কলকাতায় নিজের বাড়িতে গতকাল চলে গেলেন উড়ন্ত নামাবলী, মাস্তুলের পাখি-র কবি।

অক্ষয় সপ্তাহ

তাঁর বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদের সাধনা বাঙালির নবজাগরণকে অনেকাংশে প্রসারিত করেছিল। প্রায় এক যুগ-ব্যাপী তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা সম্পাদনার মাধ্যমে বাংলা সাময়িকপত্র সম্পাদনের ধারায় নবযুগ এনেছিলেন উনিশ শতকের খ্যাতনামা চিন্তাবিদ অক্ষয়কুমার দত্ত (১৮২০-১৮৮৬)। ১৫ জুলাই তাঁর জন্মের দুশো বছর উপলক্ষে সাধারণ ব্রাহ্মসমাজের উদ্যোগে ১৮ জুলাই হয়ে গেল একটি ওয়েবিনার। বরুণ চট্টোপাধ্যায় বললেন অক্ষয় দত্তের ভারতবর্ষীয় উপাসক সম্প্রদায়-এর আলোয় তাঁর সাহিত্যকীর্তির কথা, ব্রাহ্মসমাজের সঙ্গে অক্ষয় দত্তের সম্পর্কের গভীরতা ও জটিলতার দিকটি তুলে ধরলেন অর্ণব নাগ। শক্তিসাধন মুখোপাধ্যায় বর্তমান সময়ের প্রেক্ষিতে এই মনীষীর প্রাসঙ্গিকতা ব্যাখ্যা করেন। অক্ষয়কুমার স্মরণে গত দু’বছর ধরে যৌথ ভাবে ‘অক্ষয় সপ্তাহ’ উদ্‌যাপন করছে অহর্নিশ, বেসিক, জীবনস্মৃতি ও ক্র্যাকার পত্রিকা। এ বছর হোয়াটসঅ্যাপে সপ্তাহব্যাপী এই বিজ্ঞান-পথিককে স্মরণ করল তারা। স্কুল-কলেজের পড়ুয়ারা চিত্র কোলাজ, সংক্ষিপ্ত কথনে ‘অক্ষয় সপ্তাহ’ সার্থক করে তুলেছিল। প্রাসঙ্গিক বক্তব্য আশীষ লাহিড়ী, শঙ্কর ঘোষ, শুভাশিস চক্রবর্তী প্রমুখের।

জীবনের গল্প

সাতটি পর্বে নাট্যকর্মীদের নিয়ে ফেসবুকে ভিডিয়ো-শো ‘তোমায় সেলাম’ শেষ হল গত কাল। লকডাউনে থিয়েটারের স্বজনদের উদ্দীপ্ত করার লক্ষ্যে এই নিবেদন নান্দীকার-এর। সার্বিক ভাবনায় সোহিনী সেনগুপ্ত, বললেন “অনেকে ফোনে জানাচ্ছিলেন, মনোবল ভেঙে যাচ্ছে। সে সময় ফেসবুকে একটি পোস্টে দেখি দীর্ঘ দিনের থিয়েটারকর্মী, নাটকের সূত্রে বিদেশে ভ্রমণ-করা তপন দাস মাছ বিক্রি করছেন। তাঁকে কুর্নিশ জানিয়েই ‘তোমায় সেলাম’-এর বীজ বোনা। করোনা-উত্তর পৃথিবীতে বাঁচতে তার উপযোগী করে তুলতেই হবে নিজেদের, আয়ত্ত করতে হবে নতুনকে গ্রহণের মানসিকতা।” বিভিন্ন পর্বের নাট্যকর্মীরা হলেন সাধন ও সমর, এক জন মাংসের দোকান চালাচ্ছেন, অন্য জন আনাজপাতির। বাড়ি বাড়ি চায়ের সরঞ্জাম পৌঁছে দিচ্ছেন পান্না মন্ডল, জল দিচ্ছেন শম্ভুনাথ সাউ। গম্ভীরা ভট্টাচার্য দিচ্ছেন বাইক পরিষেবা, তাপস ভট্টাচার্য মুদি দ্রব্যের জোগান। কৌশিক কর নিজের জমিতে চাষ করছেন, সব্জি ফলাচ্ছেন। নান্দীকার-এর পক্ষে ভিডিয়োগুলি তৈরি করেছেন অর্ঘ্য।

বাঁচিয়ে রাখা

চেতনা নাট্যগোষ্ঠীর মারীচ সংবাদ-এর ডিজিটাল রেস্টোরেশন, তার পর একে একে পুতুল নাচ, তৃপ্তি মিত্র, শাঁওলী মিত্র, রমাপ্রসাদ বণিক, উৎপল দত্ত, হাবিব তনভির, জ্যোৎস্না দত্ত, বীণা দাশগুপ্ত, ভৈরব গঙ্গোপাধ্যায়, বাংলা লোকনাট্যের নানা আঙ্গিক ও শিল্পী, ঢাকা নাগরিক দলের নাটক, একদা বঙ্গরঙ্গমঞ্চের শিল্পী সতু সেনকে নিয়ে তথ্যচিত্র— অতীতের মণিমুক্তো ফেসবুক পেজে তুলে আনছেন দেবেশ চট্টোপাধ্যায় ও তাঁর নাট্যগোষ্ঠী ‘সংসৃতি’। “পুরনো দিনের কাজের রেস্টোরেশন বা গবেষণার ঝোঁক আমার থিয়েটার জীবনের গোড়া থেকেই। তখন খালেদ চৌধুরী ঊষা গঙ্গোপাধ্যায়ের ডকুমেন্টেশন করেছিলাম, পত্রিকা করেছিলাম কেয়া চক্রবর্তী ও শেখর চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে। এখনকার কাজটা একটা অডিয়ো-ভিস্যুয়াল ডকুমেন্টেশন, শিল্পের সঙ্গে যুক্ত নতুন প্রজন্মের মগজে যদি থেকে যায়,” বললেন দেবেশ। বাদল সরকারের (ছবিতে তাঁর অভিনয়ের স্থিরচিত্র) নাট্যভাবনা নিয়ে শিবানন্দ মুখোপাধ্যায়, অসীম চৌধুরী ও দেবাশিস চক্রবর্তীর তথ্যচিত্র পাখিরা (১৯৯০) নির্মাতাদের সঙ্গে রেস্টোর করছেন তিনি। আন্তর্জাতিক নাট্যব্যক্তিত্ব স্তানিস্লাভস্কিকে নিয়ে একটি রুশ তথ্যচিত্রের ইংরেজি সাবটাইটল-সমন্বিত রেস্টোর্ড ভার্সন সংসৃতি ফেসবুকে আনছে ৭ অগস্ট।

উত্তর খুঁজতে

সব মিলিয়ে চল্লিশ থেকে পঞ্চাশ জন। বিভিন্ন জেলার স্কুলে শিক্ষকতা করেন ওঁরা। সমবেত হয়েছিলেন এক ভার্চুয়াল সভায়। অতিমারির মধ্যে ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া কী ভাবে চালিয়ে নিয়ে যাওয়া যাবে, তার উত্তর খুঁজতেই কিছু শিক্ষকশিক্ষিকার উদ্যোগে তৈরি ‘শিক্ষা আলোচনা’ গোষ্ঠীর এই আয়োজন। দু’ঘণ্টার বেশি সময় ধরে চলল অভিজ্ঞতা বিনিময়। বহু শিক্ষকশিক্ষিকা প্রাণপণ চেষ্টা করছেন ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনা যথাসম্ভব এগিয়ে নিয়ে যেতে। কাজটা কঠিন, বহু ছেলেমেয়ের ডিজিটাল মাধ্যম কাজে লাগানোর সুযোগ নেই— স্মার্টফোনের অভাব, সিগনালের সমস্যা, রিচার্জের সামর্থ্যও নেই। অনেকেই বললেন, ‘‘ওদের কাছে পৌঁছতে হবে, অন্তত সপ্তাহে এক দিন সব নিয়ম মেনে ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে বসার চেষ্টা করছি, অভিভাবকদের সঙ্গেও।’’ প্রতীচী-র উদ্যোগে শিক্ষা আলোচনার একটি ধারা তৈরি হয়েছে অনেক দিন, অধ্যাপক অমর্ত্য সেন নিজে বেশ কয়েকটি সভায় সাগ্রহে যোগ দিয়েছেন। এই সঙ্কটের সময় খোলামেলা আলোচনার প্রয়োজন আরও বেশি। প্রয়োজন প্রশাসন এবং সমাজের সহযোগিতারও।

ট্রেন-রঙ্গ

করোনার থেকেও দ্রুত গতিতে একটি বস্তুই ছড়াতে দেখা যাচ্ছে, ফেসবুকের গ্রুপ ‘লোকাল ট্রেন কিনতে চাই’। দেশে রেল বেসরকারিকরণের প্রস্তাব নিয়ে রসিকতাতেই গ্রুপটির জন্ম, সদস্য সংখ্যা প্রথম হপ্তা দুয়েকেই প্রায় ৭৮ হাজার। বিচিত্র সব ট্রেন ক্রয়েচ্ছুকের উদয়— লোকাল না এক্সপ্রেস কোন ট্রেন কেনা হবে, কোন রুটের লোকালে কী লাভ, মজাদার জল্পনায় মেহফিল সরগরম। ক্ষমতার চোখে চোখ রাখতে সরস শ্লেষ বা বুদ্ধিদীপ্ত ঠাট্টার মতো হাতিয়ারের সঙ্গে পরিচয় আছে বাঙালির, সরকারি সিদ্ধান্তকে বিঁধে গণরসিকতা এক ধরনের নাগরিক অধিকারও বটে। অনেক দিন বাদে সেই পরম্পরার খানিক আভাস বুঝি পাওয়া যাচ্ছিল! তবে অনলাইন বিশৃঙ্খলায় বাঙালির শাণিত ব্যঙ্গের বোধ আজকাল সহজেই ধর্ম বা দলবাজির পচা ডোবায় মজে। সঙ্কটের দিনকালে সোডার মতো ভুসভুসিয়ে ওঠা গ্রুপটাও তেমনই ফেনিয়ে বা উবে না যায়!

গানের ধারা

করোনার আবহে মঞ্চ ও প্রেক্ষাগৃহে অনুষ্ঠানে মানা। তাই সঙ্গীত খুঁজে নিল তার নতুন মাধ্যম। কলকাতার রবীন্দ্রসঙ্গীত কেন্দ্র ‘দক্ষিণী’-র প্রতিষ্ঠাতা শুভ গুহঠাকুরতার ১০১তম জন্মদিবসটি মনে রেখে ১৭ জুলাই সন্ধ্যায় ‘দক্ষিণী গুরুকুল’ ফেসবুক পেজে সঙ্গীত পরিবেশন করলেন প্রাক্তনী ও শিক্ষকরা। শুভ গুহঠাকুরতার স্মৃতিচারণা করলেন তাঁর পরিজনেরা। ও দিকে ১৮ জুলাই সন্ধ্যায় ‘দ্য বঙ্গ নিউজ়’-এর আয়োজনে হয়ে গেল শ্রীকান্ত আচার্যের বছরের প্রথম ডিজিটাল কনসার্ট ‘পৃথিবীর চাবি’। অর্ণা শীলের গীতিকার জীবনের কুড়ি বছর পূর্তি উপলক্ষে একক অনুষ্ঠানে অর্ণার লেখা গান শোনালেন শিল্পী। ছিল গানজীবনের গল্পও, আর অবশ্যই রবীন্দ্রসঙ্গীত। ছিলেন জয় সরকার, শুভমিতা, জয়তী চক্রবর্তী প্রমুখ। ১৯ জুলাই ‘সুরকাহন’ এবং ‘ঐকান্তিক’-এর আয়োজনে হয়ে গেল প্রবুদ্ধ রাহার প্রথম ডিজিটাল অনুষ্ঠান। রবীন্দ্রসঙ্গীত ছাড়াও হিমাংশু দত্ত, সলিল চৌধুরী, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, রাহুল দেব বর্মণের সুর করা বাংলা গান শোনালেন শিল্পী।

আবিষ্কার

বারান্দার পাশের কৃষ্ণচূড়া গাছে শালিকের বাসা। ছানাদের ঠোঁটে রোজ বিকেলে খাবার গুঁজে দেয় মা পাখি। সন্ধে নামার আগে কালো মেঘগুলো যখন গড়িয়ে যায়, তখন উট, কেশর ফোলানো সিংহ, কখনও চুল-ওড়া মেয়ের মুখ ভাসে আকাশের ক্যানভাসে। সে দিন বৃষ্টির পর কী সুন্দর রংধনু উঠল! অবাক শিশুমন। স্কুল-কোচিং-বার্থডে পার্টিতে কুলুপ, তাই বারান্দাই এখন হয়ে উঠেছে আঁকার ক্লাস, গানের স্কুল আর বিশ্ববীক্ষার অবজ়ার্ভেটরি। আর বাড়ির ছাদ? দে-দৌড় জীবনে যার চাবিটাই হারিয়ে যেতে বসেছিল, সেই ছাদই এখন শিশুদের মস্ত মাঠ, বাহারি টবে সাজানো নাচমঞ্চ। আবাসনের গ্যারাজে স্কিপিংয়ের অভ্যেস ছিল যে মেয়েটির, ছাদে আসতে তার সামনেই অবারিত বিস্ময়পথ। চিলেকোঠার স্তূপে সাত রাজার ধন আবিষ্কারের আনন্দ। রিড-ভাঙা হারমোনিয়াম, হলদে হিংসুটে দৈত্য, বাতিল ক্যাসেট, ভাঙা রথের চাকা, ছেঁড়া ঘুড়ি। ছাদ-বারান্দায় জীবন খুঁজে পাবি, ছুটে ছুটে আয়। ছবি: তথাগত সিকদার

এসো, সুসংবাদ

পনেরো বছর হল চলে গিয়েছেন ভাস্কর চক্রবর্তী (১৯৪৫-২০০৫)। ১৯৭১-এ বেরিয়েছিল তাঁর প্রথম কবিতাবই শীতকাল কবে আসবে সুপর্ণা। গত শতকের ষাটের দশক জুড়ে প্রকাশিত, সুভাষ মুখোপাধ্যায়, বুদ্ধদেব বসু, বিষ্ণু দে, বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, বিনয় মজুমদার, শক্তি-সুনীল-শঙ্খ-উৎপলকুমার-অলোকরঞ্জনের লেখা আইকনিক কাব্যগ্রন্থগুলির সারিতে বছর ছাব্বিশের তরুণ যোগ করেছিলেন নিজস্ব এক ভাষা, প্রারম্ভিক ভাষণে মনে করিয়ে দিলেন জয় গোস্বামী। বললেন, তাঁর কবিতার কেন্দ্রে আছে এক খাঁটি বিষাদ, রাগসঙ্গীতে সা-এর মতো— ধ্রুবক, অবিসংবাদিত— ‘‘তাঁর সঙ্গে দেখা হলে মনে হত সকালবেলার সামনে দাঁড়িয়ে আছি, এক বিন্দু প্রতিহিংসা বা ঈর্ষাহীন।’’ ২৩ জুলাই তাঁর প্রয়াণ দিবসের সন্ধ্যায় প্রতিবিম্ব, ভালো বই, দশমিক ও ঋক প্রকাশনী এক ফেসবুক-অনুষ্ঠানে স্মরণ করল এসো সুসংবাদ এসো-র কবিকে। ছিল কবিপত্নী বাসবী চক্রবর্তীর স্বাগত ভাষণ, কবির কবিতা ও গদ্য পাঠ। ভাস্কর চক্রবর্তী স্মৃতি পুরস্কার পেলেন কুন্তল মুখোপাধ্যায়। স্মারক বক্তৃতায় বিশিষ্ট চিকিৎসক ও শিল্প সমালোচক সঞ্জয় ঘোষ বললেন ভাস্করের কবিতার চিত্রকল্প নিয়ে। চিত্রকলা থেকে চলচ্চিত্র, সাহিত্য ও সমাজের আতসকাচে কবিতা ও কবিকে দেখার এ এক দরদি প্রয়াস।

নবপল্লব

প্রথমে উৎসেচক আর ফাঙ্গিসাইড দিয়ে শিকড়ের শুশ্রূষা। পরে ক্রেন বা কপিকল দিয়ে দেহটা টেনে তোলা। দরকারে শাখাপ্রশাখা একটু ছেঁটে দেওয়া। এবং, কিমাশ্চর্যম্‌! এক মাসও পেরোয়নি, শুকনো ডালে কচি সবুজ পাতার আগমন। শহরে বৃক্ষরোপণ নিয়মিত ঘটনা, কলকাতাকে আর একটু সবুজ ও সহনীয় করে তুলতে নতুন চারা লাগান নাগরিকবৃন্দ। কিন্তু যে মহাবৃক্ষেরা এত দিন ধরে হাঁপ-ধরা শহরকে নিয়মিত অক্সিজেন জুগিয়ে চলেছে, তাদের খোঁজ রাখে না কেউ। ছক ভেঙেছে ‘বিলুপ্ত’ ফোরাম এবং যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। আমপানের দিন মেহগনি-বট-অশ্বত্থ ঘেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ক্যাম্পাসে উপড়ে গিয়েছিল ২৩১টি গাছ। তার মধ্যে ৮১টি গাছকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। গাছ লাগালে যেমন প্রাণ বাঁচে, গাছ বাঁচালেও। এ বিশ্বকে শিশুর শ্বাসযোগ্য করতে দুই-ই দাওয়াই।

‘ডাউন গাড়ী আবশ্যক হইলে থামিবে’

কলকাতা শহর থেকে গঙ্গা নদীটাকে মুছে দেওয়া যায় কি? কেড়ে নেওয়া যায় ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল? এমন প্রস্তাবে আঁতকে ওঠেন যদি, তবে কলকাতার বুক থেকে ট্রামলাইনগুলো উপড়ে ফেলার খবরে শহরবাসীর হৃদয় পুড়ছে না কেন? মহানগরীকে তিলোত্তমা করেছে যারা, তাদেরই অন্যতম দু’কামরার ট্রাম। ১৮৭০-এর দশকে প্রথম যখন ট্রাম নেমেছিল পথে, তাকে টেনে নিয়ে যেত ঘোড়া। তার পর এল বাষ্পচালিত ট্রাম। বিদ্যুৎবাহী ট্রাম চলতে শুরু করল ১৯০২ সালে। বিংশ শতাব্দী জুড়ে এই শহরে রাজত্ব করেছে ট্রাম। সকালের ট্রামে গঙ্গাস্নানে গিয়েছেন বৃদ্ধ পিতামহ, ন’টার ট্রামে চড়েছেন ডালহৌসির অফিসবাবু, দুপুরের ফাঁকা ট্রামের জানলায় খিলখিল হেসেছে যুগল। জীবনানন্দ দাশের ভাষায় ট্রাম ‘ফিলসফার্স কার’। সত্তর দশকের আগুনঝরা দিনে ট্রাম পোড়াতে মারমুখী যুবকদের সামনে অবিচল অধ্যাপক অম্লান দত্ত বলেছিলেন, তাঁর গন্তব্য এখনও দূরে, ট্রাম থেকে নামবেন না তিনি। এ ভাবেই সময়ের রক্ত আর মুক্তো কুড়োতে কুড়োতে নতুন শতকের দিকে এগোচ্ছিল ট্রাম। তখনই পাতালে জাগল মেট্রো রেল। তার সুড়ঙ্গ গড়তে, শহর খুঁড়ে তুলে ফেলা হল ট্রামলাইন।

বারে বারেই কোপ পড়েছে ট্রামযাত্রায়। গতি শ্লথ, যানজট বাড়ায়। কিন্তু সে যে পরিবেশবান্ধব, খেয়াল রাখে না কেউ। কদর বুঝে মেলবোর্ন, জ়ুরিখ, আমস্টারডামের রাস্তা যখন ট্রামলাইনে সাজছে, কলকাতা হাঁটছে পিছনে। ট্রাম গেলে না কি থরথর কাঁপে, তাই বুড়ো উড়ালপুল থেকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে তাকে। নতুন উড়ালপুলের নকশায় ট্রাম নেই। কলকাতায় গত দশ বছরে ট্রাম রুটের সংখ্যা ৩৭ থেকে কমে হয়েছে আট। ব্যস্ত শহরের এক কোনায় মনখারাপ করে দাঁড়িয়ে থাকে পুরনো লোহার ঢালাইয়ের ফলক— ‘এইখানে ডাউন গাড়ী আবশ্যক হইলে থামিবে’...

এমন দুঃসময়েই সব তছনছ করল আমপান। ওভারহেড তার ছিঁড়ল, লাইনে গাছ পড়ল। সব সামলে আবারও ট্রাম চলছে বালিগঞ্জ-টালিগঞ্জ, রাজাবাজার-হাওড়া, গড়িয়াহাট-এসপ্লানেড রুটে। করোনাকালে বেড়েছে যাত্রীও। দেবাশিস ভট্টাচার্যের সভাপতিত্বে ক্যালকাটা ট্রাম ইউজ়ার্স অ্যাসোসিয়েশন-এর সাগ্নিক গুপ্ত, মহাদেব শী, সৌরশঙ্খ মাজিরা সরকারের কাছে ট্রামের পুনরুজ্জীবন নিয়ে নানা প্রস্তাব দিয়েছেন— এক বগির দ্রুত গতির ট্রাম চালানো, কলকাতা স্টেশনের সঙ্গে বেলগাছিয়া ট্রাম ডিপোর সংযুক্তিকরণ। ট্রাম রক্ষায় ট্রামযাত্রা, সেভ কলকাতা ট্রাম, কলকাতা বাস-ও-পিডিয়া’র মতো ফেসবুক গ্রুপের সদস্যরা পাশে চাইছেন শহরবাসীকেও।

হয়তো ফিরবে শ্যামবাজার-এসপ্লানেড রুটের বিখ্যাত পাঁচ নম্বর ট্রাম। ফিরবে এসপ্লানেড-খিদিরপুর পরিষেবাও। না কি ফিরবে না? থেকে যাবে সাদা-কালো বাংলা ছবির দৃশ্যে, মহীনের ঘোড়াগুলি-র ‘ভেসে আসে কলকাতা’ গানে ‘স্মৃতির ভেতর ট্রামের ধ্বনি বিবাগী সুর’ হয়ে? শুধু স্মৃতিমেদুর হলেই চলবে না, কলকাতাকে ট্রামে উঠে বসতে হবে। নইলে, ভবিষ্যৎ প্রজন্ম গাইবে কী করে, ‘চল রাস্তায় সাজি ট্রামলাইন’!

ছবি: দেশকল্যাণ চৌধুরী

অন্য বিষয়গুলি:

Covid-19 Korcha Coronavirus Lockdown Health
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy