টালা সেতু।—ফাইল চিত্র।
অবশেষে টালা সেতুর নীচের জলের পাইপলাইন সরানোর সিদ্ধান্ত হল। সেতুর নীচের ৩০ এবং ১২ ইঞ্চির জলের পাইপলাইন সরানোর বিষয়ে কলকাতা পুরসভা ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে কথাও বলেছে।
টালা সেতু ভাঙা বা তা নতুন করে তৈরির ক্ষেত্রে মূল সমস্যা ছিল টালা ট্যাঙ্কের জলের লাইন। বহু পুরনো সেই পাইপলাইন অক্ষত রেখে কী ভাবে সেতুর কাজ করা যাবে, এত দিন সে পথের সন্ধান করছিলেন রাজ্য সরকারের বিশেষজ্ঞেরা। সেই জটিল সমস্যা মিটিয়ে এক বছরের সময়সীমায় নতুন সেতু কী ভাবে হবে, তা নিয়ে চিন্তিত প্রশাসনিক কর্তাদের অনেকেই।
প্রশাসন সূত্রের খবর, টালায় পুরনো সেতুর নীচে থাকা জল, নিকাশি এবং বিদ্যুতের লাইনগুলির (ইউটিলিটি সার্ভিস) মধ্যে সবচেয়ে ভাবাচ্ছে টালা ট্যাঙ্কের জলের লাইন। ওই এলাকায় মূলত চার ধরনের জলের পাইপ আছে— ৭২, ৪৮, ৩০ এবং ১২ ইঞ্চির। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ৭২ এবং ৪৮ ইঞ্চির পাইপলাইন। টালার পুরনো সেতু ভাঙা অথবা নতুন সেতু তৈরির সময়ে এই পাইপগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা ছিল। তাই কী ভাবে সেগুলি বাঁচানো যায়, সেই চর্চাই চলছিল পূর্ত দফতর এবং কলকাতা পুরসভার মধ্যে। সম্প্রতি পুরসভা জানিয়ে দিয়েছে, ৭২ এবং ৪৮ ইঞ্চির পাইপ লাইনের অবস্থান বদল অসম্ভব। অর্থাৎ, সেগুলি রেখেই সেতুর কাজ করতে হবে। এই পরিস্থিতিতে গত বৃহস্পতিবার পূর্ত দফতর এবং কলকাতা পুরসভার কর্তাদের নিয়ে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পরেই পুরসভা ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ৭২ বা ৪৮ ইঞ্চির পাইপ লাইন সরানো না গেলেও ৩০ এবং ১২ ইঞ্চির পাইপ লাইনের অবস্থান বদল করা হবে। এ বার বাকি দায়িত্ব নিতে হচ্ছে পূর্ত দফতরকেই।
দফতর সূত্রের খবর, এই পরিস্থিতিতে ৭২ বা ৪৮ ইঞ্চির পাইপ লাইনের অবস্থান মাথায় রেখে সেতু ভাঙা এবং নির্মাণের কাজ হবে। ফলে নকশা কিছুটা পরিমার্জন হতে পারে। সংশ্লিষ্ট মহলের ব্যাখ্যা, একটি সেতু একাধিক স্তম্ভের উপরে দাঁড়িয়ে থাকে। সেতুর দৈর্ঘ্য, প্রস্থ, উচ্চতা সবকিছু মাথায় রেখে এক একটি স্তম্ভের মধ্যে দূরত্ব স্থির হয়। নতুন টালা সেতুর নকশায় স্তম্ভগুলির মধ্যের সেই দূরত্বই অদলবদল হতে পারে। দফতরের এক কর্তার কথায়, ‘‘ধরা যাক, স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে দু’টি স্তম্ভের মধ্যে ৩০ মিটার দূরত্ব রাখা হত। জলের পাইপ লাইন বাঁচাতে সেই দূরত্ব ১৫ বা ৪৫ মিটার করা যায় কি না, সেই ভাবনা চলছে। এলাকায় গ্যাস পরিবহণের পাইপলাইনও রয়েছে। যদিও তা সক্রিয় নয়। ফলে সেগুলি ভাঙা পড়লেও সমস্যা নেই। কিন্তু জলের লাইন অক্ষত রাখতে হবে। তা ছাড়া রেললাইনের অবস্থান বদলও সম্ভব নয়।’’
এই কারণে এক বছরের মধ্যে এত কাজ কী ভাবে করা সম্ভব, সেই প্রশ্ন উঠছে। প্রশাসনের এক জনের কথায়, ‘‘এ সব খুঁটিনাটি হিসেবের কাজে তাড়াহুড়ো সম্ভব নয়। সেতু নির্মাণের গুণগত মানের সঙ্গেও আপস করা যাবে না। সব ভেবেই কাজ করতে হবে।’’
সূত্রের খবর, ওই এলাকায় থাকা পাইপলাইনগুলির অবস্থানের ‘ম্যাপিং’ চলছে। কারণ, ওই সব পাইপ লাইনের নকশা পুরনো। ফলে নকশায় থাকা পাইপলাইনের অবস্থান কতটা নিখুঁত তা-ই খতিয়ে দেখছেন ইঞ্জিনিয়াররা। তা শেষ হলে নতুন সেতুর স্তম্ভের দূরত্ব নির্ধারণের কাজ চূড়ান্ত হবে।
পুরসভা সূত্রের খবর, ওই এলাকায় নতুন আলো লাগানো-সহ পরিষেবামূলক কাজ শুরু হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy