Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

গুপ্ত নালার জলে দূষিত সরোবর, জানে না কেউ

গত বছর মাছ ভেসে ওঠার পরে দু’বার সুভাষ সরোবরের জলের নমুনা পরীক্ষা হয়। সেপ্টেম্বরেই জানা গিয়েছিল সুভাষ সরোবরের জলে কলিফর্ম ব্যাপক হারে মিশে রয়েছ।

সম্প্রতি জানা গিয়েছিল সুভাষ সরোবরে মিশছে দূষিত জল। ফাইল চিত্র

সম্প্রতি জানা গিয়েছিল সুভাষ সরোবরে মিশছে দূষিত জল। ফাইল চিত্র

কৌশিক ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০১৯ ০২:০৭
Share: Save:

গত বছর মাছ ভেসে ওঠার পরেই সন্দেহ তৈরি হয়েছিল পরিবেশকর্মীদের। কিন্তু দফতরের আধিকারিকেরা দাবি করেছিলেন সরোবরের জলে দূষণ নেই। কিন্তু সেই দাবি মিথ্যে প্রমাণিত হল পরিবেশ দফতর জলের নমুনা পরীক্ষার পরে। জানা গেল, সুভাষ সরোবরের জলে প্রচুর পরিমাণে কলিফর্ম রয়েছে। যার উৎস সরোবরের জলে বাইরের লোকালয় থেকে এসে পড়া মলমূত্রবাহী দূষিত জল। কলিফর্মের রিপোর্ট পাওয়ার পরে তড়িঘড়ি সরোবরের দায়িত্বে থাকা কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (কেএমডিএ) শনাক্ত করেছে একটি নিকাশি নালা। যেটির মধ্যে দিয়েই দিনের পর দিন দূষিত জল সুভাষ সরোবরে মিশেছে। তবে প্রশ্ন উঠেছে, কেন এই নালার সন্ধান আরও অনেক আগেই পেল না কেএমডিএ কিংবা কলকাতা পুরসভা।

গত বছর মাছ ভেসে ওঠার পরে দু’বার সুভাষ সরোবরের জলের নমুনা পরীক্ষা হয়। সেপ্টেম্বরেই জানা গিয়েছিল সুভাষ সরোবরের জলে কলিফর্ম ব্যাপক হারে মিশে রয়েছ। তা সত্ত্বেও ছটপুজোর সময়ে কেএমডিএ-র আধিকারিকেরা দাবি করেছিলেন সুভাষ সরোবরের জলে দূষণ নেই। সুভাষ সরোবরে ছটপুজোয় কোনও আপত্তিও জানায়নি কেএমডিএ।

নালার হদিস পাওয়ার পরে কেএমডিএ জানিয়েছে, দূষিত জল সরোবরে পড়া আটকাতে নালার মুখ বন্ধ করার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। নালা বন্ধ করতে লকগেটের মতো ব্যবস্থা করা হবে। যাতে অতিরিক্ত বৃষ্টির সময়ে সরোবরের বাড়তি জল ওই নালা দিয়ে বার করে দেওয়া গেলেও, নালা দিয়ে দূষিত জল যেন সরোবরে পড়তে না পারে। কেএমডিএ-র এক আধিকারিক জানান, নালাটি কলকাতা পুরসভা এলাকার বৃষ্টির জল বহন করে। তবে সেটি কবে তৈরি, সে সম্বন্ধে তাঁরা কিছু জানেন না। কেএমডিএ-র আধিকারিক সুধীন নন্দী বলেন, ‘‘সুভাষ সরোবরের জল বার করতেই সেটি তৈরি হয়েছিল। কিন্তু সেটি দিয়ে কী করে দূষিত জল সরোবরে পড়তে শুরু করল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

কেএমডিএ-র দাবি, বর্ষায় ওই নালার জলের প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে বাইরের দূষিত জল সরোবরে মিশতে পারবে না। নিকাশির জল সরোবরে মেশা আটকানো ছাড়াও সেখানে স্নান করা, কাপড় কাচা, বাসন ধোয়ার উপরেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হবে। মাসখানেকের মধ্যেই এ সম্বন্ধে সেখানে নোটিস বোর্ডও বসানো হবে।

ঘটনার প্রসঙ্গে শুনে কলকাতা পুরসভার নিকাশি দফতরের মেয়র পারিষদ তারক সিংহ বলেন, ‘‘কেএমডিএ আমাদের কিছুই জানায়নি। সরোবরের দূষণ ঠেকাতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ কলকাতা পুরসভার ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূলের দীর্ঘদিনের কাউন্সিলর পবিত্র বিশ্বাস জানান, ওই নালার প্রসঙ্গে তিনি শুনেছিলেন। কিন্তু তার বেশি নালাটি সম্বন্ধে তাঁর আর কোনও ধারণা নেই। কেএমডিএ সূত্রে খবর, এই মুহূর্তে সুভাষ সরোবরের জলে ক্ষারের

পরিমাণও বেড়েছে।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, এই জলের নমুনায় ক্ষারের মাত্রাও বেশি। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, সরোবর চত্বরের একাংশ সব সময়ে খোলা থাকায় বহিরাগতেরা সেখানে ঢুকে অনেক সময়ে জল নোংরা করেন। সেই অংশ ঘিরে দেওয়া হবে বলেও আধিকারিকেরা জানিয়েছেন।

অন্য বিষয়গুলি:

Subhas Sarovar Hidden Drain Pollution
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy