এই উড়ালপুল থেকেই ঝাঁপ মারেন ওইনাম রঞ্জন সিংহ। —ফাইল চিত্র।
খাস কলকাতা বিমানবন্দর ও আশপাশে চার দিন ধরে কার্যত অবাধে ঘোরাঘুরি করছিলেন মাঝবয়সি এক ব্যক্তি। নিরাপত্তা বেষ্টনীর কড়াকড়ি সত্ত্বেও তাঁর চলাফেরা নিয়ে কার্যত তাপউত্তাপ ছিল না কারও। রবিবার, প্রজাতন্ত্র দিবসের দুপুরে দমদমে নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উড়ালপুল থেকে ঝাঁপ দিয়ে তাঁকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা গেল। এ দিন বিকেল সওয়া তিনটে নাগাদ দুর্ঘটনাটি ঘটে। পরে ওই ব্যক্তিকে হাসপাতালে ‘মৃত’ বলে ঘোষণা করা হয়।
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের তরফে প্রাথমিক ভাবে এটি আত্মহত্যার ঘটনাই বলা হচ্ছে। পুলিশ এবং সিআইএসএফ সূত্রেও ওই ব্যক্তির হাবভাব দেখে তিনি মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন বলে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। কিন্তু বিমানবন্দরের সুরক্ষার ফাঁক গলে কী ভাবে ওই ব্যক্তি ঝাঁপ দিতে পারলেন, সে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
গত ২৩ জানুয়ারি ইম্ফল থেকে বিমানে কলকাতায় নেমেছিলেন বছর পঞ্চাশের ওই ব্যক্তি। নাম ওইনাম রঞ্জন সিংহ। কিছুটা অসংলগ্ন হাবভাব দেখে তাঁর সঙ্গে কথাও বলেন সিআইএসএফ আধিকারিকেরা। অনেক চেষ্টা করেও তাঁকে বাড়ি ফেরানো যায়নি। পরিবার থেকেও কেউ খোঁজ নিতে আসেননি। কিছু প্রাথমিক চিকিৎসার পরে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু এর পরেও কী ভাবে বিমানবন্দর তল্লাটে ওই ব্যক্তি ফিরে এলেন এবং উড়ালপুল থেকে ঝাঁপ দিলেন তার সদুত্তর কারও কাছেই মেলেনি। সন্দেহজনক ভাবে এক ব্যক্তিকে ঘোরাফেরা করতে দেখেও কেন বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ যথোচিত গুরুত্ব দিলেন না, সে প্রশ্নও উঠছে।
ঘটনা ঘটে যাওয়ার পরে অবশ্য সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখার কথা বলা হচ্ছে। সাধারণত বিমানবন্দরে মূল টার্মিনালের বাইরের অংশে আইনশৃঙ্খলার সমস্যা হলে পুলিশ এবং সিআইএসএফ সমন্বয় রেখে কাজ করে। এ ক্ষেত্রে সমন্বয়ে ঘাটতি ছিল কি না সেই প্রশ্নও উঠছে।
কলকাতা থেকে ছেড়ে যাওয়া উড়ানের যাত্রীদের চলাচলের নির্দিষ্ট উড়ালপুল (ডিপার্চার ফ্লাইওভার) থেকে বছর পঞ্চাশের ওই ব্যক্তি আচমকা লাফ দিয়ে পড়েন বলে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের তরফে খবর। সিআইএসএফ কর্মীদের নজরে আসা মাত্র তাঁরা ছুটে আসেন। অন্য শহর থেকে বিমানবন্দরে আগত যাত্রীরা নীচের যে পথ দিয়ে বেরিয়ে আসেন (অ্যারাইভাল) সেই পথের উপরে ওই ব্যক্তিকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। পরীক্ষা করে বিমানবন্দরের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক ওই ব্যক্তিকে নিকটবর্তী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন। বিমানবন্দর থানার সাহায্য নিয়ে বারাসত স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে ‘মৃত’ বলে ঘোষণা করেন।
পুলিশ এবং সিআইএসএফের আধিকারিক সূত্রের দাবি, ওই ব্যক্তি মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন বলে মনে করা হচ্ছে। এ দিন ওই ব্যক্তি আচমকা ডিপার্চার ফ্লাইওভারের রেলিংয়ে চড়ে বসেন। কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই তিনি ঝাঁপ দেন বলে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের তরফে দাবি। কোন পরিস্থিতিতে কী ভাবে ওই ব্যক্তি আচমকা ডিপার্চার ফ্লাইওভারের রেলিংয়ে উঠে পড়লেন তা জানতে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যাত্রীতালিকার তথ্য মিলিয়ে ওই ব্যক্তির পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা চলছে। পুলিশের পক্ষ থেকেও এ নিয়ে খোঁজখবর করা হচ্ছে। তবু লোকটির পরিণতি কী হতে পারে তা বুঝে পদক্ষেপ করায় সিআইএসএফ বা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের খামতি থেকে গিয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy