Advertisement
E-Paper

‘ভগবানের সঙ্গে দেখা হয়ে গিয়েছে!’ জামিন পেয়ে বিরাট-ভক্ত

খেলা চলাকালীন অনুপ্রবেশ-সহ একাধিক অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতার করে ময়দান থানা। পুলিশ হেফাজত শেষে সোমবার ঋতুপর্ণকে আদালতে হাজির করা হয়।

ঋতুপর্ণ পাখিরা।

ঋতুপর্ণ পাখিরা। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০২৫ ০৯:১৮
Share
Save

ইডেন গার্ডেন্সের মাঠে ঢুকে বিরাট কোহলির পা ছোঁয়ার ঘটনায় গ্রেফতার ঋতুপর্ণ পাখিরাকে জামিন দিল কলকাতা সিজেএম আদালত। সোমবার বিচারক কৌস্তুভ মুখোপাধ্যায় হাজার টাকার বন্ডে তাঁকে শর্তসাপেক্ষে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেন। শর্ত ২০২৫-এর আইপিএল চলাকালীন ইডেনে ঢুকতে পারবেন না ঋতুপর্ণ। ইডেন-সংলগ্ন এলাকাতেও যেতে পারবেন না তিনি। পাশাপাশি আদালতের পর্যবেক্ষণ, ইডেনের নিরাপত্তা লঙ্ঘনের এই ঘটনা কলকাতা পুলিশের নিরাপত্তা ব্যবস্থার আসল ছবি তুলে ধরেছে। এটা কলকাতা পুলিশের চোখ খুলে দেওয়ার মতো ঘটনা। এই ঘটনা থেকে কলকাতা পুলিশ শিক্ষা নিক।

শনিবার সন্ধ্যায় ইডেনে আইপিএল-এর উদ্বোধনী ম্যাচে কলকাতা এবং বেঙ্গালুরুর খেলা চলাকালীন মাঠে ঢুকে পড়ে বিরাট কোহলির পা জড়িয়ে ধরেন পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের বাসিন্দা, ১৮ বছরের ঋতুপর্ণ। এ দিন জামিন পেয়ে আদালত চত্বরে ঋতুপর্ণ বলেন, ‘‘কোনও আফসোস হচ্ছে না। ভগবানের সঙ্গে দেখা হয়ে গিয়েছে। আর কী চাই!’’

খেলা চলাকালীন অনুপ্রবেশ-সহ একাধিক অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতার করে ময়দান থানা। পুলিশ হেফাজত শেষে সোমবার ঋতুপর্ণকে আদালতে হাজির করা হয়। সরকারি আইনজীবী তারকনাথ মণ্ডল এবং রাধানাথ রং অভিযুক্তকে ফের পুলিশি হেফাজতে পাঠানোর আবেদন জানান। বিচারক বলেন, ‘‘পুলিশ হেফাজতে নিয়ে কী করবেন? ১৯৮৩-র ক্রিকেট ম্যাচ দেখেননি। একটা করে ইউকেট পড়ার পরে দর্শকেরা মাঠে ঢুকে পড়তেন।’’ সরকারি আইনজীবীরা বলেন, ‘‘এই ঘটনায় বিরাটের মনোসংযোগ ছিন্ন হয়েছে। তাঁর রান করতে অসুবিধা হয়েছে। আগামী ৩ তারিখ ফের বিরাটের খেলা রয়েছে। ধৃতের উদ্দেশ্য কী তা, জানতে হবে।’’ তাঁরা আরও বলেন, ‘‘ধৃতের কাছে এইচ ব্লকের টিকিট ছিল। তবু তিনি জি ব্লক দিয়ে ঢুকতে যাওয়ায় পুলিশ তাঁকে ফেরত পাঠিয়ে দেয়। পরে জি ব্লকের পুলিশ অন্য কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়লে ঋতুপর্ণ সেখান দিয়ে মাঠে ঢুকে পড়েন। ক্রিমিনাল ফোর্স অ্যাপ্লাই করেছেন। যাঁর উপরে ক্রিমিনাল ফোর্স অ্যাপ্লাই করা হয়েছে, তাঁর বক্তব্য নেওয়া হয়েছে।’’ বিচারক জানতে চান, বিরাট কোহলির বক্তব্য নেওয়া হয়েছে?

ঋতুপর্ণের আইনজীবী মহম্মদ শাহজাদ হোসেন এবং মহম্মদ হাসনাইন হোসেন আনসারি ঋতুপর্ণের জামিনের আর্জি জানিয়ে বলেন, ‘‘আবেগ এবং অপরাধকে এক করা উচিত নয়। বলা হচ্ছে বিরাট কোহলির অসুবিধা হয়েছে। বিরাট কোহলির বক্তব্য আছে?’’ অভিযুক্ত কী করেন, বিচারক তা জানতে চাইলে সমস্বরে আইনজীবীরা বলেন, পড়াশোনা করেন। তিনি এক জন ক্রিকেট প্রেমিক। বিচারক ঋতুপর্ণকে প্রশ্ন করেন, ‘‘কী পড়ো?’’ ঋতুপর্ণ বলেন, ‘‘উচ্চমাধ্যমিক দিয়েছি।’’

দুই পক্ষের সওয়াল-জবাব শোনার পরে বিচারক বলেন, ‘‘অভিযুক্তের কাছে কোনও অস্ত্র বা আপত্তিকর জিনিস পাওয়া যায়নি। অভিযুক্তকে পুলিশি হেফাজত বা জেল হেফাজতে রাখার যৌক্তিকতা নেই।’’ এর পরেই ঋতুপর্ণের জামিন মঞ্জুর করেন বিচারক। এ দিন জামিন পাওয়ার পরে ঋতুপর্ণের দাবি, পা জড়িয়ে ধরার পরে বিরাট তাঁর নাম জানতে চান। তাঁর কথায়, ‘‘নাম বলার পরে বিরাট বলেন, পালা এখান থেকে। নিরাপত্তা রক্ষীদেরও আমাকে কিছু না করার জন্য বলেন।’’ কিন্তু তিনি তো অন্যায় করেছেন, এটা কি ঠিক করেছেন? বিরাট-ভক্তের জবাব, ‘‘অন্যায় করেছি। কিন্তু বিরাটকে প্রণাম করার ইচ্ছে ছিল। তাই এটা করে ফেলেছি।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Eden Gardens

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}