প্রতীকী ছবি।
চাপা উত্তেজনা চলছিল কিছু দিন ধরেই। একদল কথা বলে রেখেছিল একটি সরকারি হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কে। অন্য দল আবার কথা দিয়ে ফেলেছে আর একটি মেডিক্যাল কলেজের লোকেদের। একই এলাকায় রক্তদান শিবির নিয়ে দুই নেতা-দাদার গোষ্ঠীর মধ্যে প্রায় হাতাহাতি হওয়ার উপক্রম! পরিস্থিতি সামলাতে শেষে পুলিশকে যেতে হয়। গত রবিবার একটি রক্তদান শিবির হয়ে গেলেও, পর পর দুই শিবিরের নেপথ্যে আদতে কোন দলের লোকজন রয়েছেন, তা এখনও স্পষ্ট হয়নি বাসিন্দাদের একাংশের কাছেও। তাঁরা প্রশ্ন করছেন, ‘‘রক্ত না হয় দিলাম! কিন্তু কার পিছনে কে, সেটা জানব কেমন করে?’’
অন্য বছরের মতো এ বারও প্রবল গরমে কমেছে রক্তদান শিবিরের সংখ্যা। অভিযোগ, রক্তের জোগান কমায় বহু রোগীর বাড়ির লোককে বলা হচ্ছে, দাতা না আনলে রক্ত মিলবে না। সরকারি হাসপাতালে রক্ত না পেয়ে অনেককেই ছুটতে হচ্ছে বেসরকারি সংস্থায়। সেখানে মোটা টাকায় রক্ত বিক্রির অভিযোগও উঠছে। এই পরিস্থিতিতেও যেখানে যেটুকু শিবিরের আয়োজন হচ্ছে, সেখানেও কারা শিবির করবে, তা নিয়ে একাধিক রাজনৈতিক গোষ্ঠীর মধ্যে ‘প্রতিযোগিতা’ চলছে বলে অভিযোগ। একদল শিবির করার পরিকল্পনা করলে বিরুদ্ধ গোষ্ঠী এসে বলছে, ‘‘অতীতে বহু কাজ দেখিয়েছ। এখন এলাকার লোক আমাদের দাদাকে চান। তাই তাঁর ছেলেরাই ক্যাম্প করবে।’’
রক্তদান আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত এক ব্যক্তি জানালেন, এমনই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে কেশবচন্দ্র সেন স্ট্রিটে। ওই এলাকার একটি বস্তিতে গত রবিবার রক্তদান শিবির করেছে একটি গোষ্ঠী। আগামী ৫ জুন, রবিবার সেখানেই ফের রক্তদান শিবির করছে বিরুদ্ধ গোষ্ঠী। ওই ব্যক্তির কথায়, ‘‘যাঁরা প্রকৃত রক্ত দিতে ইচ্ছুক, তাঁরা সব দেখে আর এ সবের মধ্যেই ঢুকতে চাইছেন না।’’ রক্তদান আন্দোলনের আর এক কর্মী বললেন, ‘‘বেলগাছিয়ায় একটি শিবির হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেই শিবিরের কৃতিত্ব কে নেবে, তা নিয়ে এমন গন্ডগোল বাধল যে ব্লাড ব্যাঙ্কের লোকেরা গিয়েও খালি হাতে ফিরে এলেন।’’
এই পরিস্থিতির জন্য পুরভোটের পরে বিভিন্ন এলাকার বদলে যাওয়া রাজনৈতিক ‘সমীকরণ’-কেই দায়ী করছেন অনেকে। এমন বহু এলাকা রয়েছে, যেখানে নতুন পুর প্রতিনিধি এসেছেন। তাঁর দলবল এলাকার রাশ হাতে নিতে চাইছে। প্রাক্তন ও বর্তমানের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সেখানে প্রবল রেষারেষি চলছে। যা বহু ক্ষেত্রে গড়াচ্ছে মারামারি, বোমাবাজিতেও। তার প্রভাব থেকে বাদ পড়ছে না রক্তদান শিবিরও।
রক্তদান আন্দোলনের কর্মী অচিন্ত্য লাহা বললেন, ‘‘সম্প্রতি সরকারি জায়গায় না পেয়ে বেসরকারি জায়গা থেকে রক্ত নিতে হয়েছে এক পরিচিতকে। গরমের পাশাপাশি রাজনৈতিক অস্থিরতার জন্যও শিবির কম হচ্ছে।’’ জয়েন্ট ডিরেক্টর, ব্লাড সেফটি গোপালচন্দ্র বিশ্বাস বললেন, ‘‘কিছু জায়গায় রাজনৈতিক সমস্যা হচ্ছে ঠিকই। তবে এই পরিস্থিতি দ্রুত কেটে যাবে।’’ রক্তের জোগান নিয়ে তাঁর দাবি, ‘‘কিছু সমস্যা হয়। তবে রক্ত তো মজুত করে রাখার জিনিস নয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy