Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

এত দিন বাড়িতেই তো ছিল বিক্রম, বলছেন মা

পুলিশ বলছে, গত এক মাসের বেশি সময় ধরে মোবাইল বন্ধ রেখে বাড়ি থেকে উধাও হয়ে গিয়েছিলেন বিক্রম। কানাডায় যাওয়ার জন্য ভিসার আবেদনও করেছিলেন।

বিক্রম চট্টোপাধ্যায়

বিক্রম চট্টোপাধ্যায়

পারিজাত বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০১৭ ০৩:২৪
Share: Save:

এত দিন বাড়ি ছেড়ে অন্য কোথাও যাননি অভিনেতা বিক্রম চট্টোপাধ্যায়। কসবার সুইনহো লেনের ফ্ল্যাটে পরিবারের সঙ্গেই ছিলেন। বন্ধুদের সঙ্গে মাঝেমধ্যে দেখা করতেও বেরিয়েছেন। শুক্রবার এমনই দাবি করেছেন তাঁর মা মল্লিকা চট্টোপাধ্যায়।

পুলিশ বলছে, গত এক মাসের বেশি সময় ধরে মোবাইল বন্ধ রেখে বাড়ি থেকে উধাও হয়ে গিয়েছিলেন বিক্রম। কানাডায় যাওয়ার জন্য ভিসার আবেদনও করেছিলেন।

সে দাবি খণ্ডন করে তাঁর মা এ দিন বলেন, ‘‘বিক্রম খুনি বা ধর্ষক নয় যে পালিয়ে যাবে। অন্য দেশে পালিয়ে যাওয়ার অভিপ্রায়ও তার ছিল না। পুলিশ তো ইচ্ছা করলেই বাড়িতে আসতে পারত, কিন্তু এক বারও আসেনি।’’ পুলিশের দাবি, বাড়ির লোকেদের ফোন করেও তাঁর খোঁজ মেলেনি। মল্লিকা বলেন, ‘‘পুলিশের তরফে এক বারও কেউ আমাদের ফোন করেননি।’’

প্রভাবশালী মহলে তদ্বির করে বিক্রমকে বাঁচানোর চেষ্টা হচ্ছে বলে যে অভিযোগ উঠেছে, সে বিষয়ে মল্লিকাদেবীর বক্তব্য, ‘‘তা হলে তো আমার ছেলের বিরুদ্ধে ৩০৪ ধারা আনাই হতো না।’’

সুইনহো লেনের অপ্রশস্ত রাস্তার ধারে যে চার তলা ফ্ল্যাটে চট্টোপাধ্যায় পরিবার থাকে, তার নামটাও বিক্রমের মায়ের নামে— ‘মল্লিকা’। তিন ও চার তলা নিয়ে বিক্রমরা থাকেন। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে তিনি গ্রেফতার হওয়ার পর শুক্রবার দুপুরে সেখানে গিয়ে দেখা গেল গ্রিলের গেটে তালা। বেল বাজাতেই ভিতর থেকে তির বেগে দুই নেড়িকুকুর ছুটে এসে চিৎকার শুরু করল। এলেন এক গৃহসহায়িকাও। বিক্রমের বাবা বা মায়ের সঙ্গে কথা বলতে চাই শুনে তিনি ঘরে ঢুকে গেলেন। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে মধ্যবয়সি যে মহিলা বেরিয়ে এলেন, তাঁর মুখের সঙ্গে বিক্রম চট্টোপাধ্যায়ের খুবই সাদৃশ্য। গেট না-খুলে ভিতর থেকেই হাত জোড় করে বললেন— ‘‘আমি মল্লিকা চট্টোপাধ্যায়। বিক্রমের মা। ক্ষমা করবেন, বেশি কিছু বলতে পারব না। আইনজীবীর বারণ রয়েছে।’’

আরও পড়ুন:‘আমি কী করেছি? কেন আমায় ধরছেন?’

জানালেন, আনন্দে ছিল তাঁদের পরিবার। ছেলে বিক্রম, মেয়ে মেঘা। তিনি নিজে পশু-কল্যাণে যুক্ত একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থায় কাজ করেন। বাড়িতে পোষ্য রয়েছে দু’টি নেড়ি আর তিনটি ল্যাব্রাডর। স্বামী বিজয় চট্টোপাধ্যায় প্রোমোটার। কিন্তু সব এলোমেলো হয়ে গেল সোনিকার মৃত্যুর পরে। ‘‘গত দু’ মাস কী ভাবে কাটাচ্ছি তা আমরাই জানি। বিক্রমের নতুন ছবি রিলিজ করলো। লিড রোল! কোথায় আনন্দ করবো, না মরমে মরে রয়েছি।’’ তাঁর প্রশ্ন— যাঁরা ‘জাস্টিস ফর সনিকা’ আন্দোলন করছেন তাঁরা কীসের বিচার চাইছেন? দুর্ঘটনা তো হতেই পারে। বিক্রম তো নিজেও মরে যেতে পারত?

বিক্রম মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালাচ্ছিলেন, এই অভিযোগ উড়িয়ে তাঁর মায়ের উক্তি, ‘‘পরীক্ষা করে পুলিশ মদ্যপ থাকার প্রমাণ পেয়েছে বলে তো শুনিনি।’’ পুলিশের ভূমিকায় অসন্তুষ্ট মল্লিকাদেবী বলেন, ‘‘সে এত দিন বাড়িতে রইল, অথচ ধরল না। হাইকোর্ট যে দিন ১৩ জুলাই মামলার ডেট দিল, সে দিন রাতেই ওকে গ্রেফতার করল। কেন?’’

বিক্রম মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালাচ্ছিলেন বলে যে অভিযোগ উঠেছে তা খণ্ডন করে তাঁর মায়ের উক্তি, ‘‘পুলিশ পরীক্ষা করে মদ্যপ থাকার প্রমাণ পেয়েছে বলে তো শুনিনি।’’ পুলিশের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ মল্লিকাদেবী বলেন, ‘‘ছেলে এত দিন বাড়িতে রইল, অথচ ধরল না। হাইকোর্ট যে দিন ১৩ জুলাই মামলার ডেট দিল, সে দিন রাতেই পুলিশ ওকে গ্রেফতার করল। কেন?’’ মল্লিকাদেবীর দাবি, বৃহস্পতিবার রাতে এক বন্ধু এসে বিক্রমকে তাঁর বাড়ি নিয়ে যাচ্ছিলেন। তখনই পুলিশ রাস্তায় একটি মলের সামনে বিক্রমকে গ্রেফতার করে।

তড়িঘড়ি কথা ক’টা বলেই ভেতরে যেতে চাইলেন মল্লিকাদেবী। হাত জোড় করে অনুরোধ করলেন, ‘‘দয়া করে আমার ছবি তুলবেন না!’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE