ছবি সংগৃহীত
২৪ ঘণ্টার মধ্যেই আক্রান্ত একই থানার ওসি এবং অতিরিক্ত ওসি। এ বার তাই ওই থানার দেখভালে বাইরের এক জন ইনস্পেক্টরকে দায়িত্ব দিল লালবাজার।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, শুক্রবার প্রথমে করোনায় সংক্রমিত হন টালা থানার অতিরিক্ত ওসি এবং এক অফিসার। শনিবার সংক্রমিত হন ওই থানারই ওসি। দুই প্রধান আধিকারিক সংক্রমিত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ায় প্রতিদিনের কাজ দেখভালের জন্যে চিৎপুর থানার অতিরিক্ত ওসিকে শনিবার রাতেই ওই থানার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
লালবাজার সূত্রের খবর, টালা থানার দুই আধিকারিক সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত চিৎপুর থানার অতিরিক্ত ওসিই কাজ সামলাবেন বলে ঠিক হয়েছে। এর আগে গার্ডেনরিচ থানার ওসি করোনা পজ়িটিভ হলে কাজ চালাতে সেখানে এক জন ইনস্পেক্টরকে পাঠানো হয়েছিল। আবার রবীন্দ্র সরোবর, বেনিয়াপুকুর, গরফা থানায় অফিসারদের মধ্যে করোনা সংক্রমণ ছড়ানোয় ওই সব থানায় অতিরিক্ত অফিসার পাঠানো হয়েছিল। তবে পুলিশের একটি সূত্র জানাচ্ছে, থানার দুই প্রধান আধিকারিকই একসঙ্গে করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার নজির নেই। শুক্রবার পজ়িটিভ রিপোর্ট আসার পরেই বাইপাসের এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন অতিরিক্ত ওসি। শনিবার সেখানে ভর্তি হন ওসিও।
সূত্রের খবর, ওই থানার অধীনে রয়েছে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। সেখানে আইনশৃঙ্খলাজনিত সমস্যায় হস্তক্ষেপ করতেই হয় আধিকারিককে। এ ছাড়া প্রতিদিন ওই হাসপাতালে
অস্বাভাবিক মৃত্যুর ময়না-তদন্তের নথিও ঠিক করতে হয় থানার অফিসারদের। এ সব কারণেই ওই থানায় এক ইনস্পেক্টর থাকা জরুরি, বলছে লালবাজার।
টালা থানার দুই আধিকারিক এবং আরও এক জন অফিসার করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পরে আরও সতর্ক কর্মীরা। থানা চত্বরে এক জন করে বিচার বা সাহায্যপ্রার্থীকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে। সেখানে টেবিল নিয়ে বসে এক পুলিশকর্মী। সাধারণ ডায়েরি বা অভিযোগ দেওয়া-নেওয়া হচ্ছে। আর জি করে মৃত ব্যক্তির নথি সেখানে বসেই ঠিক করে পরিবারকে
দেওয়া হচ্ছে।
এ দিকে প্রতিদিনের মতো পুলিশে সংক্রমণ ছড়ানোর খবর এসেছে রবিবারেও। এ দিন করোনা পজ়িটিভ হয়েছেন আরও এক ওসি। নারকেলডাঙা থানার সেই
ওসিকে বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
লালবাজার জানিয়েছে, পুলিশে সংক্রমণ দ্রুত ছড়াচ্ছে। শনি ও রবিবার চারু মার্কেট থানায় আট পুলিশকর্মী করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় সেখানে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ১৮। রবিবার রাত পর্যন্ত হেস্টিংস থানার ১০ জন আক্রান্ত। গত সপ্তাহে ওই থানারই এক কনস্টেবলের মৃত্যু হয়েছে করোনায়। এখনও পর্যন্ত গোয়েন্দা বিভাগের ৩৬ জন সংক্রমিত। লালবাজারে ট্র্যাফিক-সহ অন্য বিভাগেও সংক্রমণ ছড়িয়েছে। তা রুখতে বিভিন্ন বিভাগে পুলিশকর্মীদের হাজিরার উপরে নিয়ন্ত্রণ জারি হয়েছে। ন্যূনতম কর্মী ও অফিসার নিয়ে সব বিভাগে কাজ চালানো হচ্ছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর।
শনিবার কলকাতার পুলিশ কমিশনার টুইট করে পুলিশের সঙ্গে নাগরিকদের সহযোগিতা করার আবেদন করেছেন। টুইটে লিখেছেন,“করোনার বিরুদ্ধে অক্লান্ত লড়াই চালাচ্ছেন কলকাতা পুলিশের সর্বস্তরের কর্মীরা। করোনা-যুদ্ধে আমরা হারিয়েছি কয়েক জন নির্ভীক সহকর্মীকে। অনুরোধ, আমাদের সঙ্গে সহযোগিতা করুন। মাস্ক পরুন, দূরত্ব-বিধি মেনে চলুন। অযথা বাইরে বেরোবেন না।”
রবিবার কলকাতা পুলিশে ৩৯ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এই নিয়ে বাহিনীতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৯৮৭। তবে অর্ধেকের বেশি সুস্থ হয়েছেন বলে লালবাজার জানিয়েছে। শারীরিক দুর্বলতার জন্য সুস্থ হয়েও কাজ যোগ দিতে প্রচুর সময় লেগে যাচ্ছে। ফলে থানা এবং ট্র্যাফিক পুলিশে দিনের কাজ সামলাতে কর্মীর অভাব হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy