অকুস্থল: রেড রোড সংলগ্ন এই জায়গায় ঘটে ছিনতাই। বুধবার। ছবি: রণজিৎ নন্দী
স্কুটারে এসে পর পর দু’জনকে কাটারি দেখিয়ে ছিনতাই। এর পরে একই পদ্ধতিতে তৃতীয় ব্যক্তির ফোন ছিনিয়ে নেওয়ার সময়ে বাধা পেয়ে সরাসরি তাঁর হাতে কাটারির কোপ দুষ্কৃতীদের! বুধবার ভোরে রেড রোড সংলগ্ন এলাকায় প্রাতর্ভ্রমণে যাওয়া ব্যক্তিদের সঙ্গে ঘটা এই ঘটনায় রীতিমতো আতঙ্ক ছড়িয়েছে। শহরের ওই এলাকায় বহু মানুষ প্রাতর্ভ্রমণে যান। সেখানেই এমন ঘটনায় ভোরের শহরের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন অনেকেই। লালবাজার অবশ্য ঘটনার গুরুত্ব বুঝে দ্রুত তদন্তভার তুলে দিয়েছে গোয়েন্দা বিভাগের ডাকাতি দমন শাখার হাতে। দুপুর দু’টো নাগাদ এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে গ্রেফতার করা হয় দু’জনকে।
পুলিশ সূত্রের খবর, ধৃতদের মধ্যে এক জন এন্টালি থানা এলাকার ফুলবাগান রোডের বাসিন্দা, বছর তেত্রিশের মহম্মদ ইমরান ওরফে তোতলা। অন্য জন বেনিয়াপুকুর থানার সুরেশ সরকার রোডের শেখ সমীর হুসেন ওরফে সাবু। ধৃতদের আজ, বৃহস্পতিবার আদালতে তোলার কথা।
পুলিশ সূত্রের খবর, ঘটনার সূত্রপাত এ দিন ভোর ৫টা ২০ মিনিট নাগাদ। রেড রোডের মহমেডান ক্লাবের সামনে তখন প্রাতর্ভ্রমণের জন্য হাজির হয়েছিলেন কয়েক জন। ইমরান এবং সমীর নামের ওই দুই দুষ্কৃতী একটি স্কুটারে চড়ে সেখানে হাজির হয়। রাকেশ রানা এবং শচীনকুমার সাউ নামে দুই ব্যক্তির দাবি, স্কুটার থামিয়ে একটি কাটারি বার করে তাঁদের দিকে তেড়ে আসে ওই দু’জন। সঙ্গে যা যা আছে দিয়ে না দিলে কুপিয়ে খুন করার হুমকি দেওয়া হয়। ভয়ে নিজের সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোনটি দিয়ে দেন রাকেশ। অভিযোগ, শচীনের থেকে মোবাইল ফোনের পাশাপাশি সাড়ে চার হাজার টাকাও ছিনিয়ে নেয় দুষ্কৃতীরা।
এর পরে কিছুটা দূরে হাঁটতে থাকা গোবিন্দ ব্যাস নামে বছর চব্বিশের এক যুবকের সামনে স্কুটার থামায় দুষ্কৃতীরা। একই পদ্ধতিতে তাঁর থেকেও জিনিস ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। হাতে থাকা দামি মোবাইল ফোনটি রক্ষা করতে বাধা দেন গোবিন্দ। সেই সময়েই দুই দুষ্কৃতী কাটারি দিয়ে গোবিন্দর হাতে কোপ মারে বলে অভিযোগ। রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে পড়ে গেলে গোবিন্দর পায়ে এবং মাথায় আঘাত করে দুষ্কৃতীরা ফোনটি ছিনিয়ে নিয়ে চম্পট দেয়। ওই সময়ে ঘটনাস্থল দিয়ে যাওয়া এক ব্যক্তি ফোন করেন কলকাতা পুলিশের ১০০ নম্বরে।
কাছেই কর্তব্যরত ট্র্যাফিক পুলিশকর্মীদের পাশাপাশি দ্রুত সেখানে যান ময়দান থানার তদন্তকারী পুলিশ আধিকারিকেরা। আহত গোবিন্দকে কলকাতা পুলিশের অ্যাম্বুল্যান্সেই এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসার পরে সন্ধ্যায় তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। আহতের শরীরে বেশ কয়েকটি সেলাই পড়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রের খবর।
তদন্তে নেমে পুলিশ ওই এলাকার আশপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখা শুরু করে। তাতেই স্কুটারটি চিহ্নিত হয়। দুই অভিযুক্তকেও শনাক্ত করা যায়। এর পরে সূত্রের মাধ্যমে খোঁজ করে দুপুরেই গ্রেফতার করা হয় দু’জনকে। লালবাজারের এক কর্তা বলেন, ‘‘ধৃতদের পুরনো অপরাধের রেকর্ড রয়েছে। এই চক্রের সঙ্গে আর কেউ জড়িত রয়েছে কি না, তা জানতে ধৃতদের হেফাজতে নেওয়ার জন্য আদালতে আবেদন জানানো হবে।’’ সেই সঙ্গে ময়দান সংলগ্ন এলাকায় নজরদারি আরও বাড়ানোর পরিকল্পনার কথাও জানিয়েছেন ওই পুলিশ আধিকারিক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy