উদ্যোগ: জ়েব্রা ক্রসিং বরাবর বসল আলোর সিগন্যাল বার । দুর্ঘটনা কমানোর লক্ষ্যে। সোমবার, বি বা দী বাগ চত্বরে। ছবি: দেশকল্যাণ চৌধুরী।
সিগন্যালে লাল বাতি জ্বলছে। স্টপ লাইন পেরিয়ে এগিয়ে গিয়ে রাস্তা পারাপারের জায়গায় থামল একটি গাড়ি। সামনে থাকা ট্র্যাফিক পুলিশকর্মী চালককে এগিয়ে আসার কারণ জিজ্ঞাসা করায় তিনি জানালেন, স্টপ লাইন নাকি খেয়ালই করেননি। শহরের বিভিন্ন সিগন্যালে এই সমস্যার পাশাপাশি হামেশাই দেখা যায়, নির্দিষ্ট জায়গা থাকা সত্ত্বেও এ দিক-ও দিক দিয়ে রাস্তা পেরোচ্ছেন পথচারীরা।
উপরের দু’টি সমস্যাই বেশি করে দেখা যায় ডালহৌসির মতো ব্যস্ত সিগন্যালে, যেখানে প্রায়ই স্টপ লাইন অগ্রাহ্য করার ঘটনা ঘটে। আর রাস্তা পারাপারের ক্ষেত্রেও নিয়ম মানেন না অনেকে। লালবাজার জানিয়েছে, স্টপ লাইন পার করার আগে চালকেরা যাতে নির্দিষ্ট জায়গায় গাড়ি থামান, তার জন্য রাস্তার মাঝেই পিচ খুঁড়ে বসানো হয়েছে সিগন্যাল। ওই সিগন্যালের আলোর সঙ্গে সমন্বয় রেখেই জ্বলবে-নিভবে মূল সিগন্যাল পোস্টের আলো। রাস্তা পারাপারের জন্য যেখানে জ়েব্রা ক্রসিং থাকে, সেখানেই ওই আলো লাগানো হয়েছে। ট্র্যাফিক পুলিশের এক কর্তা জানান, রবিবার থেকে পরীক্ষামূলক ভাবে ডালহৌসির হেয়ার স্ট্রিট এবং কাউন্সিল হাউস স্ট্রিটের সংযোগস্থলে ওই নতুন ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। এই ব্যবস্থা রাতে বেশি করে কার্যকর হবে। ডালহৌসির ওই মোড়ে নতুন এই ব্যবস্থা ফলদায়ক প্রমাণিত হলে গোটা শহরেই তা চালু করা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
পুলিশি সূত্রের খবর, এই ধরনের সিগন্যাল প্রথম চালু হয়েছিল হায়দরাবাদে। কিন্তু সেখানে বিভিন্ন কারণে ফলপ্রসূ না হওয়ায় তা বন্ধ হয়ে যায় কিছু দিন বাদেই। সে দিক থেকে দেখতে গেলে কলকাতায় এই সিগন্যাল ব্যবস্থা সফল হলে, সেটাই হবে দেশের মধ্যে প্রথম।
কেন চালু করা হচ্ছে এই ব্যবস্থা?
লালবাজার জানিয়েছে, রাস্তার মাঝখানে যেখান-সেখান দিয়ে পার হতে গিয়ে গাড়ির ধাক্কায় বছরে গড়ে ২০ জনের মৃত্যু হয়। তাই পথচারীরা যাতে রাস্তা পারাপারের সময়ে আলোর সঙ্কেত সুস্পষ্ট ভাবে দেখতে পান, তার জন্যই এই স্টপ লাইন সিস্টেম চালু করা হয়েছে। এই সিগন্যাল থাকার ফলে পথচারীদের পাশাপাশি বাস ও গাড়ির চালকেরাও স্টপ লাইনের আগে নির্দিষ্ট জায়গায় থামতে পারবেন।
পুলিশের একাংশ জানিয়েছে, যাবতীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরে রাস্তার মাঝে পিচ খুঁড়ে এই বাতি বসানো হয়েছে। কিন্তু এই সিগন্যাল গাড়ির চাপ, বিশেষ করে লরি বা ট্রেলারের মতো বড় পণ্যবাহী গাড়ির চাপ কতটা নিতে পারবে, তা এখনও জানা যায়নি। এ ছাড়া, বৃষ্টির সময়ে জল জমলে ওই সিগন্যাল কার্যকর থাকবে কি না, তা-ও দেখার বিষয় বলে জানিয়েছেন পুলিশের আধিকারিকেরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy